জঙ্গি ছিনতাই: ‘মিডিয়া কাভারেজ যথেষ্ট থাকলেই শুধু পুলিশি তৎপরতা থাকে’

দীপন হত্যা মামলা
দীপন হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক ২ আসামি মাইনুল হাসান শামীম এবং আবু সিদ্দিক। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে গতকাল রোববার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১২ জঙ্গির পাহারায় ছিলেন মাত্র ৪ জন পুলিশ। এর মধ্যে পুলিশের চোখে স্প্রে করে ২ জঙ্গিকে ছিনিয়ে নিয়ে যায় সহযোগীরা।

এ ঘটনার মাধ্যমে জঙ্গি ও দাগী আসামিদের পাহারা দেওয়ার ক্ষেত্রে আদালত প্রাঙ্গণে নিরাপত্তার 'ফাঁকফোকরকে' আরেকবার উন্মোচিত করল।

এই ১২ জঙ্গিরা ছিলেন প্রকাশক ফয়সাল আরেফিন দীপন, ব্লগার ও লেখক অভিজিৎ রায়, এলজিবিটি অধিকার কর্মী জুলহাজ মান্নান এবং মাহবুব রাব্বি তনয় এবং ব্লগার নাজিম উদ্দিন হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ও দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, সকালে কারাগার থেকে জঙ্গিদের আদালত প্রাঙ্গণে নিয়ে যাওয়া হয়। সকাল ১১টার দিকে পুলিশের একটি দল তাদের ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সপ্তম তলায় সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালে হাজির করে।

শুনানি শেষে ট্রাইব্যুনাল থেকে প্রায় ২০০ গজ দূরে আদালতের হাজতে জঙ্গিদের নিয়ে যাওয়ার সময় হামলার ঘটনা ঘটে।

পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক মহিউদ্দিনের নেতৃত্বে ৪ সদস্যের পুলিশের একটি দল জঙ্গিদের পাহারায় ছিলেন।

অপর ৩ পুলিশ সদস্য ছিলেন কনস্টেবল নুর-ই-আজাদ, শরীফ ও আবদুস সাত্তার।

আজাদ ৪ জন জঙ্গিকে ফুটপাত দিয়ে হাজতে নিয়ে যাচ্ছিলেন। জঙ্গিদের সহযোগীরা মোটরসাইকেলে আদালত প্রাঙ্গণে এসে কনস্টেবল আজাদকে আক্রমণ করে।

পুলিশ জানায়, হামলাকারীরা কনস্টেবল আজাদের চোখে স্প্রে করে দীপন হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মইনুল হাসান শামীম ওরফে সামির ওরফে ইমরান ও আবু সিদ্দিক সোহেলকে মোটরসাইকেলে করে নিয়ে যায়।

অপর ২ কনস্টেবলসহ ৮ জঙ্গি আজাদের পেছনে ছিলেন। তাদের পেছনে এএসআই মহিউদ্দিন ছিলেন বলে সূত্র জানায়।

হামলাকারীরা ঘটনাস্থলে একটি মোটরসাইকেল রেখে পালিয়ে যায়।

ঢাকার আদালত চত্বরে নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার ঘটনা এটাই প্রথম নয়।

২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর হলি আর্টিজান হামলার মামলায় ট্রাইব্যুনাল ৭ জঙ্গিকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার পর ২ জন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আইএসের লোগোসম্বলিত টুপি পরে।

এক জঙ্গি পরে দাবি করেন, আদালত প্রাঙ্গণে অজ্ঞাত কেউ তাকে ওই টুপি দিয়েছিল।

আদালত সূত্র জানায়, ওই ঘটনার পর ঢাকার আদালত চত্বরে নিরাপত্তা জোরদার করা হলেও তা কয়েক মাস স্থায়ী হয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে আদালতের একজন কর্মকর্তা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'যখন জঙ্গিদের আদালতে হাজির করা হয়, তখনো নিরাপত্তা ব্যবস্থা অপর্যাপ্ত থাকে। শুধু জঙ্গিদের বিরুদ্ধে মামলার রায়ের দিনে মিডিয়া কভারেজ যথেষ্ট থাকলেই পুলিশের তৎপরতা বেশি থাকে।'

রোববারের এ ঘটনার পর সুপ্রিম কোর্ট সারাদেশের আদালতে নিরাপত্তা জোরদার করার নির্দেশ দিয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

Yunus meets Chinese ambassador to review China visit, outline next steps

Both sides expressed a shared commitment to transforming discussions into actionable projects across a range of sectors

1h ago