শ্যামনগরে মুন্ডা পরিবারে হামলা-মারধর, আহত ৩

সাতক্ষীরার শ্যামনগরে মুন্ডা সম্প্রদায়ের জমি দখলে নিতে দফায় দফায় হামলা চালানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। হামলায় আহত হয়েছেন দুই নারীসহ তিন জন।
স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

সাতক্ষীরার শ্যামনগরে মুন্ডা সম্প্রদায়ের জমি দখলে নিতে দফায় দফায় হামলা চালানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। হামলায় আহত হয়েছেন দুই নারীসহ তিন জন।

গতকাল শনিবার শ্যামনগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের উত্তর কদমতালি গ্রামে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত তিন দফা হামলা হয়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী অসিত কুমার মুন্ডা বাদী হয়ে শ্যামনগর থানায় একটি লিখিত এজাহার দিয়েছেন।

আহতরা হলেন, অসিত কুমার মুন্ডা (৪০), অসিতের মা আনারমনি (৭০) ও অসিতের স্ত্রী আরতী রানী মুন্ডা (২৫)।

অসিত কুমার মুন্ডার ছোট ভাই কাঞ্চন মুন্ডা জানান, শ্যামনগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের উত্তর কদমতলা গ্রামে ৫০ শতক জমিতে তারা বসবাস করে আসছেন। কিন্তু সম্প্রতি ওই জমির মধ্যে থেকে ১০ শতক জমি নিজের দাবি করে  প্রতিবেশী আব্দুর রশিদ গাজী নানাভাবে হুমকি দিয়ে আসছিলেন। শনিবার সকালে বড়ভাই অসিত কুমার মুন্ডা নিজ জমিতে কাজ করার সময় রশিদ গাজী গালি গালাজ করতে থাকেন। প্রতিবাদ করায় রশিদ গাজী লাঠি দিয়ে তার বড়ভাই অসিত কুমার মুন্ডাকে পেটান। পরে দুপুরে পুনরায় রশিদ গাজীর নেতৃত্বে তার ছেলে আব্দুল্লাহ আল হোসাইন খলিফা, স্ত্রী বেবী পারভীন তাদের বাড়িতে ঢুকে  বৃদ্ধা মা ও তার বৌদি (অসিতের স্ত্রী) আরতী মুন্ডাকে মারধর করেন। পরে রাত ৮টার দিকে রশিদের বড় ছেলে আব্দুল্লাহ আল হোসাইন রাজার নেতৃত্বে রশিদ গাজী, তার ছোটছেলে আব্দুল্লাহ আল হোসাইন খলিফা, আব্দুল্লাহ আল হোসাইন রাজার স্ত্রী শারমিন লাঠি, দা, শাবল নিয়ে তাদের বাড়িতে ঢুকে  মা ও বৌদিকে টেনে হিঁচড়ে বাড়ি থেকে বের করে বেধড়ক পেটান। এতে অসিতসহ তার মা ও বৌদি মারাত্মক জখম হন। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।

তিনি অভিযোগ করেন, আব্দুল রশিদ গাজী তাদের বাড়ি যাওয়ার পথও আটকে দিয়েছেন।

অভিযোগ নিয়ে জানতে চাইলে আব্দুর রশিদ গাজী মুন্ডাদের মারপিটের কথা স্বীকার করে বলেন, অসিত খুবই বাড়াবাড়ি করছিল। একপর্যায়ে আমাদের উপর চড়াও হয়। রাতে বড় ছেলে আব্দুল্লাহ আল হোসাইন রাজা বাড়ি এসে মারপিট করা হয়েছে এমন কথা শুনে অসিত, তার মা ও স্ত্রীকে ধাক্কাধাক্কি করেছে।

তিনি দাবি করেন, তার স্ত্রী বেবি পারভীনকে তিনি শ্যামনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছেন। যাতায়াতের পথ বন্ধ করে দেওয়া বিষয়টি ঠিক নয়।

মুন্সিগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান অসিম কুমার মৃধা জানান, ঘটনাটি তিনি জেনেছেন। দুই পক্ষকে ডেকে তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।

শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নূরুল ইসলাম বাদল বলেন, অসিম কুমার মুন্ডা একটি এজাহার গতকাল দুপুরে জমা দিয়েছেন। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।

এ ঘটনায় সাতক্ষীরা জেলা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি কমিটি নিন্দা জানিয়েছে। কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ আশেক-ই-এলাহি ও সাধারণ সম্পাদক আলী নূর খান ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দাবি জানিয়েছেন।

Comments