টঙ্গী-জয়দেবপুর রেলের ডাবল লাইন চালু
ঢাকা-টঙ্গী সেকশনে তৃতীয় ও চতুর্থ ডুয়েল গেজ লাইন এবং টঙ্গী জয়দেবপুর ডুয়েল গেজ ডাবল লাইন প্রকল্পের আওতায় টঙ্গী-জয়দেবপুর ডাবল লাইন উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ বৃহস্পতিবার গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি এ ডাবল লাইন রেলপথ উদ্বোধন করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধনের পর দুপুরে জয়দেবপুর রেলজংশন এলাকার নবনির্মিত ডাবল লাইন ধরে একটি বিশেষ ট্রেনে চড়ে টঙ্গী-জয়দেবপুর ১১ কিলোমিটার রেলপথে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন রেলমন্ত্রী, রেল সচিব, রেলের ডিজি ও এডিজি।
জয়দেবপুর জংশনের সিনিয়র স্টেশন মাস্টার রেজাউল ইসলাম জানান, ঢাকা-টঙ্গী সেকশনে তৃতীয় ও চতুর্থ ডুয়েল গেজ লাইন এবং টঙ্গী-জয়দেবপুর ডুয়েল গেজ ডাবল লাইন সেকশনে ৩৩ দশমিক ৪৮ কিলোমিটার লুপলাইনসহ ১১৬ কিলোমিটার ও ৪টি স্টেশন পুনর্নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রথমে এ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয় ৮৪৮ কোটি ৬০ লাখ টাকা। নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে না পারায় প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয় ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত। প্রকল্পের অনুমোদিত ব্যয় ধরা হয়েছে ১হাজার ১০৬ কোটি ৮০ লাখ টাকা।
তিনি আরও জানান, সিঙ্গেল লাইন থাকার কারণে এতদিন অন্য আন্তঃনগর এক্সপ্রেস ট্রেনের চলাচলে জয়দেবপুর এবং ধীরাশ্রম স্টেশনে ট্রেন দাঁড়িয়ে থাকত। এখন আর কোনো ট্রেনকে অন্য ট্রেনের চলাচল স্বাভাবিক রাখতে অপেক্ষা করতে হবে না।
ঢাকা-টঙ্গী সেকশনে তৃতীয় ও চতুর্থ ডুয়েল গেজ লাইনের প্রকল্প পরিচালক নাজনিন আরা কেয়া বলেন, 'টঙ্গী-জয়দেবপুর সেকশনে ডাবল লাইন ট্রেন চালুতে প্রায় সব ট্রেনের যাত্রা সময় গড়ে ১৫-২০ মিনিট সাশ্রয় হবে। বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে দুপুরে ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে।'
'গাজীপুর ঐতিহ্য ও উন্নয়ন'র ৯ দফা দাবি
গাজীপুর ঐতিহ্য ও উন্নয়ন নামের সামাজিক সংগঠনের সভাপতি প্রকৌশলী সামসুল হক বলেন, 'গাজীপুর থেকে প্রতিদিন প্রায় ২০ হাজার কর্মজীবী যাত্রী ঢাকায় যাতায়াত করেন। শিল্পায়ন এবং দ্রুত জনসংখ্যা বৃদ্ধিতে সড়ক পথের ভোগান্তির কারণে রেলপথ জনপ্রিয় হচ্ছে এবং যাত্রীর সংখ্যাও দিন দিন বাড়ছে। এ অবস্থায় আন্তঃনগর এক্সপ্রেসের ৯টি ট্রেন জয়দেবপুরে জংশনে স্টপেজ দেয় না।;
জয়দেবপুর জংশনে সকল ট্রেনের যাত্রা বিরতি, টঙ্গী ও তেজগাঁও স্টেশনে টাঙ্গাইল কমিউটার ট্রেনের স্টপেজ দেওয়া, জয়দেবপুর-ঢাকা ট্রেনের মাসিক টিকিট চালু, ট্রেনে বগি ও আসন বৃদ্ধি করাসহ রেলমন্ত্রীর কাছে ৯ দফা দাবি জানিয়েছেন সামাজিক সংগঠন গাজীপুর ঐতিহ্য ও উন্নয়নের সভাপতি সামসুল হক ও সাধারণ সম্পাদক কাজী মরিয়ম পারভীন ময়না।
জানা গেছে, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যাতায়াতে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় ঢাকা-টঙ্গী ও টঙ্গী-জয়দেবপুর সেকশন। কিন্তু, এই ২ সেকশনের মধ্যে ঢাকা-টঙ্গী সেকশনে ২টি ডুয়েলগেজ লাইন ও একটি ডুয়েলগেজ ডাবল লাইন এবং টঙ্গী-জয়দেবপুর সেকশনে একটি ডুয়েলগেজ লাইন চালু আছে। এ কারণে টঙ্গী-জয়দেবপুর সেকশনে চাহিদা থাকার পরও বেশি সংখ্যক ট্রেন পরিচালনা করা যাচ্ছিল না। ফলে, ঢাকা থেকে আরও ট্রেন চলাচল বাড়ানো, ভ্রমণের সময় সাশ্রয়, যাত্রীসেবার মান বাড়াতে ২০১২ সালের নভেম্বরে ঢাকা-টঙ্গী সেকশনে তৃতীয় ও চতুর্থ ডুয়েলগেজ ডাবল লাইন নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এফ কন কল্পতরু এ ডাবল লাইনের কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে।
Comments