ধরলায় অবৈধ বালু উত্তোলনের মহোৎসব, হুমকিতে শেখ হাসিনা সেতু

হুমকিতে শেখ হাসিনা ধরলা সেতু
ধরলা সেতুর কাছ থেকে অবৈধভাবে তোলা হচ্ছে বালু। ছবি: এস দিলীপ রায়/স্টার

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার শিমুলবাড়ী ইউনিয়নের চর যতীন্দ্র নারায়ণ এলাকায় ধরলা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের মহোৎসব চলছে।

গত ৩ সপ্তাহ যাবৎ প্রকাশ্যে বালু উত্তোলন করা হলেও প্রশাসন নিচ্ছে না কোনো ব্যবস্থা।

অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের কারণে হুমকিতে পড়েছে ধরলা নদীর ওপর নির্মিত শেখ হাসিনা ধরলা সেতু। এসব বালু ট্রাক্টর দিয়ে পরিবহন করায় নষ্ট হচ্ছে ফসলি জমি ও গ্রামীণ রাস্তা।

নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের সঙ্গে জড়িত রয়েছে শক্তিশালী একটি চক্র। এ কারণে স্থানীয়রা প্রকাশ্যে বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছেন না।

স্থানীয়রা জানান, ধরলা সেতুর পাশে নদী থেকে প্রতিদিন ৩০০-৩৫০ ট্রাক্টর বালু বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। অবৈধ ও অপরিকল্পিত বালু উত্তোলনের ফলে ধরলা সেতু হুমকিতে পড়েছে। অবৈধভাবে নদী থেকে বালু উত্তোলনের ফলে বর্ষায় তাদের এলাকায় বন্যা ও নদীভাঙন দেখা দেয়। এ ব্যাপারে উপজেলা প্রশাসনকে একাধিকবার অবহিত করা হলেও অজ্ঞাত কারণে নেওয়া হচ্ছে না কোনো আইনি ব্যবস্থা।

বালু পরিবহনকারী ট্রাক্টর চালক আনোয়ার হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, তারা প্রতি ট্রাক্টর বালু ২৫০-৩০০ টাকা দরে কিনছেন। এরপর এগুলো তারা বিক্রি করেন ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকা দরে। প্রত্যেক ট্রাক্টর চালক প্রতিদিন ৭-৮ বার বালু নিয়ে যান ধরলার পাড় থেকে। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রায় ৫০টি ট্রাক্টর বালু পরিবহনে ব্যবহার করা হয়।

এসব বালু লালমনিরহাট সদর ও ফুলবাড়ী উপজেলার বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হয়।

শিমুলবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য জমসেদ আলী ডেইলি স্টারকে বলেন, 'প্রতিবাদ করেও নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ করা যাচ্ছে না। বালু উত্তোলন করায় চর যতীন্দ্র নারায়ণ এলাকায় বর্ষাকালে ভয়াবহ বন্যা ও নদীভাঙন দেখা দেয়। স্থানীয় প্রভাবশালীরা এই অবৈধ বালু উত্তোলনের সঙ্গে জড়িত।'

নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারী সিন্ডিকেটের প্রধান ইছাহাক আলী ডেইলি স্টারকে বলেন, 'নদী থেকে বালু উত্তোলনের বিষয়ে উপজেলা প্রশাসন অবগত। নদীতে আমার অনেক জমি চলে গেছে। এসব জমি থেকে বালু তুলে বিক্রি করছি।'

ফুলবাড়ী উপজেলা প্রকৌশলী আসিফ ইকবাল ডেইলি স্টারকে বলেন, 'শেখ হাসিনা ধরলা সেতুর কাছ থেকে বালু উত্তোলন করায় সেতুটি হুমকির মুখে রয়েছে। এ বিষয়ে উপজেলা প্রশাসনই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে।'

ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুমন দাস ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমি এ বিষয়ে অবগত নই। নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের বিষয়ে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।'

Comments

The Daily Star  | English

Ten non-banks lose Tk 1,079cr in H1

Bangladesh has 35 NBFIs, of which 23 are listed. 16 have published their half-yearly data so far, seven are yet to report.

10h ago