প্রথম আলোর সাংবাদিকের মুক্তি ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবি ৩০ নাগরিকের

শামসুজ্জামান। ছবি: প্রথম আলোর সৌজন্যে

প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক শামসুজ্জামান শামসকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিচয়ে তার বাসা থেকে তুলে নেওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দেশের ৩০ নাগরিক।

আজ বুধবার এক বিবৃতিতে তারা বলেন, 'তুলে নেওয়ার ১০ ঘণ্টা পর্যন্ত শামসের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। এ সময় তার পরিবারের সদস্যরা স্থানীয় আশুলিয়া থানায় যোগাযোগ করলেও শামসের সন্ধান পাননি। মূলত ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের কারণে শামসকে শেষ রাতে ধরে নিয়ে যাওয়া হয় বলে জানা যায়।'

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, 'ওই প্রতিবেদনে দেশের বাজার পরিস্থিতি ও নিত্যপণ্যের দাম নিয়ে একজন দিনমজুরের বক্তব্য উপস্থাপন করা হয়। এ ঘটনায় শামসকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় বলে গণমাধ্যম সূত্রে আমরা জানতে পারি। আমরা এ ঘটনায় গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। রাতের বেলায় পরোয়ানা ব্যতীত কাউকে আটক করা সভ্য দেশে কল্পনাতীত। স্বাধীনতার মাসে নাগরিকদের এভাবে হয়রানি করায় আমরা ব্যথিত।'

'বিনা পরোয়ানায় শামসকে আটক করে তার সাংবিধানিক অধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে বলে আমরা মনে করি। সংবিধানের তৃতীয় ভাগের মৌলিক অধিকার অধ্যায়ের ৩৩ (১) অনুচ্ছেদে কারণ উল্লেখ না করে কাউকে আটকে রাখা যাবে না বলে উল্লেখ করা হয়েছে। অথচ শামসকে আটকের বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুনির্দিষ্টভাবে কিছু বলতে পারেননি গণমাধ্যমকর্মীদের। দুপুরের পর গোলাম কিবরিয়া নামে যুবলীগের এক নেতার দায়ের করা মামলায় শামসকে আটক করা হয়', যোগ করা হয় ‍বিবৃতিতে।

এতে আরও বলা হয়, 'শামস ছাড়াও সম্প্রতি গণমাধ্যমকর্মীদের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আটক ও হয়রানির তথ্য আমাদের নজরে এসেছে। দিন দিন দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা মারাত্মকভাবে সংকুচিত হয়ে পড়ছে। এ অবস্থায় গনমাধ্যমকর্মীদের পেশাগত নিরাপত্তাও হুমকির মুখে।'

'আমরা অবিলম্বে শামসুজ্জামান শামসকে মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়ে নিঃশর্ত মুক্তি এবং গণমানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবি জানাই', বলা হয় বিবৃতিতে।

বিবৃতিতে সই করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ারউল্লাহ চৌধুরী, আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, লেখক ও অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী, লেখক অধ্যাপক রেহনুমা আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সারা হোসেন, পিপলস অ্যাক্টিভিস্ট কোয়ালিশনের সাবেক কূটনীতিক ও সমন্বয়ক সাকিব আলি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক তানজিম উদ্দিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও লেখক সৈয়দ আবদাল আহমদ, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক ইলিয়াস খান, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মাহমুদুল সুমন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের অধ্যাপক ড. ইফতিখারুল আলম মাসউদ, লেখক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. মারুফ মল্লিক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতত্ত্ব বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মাইদুল ইসলাম, মানবাধিকারকর্মী ও গবেষক রোজীনা বেগম, সাংবাদিক ও গবেষক সায়দিয়া গুলরুখ, লেখক ও অ্যাক্টিভিস্ট দিলশানা পারুল, কবি ও লেখক শওকত হোসেন, প্রকৌশলী ও টেকসই উন্নয়ন বিষয়ক লেখক ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এআইএসের সহযোগী অধ্যাপক ও লেখক মোশাহিদা সুলতানা ঋতু, কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক সালাহ উদ্দিন শুভ্র, লেখক ও সাহিত্যিক রবিউল করিম মৃদুল, লেখক ও গবেষক জাকারিয়া পলাশ, নারী সংগঠক ও মানবাধিকারকর্মী ব্যারিস্টার নাসরীন সুলতানা  মিলি, কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক এহসান মাহমুদ, সংগঠক ও অ্যাক্টিভিস্ট আরিফুল ইসলাম আদীব।

Comments

The Daily Star  | English

US retailers lean on suppliers to absorb tariffs

Rather than absorbing the cost or immediately passing it on to consumers, many US apparel retailers and brands have turned to their suppliers in Bangladesh, demanding they share the pain

2h ago