আরও বেশি বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগের কথা ভাবছে দ. কোরিয়া

মঙ্গলবার বিকেলে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে একটি চার্টার্ড ফ্লাইটে ২৪৮ জন বাংলাদেশি প্রবাসী শ্রমিক কোরিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হয়, যা এখন পর্যন্ত একদিনে কোরিয়ায় রওনা হওয়া কর্মীদের সর্বোচ্চ সংখ্যা। ছবি: সংগৃহীত

কোরিয়ান নিয়োগকর্তারা বাংলাদেশের কর্মীদের পরিশ্রম ও বিশ্বস্ততার প্রতি সন্তুষ্ট  হওয়ায় আগামী বছর বাংলাদেশিদের জন্য ইপিএস কোটা বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে দক্ষিণ কোরিয়া। 

মঙ্গলবার বিকেলে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে নিযুক্ত কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত লি জাং-কুন একথা জানান। 

বিকেলে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে একটি চার্টার্ড ফ্লাইটে ২৪৮ জন বাংলাদেশি  প্রবাসী শ্রমিক কোরিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হয়, যা  এখন পর্যন্ত একদিনে কোরিয়ায় রওনা হওয়া কর্মীদের সর্বোচ্চ সংখ্যা।

এসময় বিদায়ী কর্মীদের উদ্দেশে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব আহমেদ মুনিরুস সালেহীন বলেন, 'কোরিয়ায় বাংলাদেশিরা কঠোর পরিশ্রম ও সততার মাধ্যমে সুনাম অর্জন করায় আমি আনন্দিত।দয়া করে আপনারা এই সুনাম বজায় রাখুন এবং বাড়িতে আপনাদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখুন। এসময় প্রবাসীদের প্রতি দেশে থাকা পরিবারের কাছে রেমিট্যান্স পাঠাতে ব্যাংকিং চ্যানেল ব্যবহারের পরামর্শ দেন তিনি।

এক বিবৃতিতে কোরিয়ান দূতাবাস জানায়, এর আগে গত ১ নভেম্বর পর্যন্ত মোট ৩ হাজার ৯৮৬ বাংলাদেশি কর্মী কোরিয়ায় গিয়েছিল, যা ২০০৮ সালে কোরিয়ার এমপ্লয়মেন্ট পারমিট সিস্টেম (ইপিএস) শুরু হওয়ার পর থেকে সবচেয়ে বেশি সংখ্যা। এর আগে, ২০১০ সালে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক, ২ হাজার ৬৯১ জন বাংলাদেশি ইপিএস কর্মী কোরিয়ায় গিয়েছিল। 

কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত লি জাং-কুন বলেন, '২০২২ সালের শেষ নাগাদ প্রায় ৫ হাজার ২০০ বাংলাদেশি কর্মী কোরিয়ায় যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। ২০২৩ সালে সাপ্তাহিক প্রায় ১৫০ বাংলাদেশি কর্মী কোরিয়ায় যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ২০২৩ সালে বাংলাদেশের জন্য ইপিএস কোটা বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। কারণ অনেক কোরিয়ান নিয়োগকর্তা বাংলাদেশি কর্মীদের পরিশ্রম এবং বিশ্বস্ততার প্রতি সন্তুষ্ট।'

মঙ্গলবার কোরিয়া যাওয়া শ্রমিকদের মধ্যে দুজন নারীও রয়েছেন। তাদের মধ্যে একজন চম্পা আগামী ৪ বছর ১০ মাস কোরিয়ার গিয়াংগি প্রদেশের একটি উৎপাদন কারখানায় কাজ করবেন। 

তিনি বলেন, 'কোম্পানি থেকে আমাকে ও আমার মেয়েকে খাবার দেওয়া হবে, থাকার জায়গা দেওয়া হবে। আশা করছি কোনো সমস্যা হবে না।' 

ঢাকার ইপিএস সেন্টারের কিম ডং-চ্যান জানান, কোরিয়ান ভাষা পরীক্ষায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে আরও বেশি বাংলাদেশি নারী কোরিয়ায় ইপিএসের মাধ্যমে যাওয়ার সুযোগ পাবেন।

তিনি আরও বলেন কোরিয়ার কারখানায় মহিলা ও পুরুষ কর্মীরা একই স্তরের বেতন পেয়ে থাকেন। সেপ্টেম্বরে লটারির মাধ্যমে নির্বাচিত ২০ হাজার কর্মীদের জন্য কোরিয়ান ভাষা পরীক্ষা ২০২৩ সালের জানুয়ারির শেষে শুরু হবে।

 

ইপিএস হলো বাংলাদেশসহ ১৬টি দেশ থেকে নিম্ন ও মাঝারি দক্ষ বিদেশি কর্মী নিয়োগের জন্য একটি কর্মসংস্থান ব্যবস্থা। যাদের বয়স ৩৯ বছরের কম এবং কোরিয়ান ভাষার দক্ষতা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ তারা এই প্রোগ্রামের জন্য আবেদন করতে পারেন। 

 

কোরিয়া বিদেশি কর্মীদের জন্য বিভিন্ন সুরক্ষামূলক ব্যবস্থা চালু করেছে যেমন বেতন বৈষম্যের নিষেধাজ্ঞা, শ্রম আইনের সমান প্রয়োগ ও ২০১১ সালে জাতিসংঘের জনপ্রশাসন পুরস্কার প্রদানের মাধ্যমে স্বীকৃত ৪টি সামাজিক বীমার সাবস্ক্রিপশন।

 

Comments

The Daily Star  | English
Domestic violence killing women in Bangladesh

Domestic violence in Bangladesh: When numbers speak of the silence

When we are informed that 133 women have been killed by their husbands in seven months, it is no longer just a number.

8h ago