রামনাথ বিশ্বাসের বসতভিটা পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণে ১০০ নাগরিকের বিবৃতি
বাইসাইকেলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করে ইতিহাস তৈরি করা হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার বিদ্যাভূষণ পাড়ার রামনাথ বিশ্বাসের বসতভিটা পুনরুদ্ধারের দাবি জানিয়েছেন ১০০ জন নাগরিক। আজ গণমাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে তারা এই দাবি জানান।
প্রায় শতবর্ষ আগে রামনাথ বিশ্বাস বাইসাইকেল নিয়ে বেরিয়েছিলেন ভ্রমণে। বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করে তিনি প্রায় ৪০টি বইয়ে তার অভিজ্ঞতার কথা লিখেছিলেন। বাঙালির ঘরকুনো অপবাদ ঘুচিয়েছিলেন তিনি।
বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে আছেন, ইন্টারন্যাশনাল থিয়েটার ইন্সটিটিউটের সাম্মানিক সভাপতি রামেন্দু মজুমদার, কথাসাহিত্যিক ও শিক্ষাবিদ সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও বীর মুক্তিযোদ্ধা নাসির উদ্দীন ইউসুফ, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মুল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির, একুশে পদকপ্রাপ্ত নাট্যজন আহমেদ ইকবাল হায়দার, অভিনয় শিল্পী শিমূল ইউসুফ, জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতি মুহাম্মদ সামাদ, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক আহ্কাম উল্লাহ, শিল্পকলা পদক ও বাংলা একাডেমি পুরস্কারজয়ী নাট্যজন অধ্যাপক মলয় ভৌমিক প্রমুখ।
বিবৃতিতে তারা বলেন, উদার-অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী রামনাথের জন্ম ১৮৯৪ সালে। ভ্রমণপিপাসু এই মানুষটি থিতু হতে চেয়েছিলেন নিজ গ্রাম বানিয়াচংয়ে। কিন্তু ১৯৪৭ সালের দেশ ভাগের পর কলকাতায় চলে যেতে বাধ্য হন। দেশে তার স্মৃতিবিজড়িত বাড়িটি বেদখল হয়ে যায়। তিনি ১৯৫৫ সালে কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন। সেখানে তার নামে আছে একটি সড়ক।
এতে আরও বলা হয়, আমরা জানতে পেয়েছি, বাড়িটির দখলদার আবদুল ওয়াহেদ মিয়া আল-বদর পরিবারের সদস্য। নিজে এক সময় জামায়াত-বিএনপি করে যোগ দিয়েছিলেন আওয়ামী লীগে। তিনি বিভিন্ন সময় রামনাথের বাড়ি দেখতে যাওয়া পর্যটক, বাইসাইকেল রাইডার ও সাংবাদিকের ওপর হামলা চালিয়েছেন। সর্বশেষ গত ১১ সেপ্টেম্বর তিনি ও তার ছেলেরা চার সাংবাদিকের ওপর হামলা চালান। ওই ঘটনার পর তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।
বিবৃতিদাতারা বলেন, 'আমরা মনে করি শুধু দল থেকে বহিষ্কার করা বড় কোনো সমাধান নয়। রামনাথ বিশ্বাসের বসতবাড়িটি দখলদারের হাত থেকে পুনরুদ্ধার করতে হবে। আমাদের জানা মতে, ওই বাড়ির প্রায় পাঁচ একর জমির সবটুকুই এখন সরকারি খাস খতিয়ানে। প্রকৃতপক্ষে সরকারই এ জমির মালিক। তাই বিস্মৃতপ্রায় ভূপর্যটক রামনাথ বিশ্বাসের স্মৃতি রক্ষার দায়িত্বও সরকারের।'
বিবৃতিতে আরও যারা স্বাক্ষর করেছেন— জয়দুল হোসেন, কবি ও গবেষক, সভাপতি, সাহিত্য একাডেমি-ব্রাহ্মণবাড়িয়া; ফেরদৌসী মজুমদার, স্বাধীনতা পুরস্কার ও একুশে পদকজয়ী অভিনয়শিল্পী; সাইমন জাকারিয়া, লেখক ও গবেষক; মোস্তফা মামুন, কথাসাহিত্যক ও ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক দৈনিক দেশ রূপান্তর; সৈয়দা রত্না, তেঁতুলতলা মাঠ আন্দোলনের নেত্রী ও উদীচীর সংস্কৃতিকর্মী; আহসান হাবিব নাসিম, সভাপতি, অভিনয় শিল্পী সংঘ; রতন সিদ্দিকী, শিক্ষাবিদ ও বাংলা একাডেমি পুরস্কারজয়ী নাট্যকার; মাসুম রেজা, বাংলা একাডেমি পুরস্কারজয়ী নাট্যকার; মুস্তাফিজ শফি, সম্পাদক, প্রতিদিনের বাংলাদেশ; মোহাম্মদ বারী, অভিনয়শিল্পী ও নাট্যনির্দেশক; শুভাশিস সিনহা, কবি ও নাট্যকার; কামাল উদ্দীন কবির, গবেষক ও শিক্ষক, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়; আবু সাঈদ খান, উপদেষ্টা সম্পাদক, দৈনিক সমকাল; রাহুল আনন্দ, জলের গান; কনক আদিত্য, শিল্পী; আলফ্রেড খোকন, কবি; ত্রপা মজুমদার, অভিনয়শিল্পী ও নাট্যনির্দেশক; বাকার বকুল, অভিনয়শিল্পী ও নাট্যনির্দেশক; আশিকুর রহমান লিয়ন, নাট্যনির্দেশক ও শিক্ষক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; তানভীন সুইটি, অভিনয়শিল্পী; সাজু খাদেম, অভিনয়শিল্পী; তুহিন ওয়াদুদ, অধ্যাপক বাংলা বিভাগ, ডিন, কলা অনুষদ, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর; শেখ রোকন, মহাসচিব, রিভারাইন পিপল; কাজী এম আনিছুল ইসলাম, সহকারী অধ্যাপক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়; জাফর আহমদ রাশেদ, কবি; সামিনা লুৎফা, শিক্ষক ও নাট্যকর্ম; ফারহা তানজীম তিতিল, গবেষক ও শিক্ষক; গাজী নাসিরুদ্দিন আহমেদ, সাংবাদিক; রাহমান নাসির উদ্দিন, অধ্যাপক, নৃবিজ্ঞান বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়; ঈশানী চক্রবর্তী, অধ্যাপক, ইতিহাস বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; সুদীপ চক্রবর্তী, নাট্যনির্দেশক ও শিক্ষক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; হাফিজ রশিদ খান, কবি; দীপায়ন খীসা, রাজনৈতিক ও মানবাধিকার কর্মী; বিশ্বজিৎ চৌধুরী, কবি ও কথাসাহিত্যিক, যুগ্ন সম্পাদক, প্রথম আলো; জাকির হোসেন, প্রধান নির্বাহী, নাগরিক উদ্যোগ; আহমেদ মাওলা, অধ্যাপক, বাংলা বিভাগ, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়; রফিউর রাব্বি, শিল্পী ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব; সঞ্জয় সরকার মুক্তনীল, নাট্যকার ও নির্দেশক, নাট্যদল 'বাতিঘর'; পিয়াস মজিদ, কবি; স্বকৃত নোমান, সাহিত্যিক; মোজাফফর হোসেন, সাহিত্যিক; কাজী তৌফিকুল ইসলাম ইমন, মূখ্য সম্পাদক, প্রাচ্যনাট; সাইফুল জার্নাল, অভিনেতা ও নাট্যনির্দেশক; সৈয়দ মামুন রেজা, শিক্ষক জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়; নুসরাত শারমীন, শিক্ষক জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়; মজুমদার বিপ্লব, আবৃত্তিশিল্পী, পরিচালক হরবোলা; কাজী শহিদুল ইসলাম নাজু, আবৃত্তিশিল্পী, সাধারণ সম্পাদক কথা আবৃত্তি চর্চা কেন্দ্র; আশরাফুল ইসলাম বাবু, আবৃত্তিশিল্পী; কাজী বুশরা আহমেদ তিথি, আবৃত্তিশিল্পী; অনন্ত হিরা, নাট্যনির্দেশক ও অভিনয়শিল্পী, প্রাঙ্গণেমোর; ফাহিম মালিক ইভান, শিক্ষক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়; আমিনুর রহমান মুকুল, নাট্যনির্দেশক ও অভিনয়শিল্পী, পালাকার; নূনা আফরোজ, নাট্যনির্দেশক ও অভিনয়শিল্পী, প্রাঙ্গণেমোর; চারু পিন্টু, চিত্রশিল্পী; চৈতালী হালদার, নাট্যকর্মী ও নির্বাহী সদস্য, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট; অপু মেহেদী, কবি ও নাট্যকার, নির্বাহী সম্পাদক, থিয়েটার পত্রিকা 'ক্ষ্যাপা'; বাবুল বিশ্বাস, থিয়েটার গবেষক; সাইদুর রহমান লিপন, নাটনির্দেশক ও শিক্ষক, রবীন্দ্র সৃজনকলা বিশ্ববিদ্যালয়; প্রশান্ত হালদার, নাট্যকার ও অভিনয়শিল্পী; মোহাম্মদ আলী হায়দার, অভিনেতা ও নাট্যনির্দেশক; মফিদুল হক, গবেষক ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি; পাভেল পার্থ, জীববৈচিত্র্য ও প্রাণপ্রকৃতি গবেষক; অধ্যাপক নিসার হোসেন, ডীন, চারুকলা অনুষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; সৈয়দ দুলাল, শব্দাবলী গ্রুপ থিয়েটার, বরিশাল; খায়রুল ইসলাম চৌধুরী, সহযোগী অধ্যাপক, সমাজ বিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; পিনাকী রায়, প্রধান প্রতিবেদক, ডেইলি স্টার; টিপু চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক, ভূ-পর্যটক রামনাথ বিশ্বাস ফাউন্ডেশন হবিগঞ্জ; জোবাইদা নাসরীন, অধ্যাপক নৃবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; পারভেজ হাসেম, আইনজীবী, সুপ্রিম কোর্ট; মিজানুর রহমান, সভাপতি, বাংলাদেশ পথনাটক পরিষদ; আহাম্মেদ গিয়াস, সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ পথনাটক পরিষদ; রওনক হাসান, সাধারণ সম্পাদক, অভিনয় শিল্পী সংঘ; ইউসুফ হাসান অর্ক, নাট্যনির্দেশক ও অধ্যাপক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়; ভবানী শংকর রায়, সভাপতি, নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট; আহমেদ নূর, সাবেক সভাপতি, সিলেট প্রেসক্লাব ও সম্পাদক, সিলেট মিরর; জফির সেতু, কবি, অধ্যাপক, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়; হোসনে আরা কামালী, লেখক, অধ্যাপক, মদনমোহন কলেজ, সিলেট; মিশফাক আহমদ চৌধুরী মিশু, সভাপতি, সম্মিলিত নাট্য পরিষদ, সিলেট; শামসুল আলম সেলিম, সিলেট বিভাগীয় প্রতিনিধি, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট; মোস্তাক আহমাদ দীন, কবি, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, লিডিং ইউনিভার্সিটি, সিলেট; রজতকান্তি গুপ্ত, সাধারণ সম্পাদক, সম্মিলিত নাট্য পরিষদ, সিলেট; প্রণবকান্তি দেব, সহকারী অধ্যাপক, সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি; পার্থ তালুকদার, গবেষক; রাজীব চৌধুরী, প্রকাশক; সুমনকুমার দাশ, লোকসংস্কৃতি গবেষক; মুস্তাফিজুর রহমান রূপম, নির্বাহী প্রধান, ভাবনা, দিনাজপুর; শেখ আদনান ফাহাদ, সহকারী অধ্যাপক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়; আবুসালেহ আহমদ, লোক গবেষক; আব্দুর নূর, আহবায়ক, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, ব্রাহ্মণবাড়িয়া; মো. নাসির, আইনজীবী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
Comments