বঙ্গবাজারে আগুন

‘সর্বস্বান্ত হয়েছি মনে রাখতে চাই না, ব্যবসা করতে চাই, সহায়তা চাই’

ঈদের বাজারে খোলা আকাশের নিচে চৌকি পেতে হলেও ব্যবসা করে কিছুটা ক্ষতি পুষিয়ে নিতে চান তারা
‘সর্বস্বান্ত হয়েছি মনে রাখতে চাই না, ব্যবসা করতে চাই, সহায়তা চাই’
ছবি: শাহীন মোল্লা/স্টার

ঈদ উপলক্ষে ব্যাংকসহ বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও পরিচিতদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে ব্যবসায় বিনিয়োগ করেছিলেন বঙ্গবাজারের ব্যবসায়ীরা। ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে সব পুড়ে ছাই। নিঃস্ব হয়েছেন ব্যবসায়ীরা, ঈদ আনন্দ মাটি হয়ে গেছে দোকান কর্মচারীদের।

ঈদের বাজারে খোলা আকাশের নিচে চৌকি পেতে হলেও ব্যবসা করে কিছুটা ক্ষতি পুষিয়ে নিতে চান তারা। এ ব্যাপারে তারা প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে সহায়তা চেয়েছেন।

গতকাল শুক্রবার বিকেলে বঙ্গবাজারের মহানগর কমপ্লেক্সের দোকান মালিক দেলোয়ার হোসেনের (৪২) সঙ্গে কথা হয় দ্য ডেইলি স্টারের। মহানগর কমপ্লেক্সে ১১৯ থেকে ১২৫ নম্বর পর্যন্ত মোট ৭টি দোকানের মালিক ছিলেন তিনি।

ছবি: শাহীন মোল্লা/স্টার

দেলোয়ার বলেন, '২২ বছর ধরে আমি এখানে ব্যবসা করছি। ঈদের আগে ব্যবসার জন্য ব্যাংক থেকে ২০ লাখ টাকা লোন নিয়েছি। আত্মীয়-স্বজনের কাছ থেকে নিয়েছি আরও ২০ লাখের মতো। এখন আমি দিশেহারা হয়ে পড়েছি। আমার দোকানে ১২ জন কর্মচারী ছিল।'

করোনা মহামারির কারণে গত ২ বছর ব্যবসায় ক্ষতি হয়েছিল। মাত্রই অবস্থা ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছিল। এ কারণে এবার অনেক বেশি টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন। সব হারিয়ে এখন নিঃস্ব হয়েছেন তিনি।

'সব তো হারালাম। আমার ২ ছেলেমেয়ে পড়াশোনা করে। তাদের দিকে চেয়ে হলেও এখন সব সহ্য করে নিয়ে আবার ঘুরে দাঁড়াতে চাই। মনোবল হারাতে চাই না। যাদের কাছ থেকে ঋণ নিয়েছি প্রয়োজনে তাদের সহায়তা চাইবো। আরও ঋণ নিয়ে হলেও ব্যবসায় ফিরে আসবো,' বলেন তিনি।

জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'রমজানের আগে অন্তত ১০ দিন ব্যবসা করতে চাই। জিনিস যদি আনতে পারি তাহলে ব্যবসা হবে। আমি তো একটা দোকান দিয়েই শুরু করেছিলাম। এখন আবার একটা দোকান দিয়েই শুরু করবো।'

সরকারের কাছে সুদমুক্ত ঋণের ব্যবস্থা করে দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।

ছবি: শাহীন মোল্লা/স্টার

একই কথা জানালেন, আদর্শ মার্কেটের মায়ের দোয়া গার্মেন্টসের মালিক মো. জাকির হোসেন। সেদিন রাত সাড়ে ১০টার দিকে পকেটে ২৬০ টাকা নিয়ে বের হয়েছিলেন তিনি। ওই ২৬০ টাকা ছাড়া আর কোনো নগদ টাকা বাঁচেনি তার। ঈদ উপলক্ষে ৩০ লাখ টাকার জিনিস তুলেছিলেন দোকানে। এখন সবকিছু পুড়ে ছাই।

তিনি বলেন, 'আমি যে সর্বস্বান্ত হয়ে গেছি এটা মনে হলে নিজেদের শারীরিক অবস্থাই খারাপ হয়ে যাচ্ছে। যেভাবেই পারি নতুন করে শুরু করতে চাই। অনেক কান্নাকাটি করেছি। বৌ-বাচ্চা নিয়ে পথে বসতে চাই না।'

সরকারের কাছে সুদমুক্ত ঋণের আহ্বান জানিয়ে বলেন, 'যদি আর্থিকভাবে কিছুটা সহায়তা করে তাহলে আমরা ঘুরে দাঁড়াতে চাই। যত দ্রুত সম্ভব ধ্বংসস্তুপ পরিষ্কার করে এখানে চৌকি বসিয়ে হলেও আমরা বেচাকেনা শুরু করতে চাই। প্রয়োজনে নিজেরাই পরিষ্কার করতে নামবো।' 

 

Comments

The Daily Star  | English

Why planting as many trees as possible may not be the solution to the climate crisis

The heatwave currently searing Bangladesh has led to renewed focus on reforestation efforts. On social media, calls to take up tree-planting drives, and even take on the challenge of creating a world record for planting trees are being peddled

2h ago