ঝুঁকিপূর্ণ সেতুই ৪০ গ্রামের একমাত্র ভরসা

হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার পৈলারকান্দি ইউনিয়ন, কিশোরগঞ্জ জেলার অষ্টগ্রাম উপজেলার আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়ন ও মিঠামইন উপজেলার কাঠখাল ইউনিয়নের প্রায় ৪০ গ্রামের বাসিন্দা দীর্ঘদিন ধরে এক জরাজীর্ণ সেতু দিয়ে চলাচল করছেন।
ঝুঁকিপূর্ণ সেতু : ৪০ গ্রামের একমাত্র ভরসা
হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার ১৫ নং পৈলারকান্দি ইউনিয়নের কুমড়ি বাজারের উত্তরদিকে খালের ওপর জরাজীর্ণ ফিরিঙ্গিটোলা সেতু। ছবি: মিন্টু দেশোয়ারা/স্টার

হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার পৈলারকান্দি ইউনিয়ন, কিশোরগঞ্জ জেলার অষ্টগ্রাম উপজেলার আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়ন ও মিঠামইন উপজেলার কাঠখাল ইউনিয়নের প্রায় ৪০ গ্রামের বাসিন্দা দীর্ঘদিন ধরে এক জরাজীর্ণ সেতু দিয়ে চলাচল করছেন।

এই ৪০ গ্রামের জনসাধারণ পৈলারকান্দি ইউনিয়নের কুমড়ি বাজারের ওপর নির্ভরশীল। বাজারে যাওয়ার ফিরিঙ্গিটোলা সেতুটি চলাচলের জন্য অনিরাপদ। যে কোনো সময় এটি ভেঙে পড়তে পারে। সেতু পর্যন্ত যাওয়ার রাস্তাও সারা বছর কর্দমাক্ত থাকে।

স্থানীয়রা দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন, ওই অঞ্চলের প্রায় ৩৫ গ্রামের মানুষ দৈনন্দিন কেনাকাটার জন্য বানিয়াচং উপজেলার ১৫ নং পৈলারকান্দি ইউনিয়নের কুমড়ি বাজারে যাতায়াত করেন। বাজারের উত্তরদিকে খালের ওপর জরাজীর্ণ ফিরিঙ্গিটোলা সেতু।

কুমড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী-ক্রেতাসহ সর্বস্তরের মানুষ বছরের পর বছর এই ঝুঁকিপূর্ণ সেতু দিয়ে চলাচল করছেন।

স্থানীয়রা আরও জানান, এ অঞ্চলের মানুষকে বর্ষায় নৌকায় হবিগঞ্জ যাতায়াত করতে হয়। হেমন্তকালে গরুর গাড়ির সামনে মেশিন যুক্ত করে নদীর তীর পর্যন্ত যেতে হয়।

সেখানে খেয়া নৌকায় নদী পার হয়ে ইকরাম বাজার থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশা বা গাড়িতে হবিগঞ্জ পর্যন্ত যাতায়াত করতে হয়।

এক সময় কুমড়ি থেকে বাল্লা গ্রাম সংলগ্ন রত্নাই নদীর খেয়াঘাট পর্যন্ত লোক হেঁটে চলাচল করতেন।

স্থানীয় বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা হুমায়ুন কবির ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ফিরিঙ্গিটোলা সেতুটির অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। বাজারের দক্ষিণ দিকের রাস্তার অবস্থাও নাজুক। চিকিৎসাব্যবস্থা ও শিক্ষার অধিকারের দিক থেকেও আমাদের এলাকা অবহেলিত।'

'ইকরাম বাজার থেকে সাঙ্গর হয়ে হিয়ালামুখী রাস্তারও বেহাল দশা। আমরা ভাটির মানুষ এই আধুনিককালেও একই অবস্থাতেই আছি,' যোগ করেন তিনি।

কুমড়ি বাজারের পল্লীচিকিৎসক ইন্তাজ আলী ভূঁইয়া ডেইলি স্টারকে বলেন, 'যোগাযোগের দিক থেকে আমরা এখনো অনেক অনুন্নত রয়ে গেছি। খুব দ্রুত ফিরিঙ্গিটোলা সেতুটি পুনর্নির্মাণ না করলে আমাদের অবস্থা আরও খারাপ হবে। একইসঙ্গে রাস্তাগুলোর টেকসই মেরামত প্রয়োজন।'

বানিয়াচং উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ফারুক আমীন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ফিরিঙ্গিটোলা সেতুটি অনেক বছর ধরেই জরাজীর্ণ। উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে স্থানীয় সংসদ সদস্যকে সেতুটির বিষয়ে জানানো হয়েছে।'

বানিয়াচং উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী মিনারুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'কুমড়ি বাজারের সেতুসহ বানিয়াচং উপজেলার বেশ কয়েকটি সেতুর প্রকল্প প্রস্তাব আকারে পাঠানো হয়েছে। আশা করছি, খুব শিগগির এ সমস্যার সমাধান হবে।'

Comments