সুন্দরবনে বন অফিস এলাকা ছাড়ল ৩ বাঘ
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের সুপতি স্টেশনের চন্দেশ্বর অফিস এলাকায় এখন আর বাঘের দেখা মিলছে না এবং গর্জনও শোনা যাচ্ছে না। এতে স্বস্তিতে আছেন বনরক্ষীরা।
বন দপ্তরের ধারণা, বিশুদ্ধ পানি খেতে ভুল করে ৩টি বাঘ এই অফিস এলাকায় চলে এসেছিল। তবে বনরক্ষীদের সতর্ক উপস্থিতি টের পেয়ে তারা আবার বনের গহীনে ফিরে গেছে।
এর আগে, শুক্রবার দুপুর থেকে শনিবার দুপুরের আগ পর্যন্ত বেশ কয়েকবার বাঘগুলোকে দেখেন বনরক্ষীরা।
তারা জানান, চাকরির সুবাদে সুন্দরবনের ভেতরে থাকলেও বাঘ দেখার সৌভাগ্য সবার হয় না। প্রথমবার বাঘ দেখে তারা খুব ভয় পেয়েছিলেন। কিন্তু বাঘ চলে যাওয়ার পর স্বস্তিতে আছেন।
চন্দেশ্বর অফিসের ইনচার্জ মো. ফারুক আহমেদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'শনিবার দুপুরের আগে একবার বাঘ দেখা যায়। পরে আর আমরা দেখতে পাইনি। এখন বাঘের গর্জনও শুনতে পাচ্ছি না। যতদূর মনে হয়, তারা অফিস এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছিল। পরে এলাকাটি অপরিচিত হওয়ায় এবং বনরক্ষীদের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা চলে যায়।'
তিনি বলেন, 'বাঘগুলো খুবই শান্ত ছিল। তারা কোনো সহিংসতা দেখায়নি। তারপরও আমরা খুব সতর্ক ছিলাম। আমরা সাবধানে ছবি তুলেছিলাম। আমরা এখনো সতর্ক আছি। এ ছাড়া, সবাইকে নির্দেশনা দিয়েছি, যাতে বাঘ এলেও কেউ ক্ষতিগ্রস্ত না হয় এবং কেউ যেন বাঘকে বিরক্ত না করে।'
করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজাদ কবির ডেইলি স্টারকে বলেন, 'যিনি বনে বাঘ দেখেছেন এবং বাঘ গণনা কার্যক্রমে সরাসরি অংশ নিয়েছেন, তিনি বলেছেন যে, অন্য কোনো প্রাণী মানুষের সংস্পর্শে আসতে চায় না। একইভাবে বাঘও মানুষের কাছ থেকে দূরে থাকতে চায়। কিন্তু বাঘ কখনোই নিজেকে আড়াল করতে চায় না। ক্ষুধার্ত হলে বাঘ রেগে যায়। সেসময় সে এখানে-সেখানে যায়, ক্ষুধার্ত না থাকলে বাঘ বিশ্রাম নিতে পছন্দ করে। বাঘ তখনই মানুষকে আক্রমণ করে, যখন তারা খুব ক্ষুধার্ত এবং নিরাপত্তাহীনতা বোধ করে।'
চন্দেশ্বর অফিস এলাকায় বাঘের আগমন সম্পর্কে তিনি আরও বলেন, 'সুন্দরবনে বাঘের বিচরণ স্বাভাবিক। যেখানে মানুষ বাস করে সেখানে বাঘের যাওয়ার কথা নয়। ঘোরাঘুরি, পথ ভুলে ওই এলাকায় চলে যেতে পারে। যখন তারা বুঝতে পারে যে, তারা মানুষের কাছাকাছি, তখন তারা তাদের পছন্দের জায়গায় ফিরে যায়।'
Comments