আজমের ৬ বছরের মেয়ে জানে না বাবা আর নেই

বৃদ্ধ শাহ জাহান ঠিক জানেন যে, মৃত মানুষ কখনো ফিরে আসে না। কিন্তু পুত্রশোকে কাতর পিতা তাতে সান্ত্বনা পান না। তিনি কেঁদেই চলেন।
হাসপাতালে আজমের বাবার আহাজারি। ছবি: সাজ্জাদ হোসেন/স্টার

ছেলে হারানোর শোকে পাগলপ্রায় বাবা শাহ জাহান বিলাপের সুরে বলে উঠলেন, 'শেষবারের মতো আমাকে বাবা বলে ডাক। আমার সঙ্গে কথা বল। আল্লাহ আরেকবার আমার ছেলেটারে বাঁচিয়ে দাও।'

বৃদ্ধ শাহ জাহান ঠিক জানেন যে, মৃত মানুষ কখনো ফিরে আসে না। কিন্তু পুত্রশোকে কাতর পিতা তাতে সান্ত্বনা পান না। তিনি কেঁদেই চলেন।

এই দৃশ্য দেখা গেল ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে।

আজ শনিবার সকাল ৯টায় সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান শাহ জাহানের ছেলে মির্জা আজম (৩৫)। গত মঙ্গলবার পুরান ঢাকার সিদ্দিক বাজারে ক্যাফে কুইন নামে পরিচিত ভবনে বিস্ফোরণে দগ্ধ হন তিনি। চিকিৎসকরা বলছেন, আগুনে আজমের শরীরের ৮০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল।

এতে প্রাণঘাতী এই দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে হলো ২৩ জনে দাঁড়ালো।

মির্জা আজমের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তিনি গত ৬ বছর ধরে ভবনটির নিচতলায় স্যানিটারি পণ্যের দোকানে কাজ করতেন। বিস্ফোরণের দিন ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থল থেকে তাকে উদ্ধার করে বার্ন ইউনিটে ভর্তি করে।

আজমের চাচা নান্নু মিয়া তাকে একজন 'ভদ্র' ছেলে হিসেবে অভিহিত করেন। বলেন, 'তাকে (আজম) সবাই ভালোবাসত।'

নান্নু মিয়া বলেন, 'আজমের ৬ বছরের মেয়ে এখনো জানে না যে তার বাবা আর নেই। ২ ভাই ও ২ বোনের মধ্যে আজম ছিল সবার বড়।'

স্ত্রী-মেয়েকে নিয়ে আজম মগবাজারের মধুবাগ এলাকার একটি বাসায় ভাড়া থাকতেন। তাদের সঙ্গে থাকতেন তার মা-বাবা ও ২ ভাই-বোন।

তাদের গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলায়।

 

Comments