জাতিসংঘের ইরান বিষয়ক তথ্যানুসন্ধান মিশনের প্রধান সারা হোসেন

জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের ইরান বিষয়ক তথ্যানুসন্ধান মিশনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন বাংলাদেশি মানবাধিকার কর্মী ব্যারিস্টার সারা হোসেন।
গত ২৪ নভেম্বর জাতিসংঘ এই মিশন গঠনের বিষয়ে রেজুলেশন পাশ করে। গতকাল মঙ্গলবার জেনেভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের ওয়েবসাইটে প্রচারিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, সারা হোসেন এই মিশনের চেয়ার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
৩ সদস্যের এই মিশনে অপর ২ সদস্য হচ্ছেন পাকিস্তানের শাহীন সরদার আলী এবং আর্জেন্টিনার ভিভিয়ানা ক্রিস্টিসেভিচ।
গত ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে ইরানি নাগরিকদের আন্দোলন এবং আন্দোলনকারীদের মানবাধিকার কীভাবে লঙ্ঘিত হয়েছে তার ওপর তদন্ত করবে এই মিশন। জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের পক্ষ থেকে এই মিশনকে মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তথ্য ও পরিস্থিতি উপস্থাপন এবং প্রমাণ সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করতে বলা হয়েছে।
তদন্ত শেষে ২০২৩ ও ২০২৪ সালে ২টি প্রতিবেদন জাতিসংঘের কাছে জমা দেবে মিশন।
ইরান ইতোমধ্যে এই মিশন গঠন বিষয়ক জাতিসংঘের রেজুলেশন প্রত্যাখ্যান করেছে।
এই মিশনের সদস্যরা কোনো রাষ্ট্রের সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হননি। তারা স্বাধীন সদস্য হিসেবে এই মিশনে প্রতিনিধিত্ব করবেন। সেক্ষেত্রে ইরানের এই ইস্যুতে বাংলাদেশ, পাকিস্তান বা আর্জেন্টিনার রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত এই মিশনের কার্যক্রমে কোনো প্রভাব ফেলবে না।
মানবাধিকার পরিষদের সভাপতি ফেদেরিকো ভিলেগাস এই মিশনের সদস্য নির্বাচনের জন্য যোগ্য ও নিরপেক্ষ প্রার্থী নির্বাচন করতে বিভিন্ন অংশীজনের কাছ থেকে সুপারিশ চেয়েছিলেন। প্রাপ্ত সুপারিশের ভিত্তিতে তিনি ৩ জনের নাম বেছে নেন।
ইরানের নৈতিকতা পুলিশ হেফাজতে মাসা আমিনি মারা যাওয়ার প্রতিবাদে নারীদের নেতৃত্বে দেশটিতে গড়ে ওঠে আন্দোলন, যা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। ২২ বছর বয়সী মাসাকে হিজাব আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে আটক করেছিল ইরানের নৈতিকতা পুলিশ।
পরিবার ও গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মাসা আমিনিকে মারধর করা হয়েছিল। পরে অসুস্থ হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
এ ঘটনার প্রতিবাদের ইরানের হাজারো মানুষ রাস্তায় নেমে আসেন। লাগাতার বিক্ষোভের মুখে দেশটির নৈতিকতা পুলিশের কার্যক্রম শিথিল করেছে ইরান সরকার।
মানবাধিকার কর্মীদের অনুমান, কয়েক মাস ধরে চলা এই বিক্ষোভে ৪০০ জনেরও বেশি নিহত এবং ১৮ হাজার জনকে আটক করা হয়েছে।
Comments