সূর্য উৎসবে বর্ষবরণ হবে শাখাহাতীর দ্বীপ চরে

বছরের প্রথম সূর্যোদয় পর্যবেক্ষণের জন্য বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন এবার সূর্য উৎসবের আয়োজন করেছে কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদবেষ্টিত শাখাহাতির দ্বীপ চরে। এটি হবে সূর্য উৎসবের ২৩তম আসর।
ব্রহ্মপুত্রের বুকে সূর্যোদয়ের দৃশ্য। ছবি: এস দিলীপ রায়/স্টার

বছরের প্রথম সূর্যোদয় পর্যবেক্ষণের জন্য বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন এবার সূর্য উৎসবের আয়োজন করেছে কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদবেষ্টিত শাখাহাতির দ্বীপ চরে। এটি হবে সূর্য উৎসবের ২৩তম আসর।

এই উৎসবে যোগ দিতে ইতোমধ্যে অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের ১৬ সদস্যের একটি দল ঢাকা থেকে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন। দলের সদস্যরা এখন শাখাহাতীতে অবস্থান করছেন।

এই উৎসবের বিষয়ে অ্যাসোসিয়েশনের অংশগ্রহণকারী সদস্যদের টিম লিডার মশহুরুল আমিন সাংবাদিকদের জানান, 'বিগত বছরগুলোতে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় এই উৎসব আয়োজন করা হয়েছিল। এ বছর সূর্য উৎসবের মধ্য দিয়ে আমরা কুড়িগ্রাম জেলাকে বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে চাই।'

সূর্য উৎসবে অংশ নিতে আসা অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের অংশগ্রহণকারী সদস্যদের মধ্যে আছেন- কবি-সাহিত্যিক, বিজ্ঞানী, প্রকৃতিবিদ, শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং গণমাধ্যমকর্মীরা। এই কাজে তাদের সার্বিক সহযোগিতা করছে চিলমারী উপজেলা প্রশাসন।

বাংলাদেশের জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা ঢাকায় ১৯৮৮ সালে প্রতিষ্ঠা করেন বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন। ২০০১ সাল থেকে অ্যাসোসিয়েশন নিয়মিতভাবে সূর্য উৎসবের আয়োজন করে আসছে।

চিলমারী উপজেলা প্রশাসন সুত্র জানায়, সূর্য উৎসবে থাকছে ছোটদের বিজ্ঞান উৎসব, বিজ্ঞানবিষয়ক আলোচনা, অ্যাডভেঞ্চার ক্যাম্প, টেলিস্কোপে রাতের আকাশ দেখা, তাঁবুবাস, ব্রহ্মপুত্র চর থেকে টেলিস্কোপে নতুন বছরের প্রথম সূর্য দেখা এবং সাংস্কৃতিক আড্ডা ও ক্যাম্পফায়ার। সূর্য উৎসব উপলক্ষে আয়োজিত 'ছোটদের বিজ্ঞান উৎসবে' চিলমারী উপজেলার ১৫০ জন শিক্ষার্থী রকেটের মডেল তৈরির কর্মশালা, বিজ্ঞান অলিম্পিয়াড, বিজ্ঞানবিষয়ক ছবি আঁকা, বিজ্ঞান আলোচনা ও চলচ্চিত্র প্রদর্শনী এবং টেলিস্কোপে আকাশ দেখায় অংশ নেবে।

চর শাখাহাতী এলাকার কৃষক রসুল মণ্ডলের (৭০) কাছে সূর্য উৎসবের বিষয়টি একেবারেই নতুন। বিষয়ট নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে তিনি বলেন, 'এমন উৎসবের কথা কখনো শুনিনি।'

চরের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী মিলন ইসলামকেও এই ‍উচ্ছ্বাস ছুঁয়ে গেছে। তার ভাষ্য, 'জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা আমাদের চরে এসে বছরের প্রথম সূর্যোদয় পর্যবেক্ষণ করবেন। এটা আমাদের জন্য গর্বের।'

চিলমারীর লেখক ও কলামিষ্ট নাহিদ হাসানের বক্তব্য, বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের জন্য এই উৎসব তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। চরের বাসিন্দারাও বিজ্ঞান সম্পর্কে আগ্রহী হবেন।

চিলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহবুবুর রহমান বলেন, 'ব্যতিক্রমী ও সৃজনশীল এই আয়োজনের মাধ্যমে চিলমারীকে জাতীয় পর্যায়ে তুলে ধরা হচ্ছে। এতে বিশ্বে পরিচিতি আসবে কুড়িগ্রাম জেলার।'

Comments