চট্টগ্রামে ১১৫ জায়গায় পোস্টার সাঁটানোর দায়িত্ব দিতে দরপত্র শিগগির

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) কর্তৃপক্ষ নগরকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার লক্ষ্যে বন্দর নগরীতে পোস্টার সাঁটার জন্য মোট ১১৫টি নির্দিষ্ট স্থান নির্ধারণ করতে যাচ্ছে। 

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) কর্তৃপক্ষ নগরকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার লক্ষ্যে বন্দর নগরীতে পোস্টার সাঁটার জন্য মোট ১১৫টি নির্দিষ্ট স্থান নির্ধারণ করতে যাচ্ছে। 

তবে চসিক নিজে এটি ব্যবস্থাপনা না করে কোনো বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দেবে এটি পরিচালনার জন্য।

এ লক্ষ্যে দরপত্র আহ্বান করে দুএকদিনের মধ্যে সংবাদপত্রে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে জানিয়ে চসিক সূত্র জানায়, সোমবার চসিক এর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের অভ্যন্তরীণ বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়।

এর মাধ্যমে চসিক নির্বাচিত প্রতিষ্ঠানটির কাছ থেকে রাজস্ব আদায় করবে আর প্রতিষ্ঠানটি যারা নির্ধারিত স্থানে পোস্টার সাঁটাবে তাদের কাছ থেকে নির্ধারিত হারে ফি আদায় করবে, বলে জানান চসিক কর্মকর্তারা।

বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, শপিং মল এবং সরকারি-বেসরকারি  প্রতিষ্ঠানের দেয়ালে নির্বিচারে পোস্টার সাঁটানোর অভিযোগের প্রেক্ষাপটে চসিক কর্তৃপক্ষ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে চসিক সূত্র জানায়।

পোস্টার সাঁটানোর জন্য নির্দিষ্ট স্পট নির্ধারণ করার মাধ্যমে একদিকে শহরের পরিচ্ছন্নতা এবং নান্দনিকতা যেমন অনেকাংশে বজায় থাকবে, তেমনি অন্যদিকে রাজস্ব আয়ের মাধ্যমে চসিকও লাভবান হবে বলে জানান কর্মকর্তারা।

চসিক সূত্র জানায়, পোস্টার সাঁটাতে নির্দিষ্ট স্থান নির্ধারণের প্রক্রিয়া শুরু হয় গত বছরের আগস্টে।

গত বছরের ১৪ আগস্ট চসিকের একটি অভ্যন্তরীণ বৈঠকে, মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী পোস্টার সাঁটানোর জন্য স্থান নির্ধারণের নির্দেশ দেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের। এইজন্য নির্ধারিত স্থানে কিছু স্টিলের কাঠামো তৈরির উদ্যোগ নেওয়ার জন্যও তিনি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন, জানায় চসিক সূত্র। 

ওই সভায় মেয়র পোস্টার সাঁটানোর জন্য একটি ফি নির্ধারণ করতে কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছিলেন।
কিন্তু পরবর্তীতে চসিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব নিজেরা না নিয়ে  বরং এই উদ্দেশ্যে একটি প্রাইভেট কোম্পানি নির্বাচন করার জন্য টেন্ডারে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।

যোগাযোগ করা হলে, চসিকের চিফ কনজারভেন্সি অফিসার আবুল হাসেম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'টেন্ডারের জন্য দুএকদিনের দিনের মধ্যে সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নির্দিষ্ট জায়গায় সাঁটানো পোস্টার পরিচালনার জন্য একটি প্রতিষ্ঠান নির্বাচন করা হবে।'

এ ছাড়া টেন্ডারের মাধ্যমে সর্বোচ্চ দরদাতা বাছাই করা হবে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'নির্বাচিত কোম্পানি নির্দিষ্ট স্থানে ১০ ফুট বাই ৬ ফুটের স্টিল স্থাপনা তৈরি করবে এবং পোস্টার সাঁটাতে আগ্রহী ব্যক্তি বা সংস্থার কাছ থেকে ফি নিয়ে তাতে নির্ধারিত সময়ের জন্য পোস্টার সাঁটানোর অনুমতি দেবে।'

'এই ফি চসিক কর্তৃক নির্ধারিত হবে এবং তাই কোম্পানি তার নিজের ইচ্ছেমাফিক  ফি নির্ধারণ করতে পারবে না', তিনি বলেন।

ব্যানারের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'ব্যানার নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।'

হাশেম বলেন, 'যারা নির্দিষ্ট স্থানের বাইরে পোস্টার সাঁটাবেন তাদের জরিমানা করা হবে।'

নগরীকে পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য এটিকে একটি ভালো উদ্যোগ বলে অভিহিত করা সত্ত্বেও অনেক নগরবাসী উদ্যোগটির সাফল্য সম্পর্কে শঙ্কিত।

তাদের মধ্যে একজন আবদুল আজিজ, পেশায় যিনি একজন ব্যাংকার, এই উদ্যোগকে স্বাগত জানালেও এর সফলতা সম্পর্কে শঙ্কিত।

'১৯৯০-এর দশকের শেষের দিকে, চসিকের তৎকালীন মেয়র মরহুম এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী এমন একটি উদ্যোগ নিয়েছিলেন এবং পোস্টার সাঁটানোর জন্য কিছু স্পট নির্ধারণ করে দিয়েছিলেন, 'আজিজ বলেন, 'কিন্তু কয়েক মাস পর এই ব্যবস্থা আর ধরে রাখা যায়নি… নগরী পূর্বের চেহারায় ফিরে আসে।'

যোগাযোগ করা হলে সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, 'যারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও হাসপাতালের দেয়ালে পোস্টার সাঁটাচ্ছেন, তাদের মনে হয় সাধারণ জ্ঞানের অভাব রয়েছে।'

তিনি আরও বলেন, 'আমরা এখানে একটা শৃঙ্খলা আনতে চাই এবং তাই আমরা এজন্য জায়গা নির্ধারণ করে দিচ্ছি। পোস্টার সাঁটানো এবং যারা নিয়ম লঙ্ঘন করবে তাদের বিরুদ্ধে জরিমানা আরোপ করা হবে।'

উদ্যোগের সফলতা সম্পর্কে জানতে চাইলে মেয়র বলেন, 'জনস্বার্থে আরোপিত যেকোনো নিয়মের সফলতার চাবিকাঠি হচ্ছে গণসচেতনতা।'

 

Comments