৪ মাস পর জামিনে মুক্ত রাজবাড়ীর সেই বিএনপি নেত্রী সোনিয়া

সোনিয়া আক্তার স্মৃতি। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে 'আপত্তিকর' পোস্ট দেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার রাজবাড়ী জেলা মহিলা দলের নেত্রী সোনিয়া আক্তার ওরফে স্মৃতি জামিনে মুক্ত হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তিনি রাজবাড়ী কারাগার থেকে বের হন।

সোনিয়া রাজবাড়ী ব্লাড ডোনার্সের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। তিনি জেলা মহিলা দলের সদস্য। তার স্বামী খোকন আহমেদ প্রবাসী। দুই সন্তানের জননী শহরের বেড়াডাঙ্গা এলাকায় বসবাস করেন।

গত ৩ অক্টোবর ফেসবুকে 'আপত্তিকর' পোস্টের অভিযোগ এনে রাজবাড়ী সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দেন সামসুল আরেফিন চৌধুরী নামের আওয়ামীলীগের স্থানীয় এক নেতা। সামসুল সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক। তার বাড়ি সদর উপজেলার গঙ্গাপ্রসাদপুর গ্রামে। তার পৈতিক নিবাস পাবনায়।

পরে অভিযোগটি মামলা হিসেবে গত ৫ অক্টোবর রেকর্ড করা হয়। সে রাতেই তাকে শহরের বেড়াডাঙ্গা এলাকায় বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সূত্র জানায়, মামলায় মামলায় রাজবাড়ী জেলা ও দায়রা জজ আদালতে জামিন চেয়ে বিফল হন সোনিয়া। তিনি জামিন চেয়ে ৩০ অক্টোবর হাইকোর্টে আবেদন করেন। এর শুনানি নিয়ে ৩১ অক্টোবর হাইকোর্ট সোনিয়াকে অন্তবর্তীকালীন জামিন দিয়েছিলেন। এর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করে।

গত ২ নভেম্বর আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত তার জামিন স্থগিত করেন। চেম্বার আদালত বিষয়টি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান। এর ধারাবাহিকতায় ২৮ নভেম্বর আপিল বিভাগে শুনানি হয়। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মো. মোর্শেদ। সোনিয়ার পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, কায়সার কামাল, মনিরুজ্জামান আসাদ ও মাকসুদ উল্লাহ।

আপিল বিভাগ রাষ্ট্রপক্ষের লিভ টু আপিল শুনানি আগামী ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত মুলতবি করেন। ১৫ জানুয়ারি প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ সোনিয়া আক্তারের ৬ মাসের জামিনের আদেশ দেন।

মামলার অভিযোগ অনুযায়ী, গত ৩১ আগস্ট সোনিয়া তার নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে একটি স্ট্যাটাস দেন। এতে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি বক্তব্যের সমালোচনা করে 'আপত্তিকর' কথা লেখেন। অনেকে পোস্টটি দেখায় প্রধানমন্ত্রীর সুনাম ক্ষুণ্ন ও মানহানি হয়েছে বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়।

এ প্রসঙ্গে সোনিয়া আক্তার গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, 'আমি সঠিক কথাই লিখে ছিলাম। সত্যি কথা বলার অপরাধে আজকে প্রায় ৪ মাস আমার মাসুম দুটি বাচ্চা রেখে আমাকে জেল খাটতে হয়েছে। এতে আমার কোনো আপসোস নেই। কারণ আমি জানি, পুরো বাংলাদেশের মানুষ আমার পাশে ছিল। আমি যে মিথ্যা কথা বলি নাই সেটা বাংলাদেশের মানুষের কাছে তুলে ধরতে পেরেছি।'

বৃহস্পতিবার সোনিয়ার মুক্তির পর তার বাবা আবদুল সাত্তার মল্লিক বলেন, 'বাংলাদেশে জামিন হয় কিন্তু মুক্তি মেলেনা। আমার বাচ্চা আমার কাছে ফিরে এসেছে। আমার বুকের মানিক। আমার খুব ভালো লাগছে।'

Comments

The Daily Star  | English

Yunus for presenting true, impartial history of Liberation War

Directs all concerned to work accordingly to ensure that the real history of the Liberation War emerges through all the projects of the Liberation War affairs ministry in the coming days

8m ago