সাংবাদিক-আইনজীবীদের ওপর পুলিশের হামলার নিন্দায় ৪৫ নাগরিকের বিবৃতি

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে কোর্ট প্রাঙ্গণে সাংবাদিক ও আইনজীবীদের ওপর পুলিশের হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন ৪৫ জন বিশিষ্ট নাগরিক।
ছবি: ভিডিও থেকে

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে কোর্ট প্রাঙ্গণে সাংবাদিক ও আইনজীবীদের ওপর পুলিশের হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন ৪৫ জন বিশিষ্ট নাগরিক।

আজ বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে পুলিশের হামলাকে 'ন্যাক্কারজনক' উল্লেখ করে তারা বলেন, 'সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত খবরে জানা যায়, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি নির্বাচনের ভোটকেন্দ্র শহীদ শফিউর রহমান অডিটোরিয়ামে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের দাবিতে বিক্ষোভ করছিলেন বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা। তাদের অডিটোরিয়াম থেকে বের করে দেওয়ার জন্য সেখানে প্রবেশ করেন বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য। তারা সেখানে ঢুকেই বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের ওপর লাঠিচার্জ করেন। এ ঘটনার ছবি ও ভিডিও ফুটেজ নিচ্ছিলেন সাংবাদিকরা। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে অতর্কিতভাবে মারধর ও লাঠিচার্জ শুরু করে পুলিশ। সাংবাদিকদের কিল-ঘুষি মারে, জামা কাপড় ছিঁড়ে ফেলে।

পুলিশের লাঠিচার্জে আহত হয়েছেন এটিএন নিউজের রিপোর্টার জাবেদ আক্তার, প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ ফটোসাংবাদিক শুভ্র কান্তি দাস, জাগো নিউজের জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ফজলুল হক, আজকের পত্রিকার নূর মোহাম্মদ, ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের জান্নাতুল ফেরদৌস, বৈশাখী টেলিভিশনের ক্যামেরা পারসন ইব্রাহিম হোসেন, এটিএন বাংলার ক্যামেরা পারসন হুমায়ুন কবির, মানবজমিনের আব্দুল্লাহ আল মারুফ, সময় টিভির ক্যামেরাপার্সন সোলাইমান স্বপন, ডিবিসির ক্যামেরাপার্সন মেহেদী হাসান মিমসহ ২৫ জন গণমাধ্যমকর্মী ও আইনজীবী।'

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, 'সুপ্রিম কোর্টের মতো দেশের সর্বোচ্চ বিচারালয়ে পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময়ে সাংবাদিকদের ওপর পুলিশের হামলা, রাষ্ট্র কর্তৃক পুলিশকে লাঠিয়াল বাহিনী হিসেবে ব্যবহারের নির্মম দৃষ্টান্ত এবং সংবিধান স্বীকৃত নাগরিক অধিকারের পরিপন্থী। আদালত নাগরিকের সর্বশেষ আশ্রয়স্থল। সাংবিধানিক এই প্রাঙ্গণ পবিত্র। সেখানে হামলার ঘটনা নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির পরিচায়ক। ক্রমাগত জনমনে রাষ্ট্রের প্রতি ভীতি সঞ্চারিত হয়ে রাষ্ট্র দুর্বল হচ্ছে।'

'আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যেখানে রাষ্ট্রের নাগরিকদের জান-মালের নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবে সেখানে উল্টো তাদের হামলা, লাঠিচার্জ, নির্যাতনের ঘটনা মৌলিক মানবাধিকার খর্ব করে। তাই হামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দোষীদের বিচারের আওতায় এনে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের স্বাধীনতা রক্ষা করতে হবে এবং নির্বাচন বিতর্কমুক্ত রাখতে পারস্পরিক সহনশীলতা এবং যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানাই', এতে যোগ করা হয়।


বিবৃতিতে সই করেছেন- লেখক ও চিন্তক ফরহাদ মজহার, লেখক ও অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এম রফিকুল ইসলাম, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুল লতিফ মাসুম, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী এডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগেরঅধ্যাপক আসিফ নজরুল, পিপলস একটিভিস্ট কোয়ালিশনের সাবেক কূটনীতিক ও সমন্বয়ক সাকিব আলি, জাতীয় প্রেস ক্লাবের  লেখক ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমদ, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক ইলিয়াস খান, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এডভোকেট জগলুল হায়দার আফ্রিক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক ড. কামরুল আহসান, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এডভোকেট মোহসিন রশীদ, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম, লেখক ও রাজনীতিক ফিরোজ আহমেদ, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও রাজনীতিক এড. তাজুল ইসলাম, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, আইনজীবী অধিকার পরিষদের সমন্বয়ক ব্যারিস্টার জিশান মহসিন, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. ময়েজুল ইসলাম, বিডি ফ্যাক্টচেকের প্রতিষ্ঠাতা জাহেদ আরমান, ইন্সটিটিউট অফ ওয়াটার এড এনভায়রনমেন্টের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী ম ইনামুল হক, কবি আবদুল হাই শিকদার, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মো. জামাল উদ্দিন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর কবির, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের অধ্যাপক ড. ইফতিখারুল আলম মাসউদ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক নাসির উদ্দিন আহমেদ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের প্রফেসর ড. আবদুল মাবুদ, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি  এম আব্দুল্লাহ, কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক মাহাবুব মোর্শেদ,  লেখক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. মারুফ মল্লিক, প্রকৌশলী ও টেকসই উন্নয়ন বিষয়ক লেখক ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এআইএসের সহযোগী অধ্যাপক ও লেখক মোশাহিদা সুলতানা ঋতু, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার যুবায়ের আহমেদ ভূইয়া, লেখক ও সম্পাদক রাখাল রাহা, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মাহবুব হোসেন, পেশাজীবী অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক জাফর মাহমুদ, কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক সালাহ উদ্দিন শুভ্র, লেখক ও গবেষক জাকারিয়া পলাশ, নারী সংগঠক ও মানবাধিকার কর্মী ব্যারিস্টার নাসরীন সুলতানা মিলি, কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক এহসান মাহমুদ, নাগরিক পরিষদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামসুদ্দিন, কবি ও লেখক শওকত হোসেন এবং গবেষক ও অ্যাক্টিভিস্ট মাহা মির্জা।

 

Comments