‘আমাদের দেশ যেন আর কোনোদিন পিছিয়ে না পড়ে’

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা | ছবি: টেলিভিশন থেকে নেওয়া

উন্নয়ন অগ্রযাত্রার ধারা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমাদের দেশ যেন আর কোনোদিন পিছিয়ে না পড়ে।

আজ রোববার সকালে রাজশাহীর সারদায় বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে আয়োজিত ৩৮তম বিসিএস (পুলিশ) ক্যাডারের শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপারদের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আমরা চাই আমাদের দেশ যেন আর কখনো পিছিয়ে না পড়ে। ২০০৮ এর নির্বাচনে আমরা নির্বাচনী ইশতেহার দিয়েছিলাম রূপকল্প-২০২১ সেটা বাস্তবায়ন করেছি। জাতির পিতার জন্ম শতবার্ষিকী, স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী আমরা উদযাপন করেছি। ঠিক সেই সময় আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখে উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার জন্য ডেলটা প্ল্যান-২১০০ আমরা প্রণোয়ন করে দিয়ে গেলাম।'

'বাংলাদেশের এই অগ্রযাত্রা যেন অব্যাহত থাকে। আমি চাই মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় স্বাধীনতার সুফল বাংলার মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দিয়ে এ দেশকে আমরা আরও উন্নত করবো এবং সেভাবেই আপনারা আপনাদের যথাযথ দায়িত্ব পালন করবেন। ইনশাল্লাহ বাংলাদেশকে আর কেউ পিছে টানতে পারবে না,' বলেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, 'আজকের পৃথিবী প্রযুক্তির পৃথিবী। প্রযুক্তির উৎকর্ষ সাধন হচ্ছে। বাংলাদেশও আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি। তার ভালো দিক যেমন আছে, আবার বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ বা মানি-লন্ডারিং, সাইবার ক্রাইম, মানব পাচার, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড—সেটাও কিন্তু নতুন নতুন রূপে সামনে আসছে। এগুলো মোকাবিলার জন্য আমরা ইতোমধ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছি।'

'আমরা চাই, আমাদের পুলিশ বাহিনী পেশাদারিত্ব, দক্ষতা ও বিজ্ঞানভিত্তিকভাবে গড়ে উঠবে। সে জন্য বহু প্রতিষ্ঠান এবং অনেক সরঞ্জাম আমরা ক্রয় করে দিয়েছি। প্রযুক্তির ব্যবহার অর্থাৎ ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহারে আমাদের পুলিশও যেন দক্ষতা অর্জন করে সে ব্যবস্থা করার ফলে এখন যে কোনো ঘটনা মোকাবিলা করা অনেক সহজ হয়ে গেছে,' বলেন শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, 'আমাদের নবনিযুক্ত সহকারী পুলিশ সুপারদের প্রশিক্ষণের পাশাপাশি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স অব পুলিশ সায়েন্স ডিগ্রি প্রদান করা হচ্ছে, অর্থাৎ উচ্চ শিক্ষা নেওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে। এই একাডেমির ম্যানুয়ালের পরিবর্তন করে ২০২২ সালে বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমির ম্যানুয়াল যুগোপযোগী করা হয়েছে এবং কারিকুলামেও আনা হয়েছে ব্যাপক পরিবর্তন। মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়টি মাথায় রেখে মেডিটেশন কোর্স অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।'

'প্রথাগত প্রশিক্ষণের পাশাপাশি চালু করা হয়েছে হাই ইনটেনসিটি ইন্টারভাল ট্রেইনিং এর বিষয়সমূহ। একাডেমিতে সকল পদের প্রশিক্ষণার্থীদের আধুনিক প্রশিক্ষণ প্রদানের লক্ষ্যে আধুনিক সুবিধাসম্পন্ন শ্রেণিকক্ষ, কম্পিউটার ল্যাব, ল্যাংগুয়েজ ল্যাব, ফরেনসিক ডেমোনেসট্রেশন ল্যাব, শ্যুটিং সিমিউলেটর, মক থানা ইত্যাদি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। ফলে একাডেমি থেকে যথাযথ মৌলিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে পেশাগত দায়িত্ব পালনে আমাদের পুলিশ বাহিনী আরও দক্ষ ও সক্ষম হয়ে উঠছে,' বলেন তিনি।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, 'আধুনিক সময়ে নাগরিক সেবার ধারণাকে প্রাধান্য দিয়ে পুলিশ সেবাকে গণমানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে হবে। পুলিশ বাহিনী যেন জনগণের আস্থা অর্জন করতে পারে। দুর্যোগ মোকাবিলা, সন্ত্রাস দমন; যে কোনো কাজ করতে গেলে জনগণের সহায়তা একান্তভাবে দরকার। মানুষ যেন যে কোনো বিপদে পড়লে পুলিশকে পাশে পেলে তারা যেন অন্তত আশ্বস্ত হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখে আমি বলবো পুলিশ তার পেশাদারিত্ব ও সহমর্মিতা দিয়ে মানুষের আস্থা অর্জন করবে।'

'জাতির পিতা ১৯৭৫ সালের ১৫ জানুয়ারি রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে বলেছিলেন, "আপনারা স্বাধীন দেশের পুলিশ। আপনারা বিদেশি শোষকদের পুলিশ না, জনগণের পুলিশ। আপনাদের কর্তব্য জনগণের সেবা করা, জনগণকে ভালোবাসা, দুর্দিনে জনগণকে সাহায্য করা।" আজ ৩৮তম বিসিএস পুলিশ ব্যাচের সমাপনী কুচকাওয়াজের দিনে পুলিশ বাহিনীর সকল সদস্যদের আমি এ অনুরোধ করবো জাতির পিতার স্বপ্নের যে সোনার বাংলাদেশ গড়তে চেয়েছিলেন, সে বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব ও নিষ্ঠার সঙ্গে আপনারা দায়িত্ব-কর্তব্য পালন করবেন।'

নবীন কর্মকর্তাদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় আপনারাও আমাদের সাথী। এ জন্য আপনাদেরকে যুগোপযোগী কর্মকৌশল গ্রহণ ও দক্ষতার সঙ্গে কাজ করতে হবে। বাংলাদেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে রূপান্তরে তরুণ প্রজন্মকে নেতৃত্ব দিতে আমরা যথাযথ পদক্ষেপ নিচ্ছি।'

Comments

The Daily Star  | English

Tribute to July uprising: Drone show lights up Dhaka's sky

In 12 vivid motifs, the July uprising came alive, tracing the heroism of Abu Sayed and the stirring role of women in the movement

8h ago