মহাসড়কে নেই যানজট, উত্তরাঞ্চলের ঈদ যাত্রায় স্বস্তি

গার্মেন্টস কর্মীরা ফেরা শুরু করলে মহাসড়কে চাপ বাড়তে পারে।
উত্তরের ঘরমুখো মানুষের ঈদ যাত্রায় স্বস্তি
সিরাজগঞ্জ মহাসড়কে যানবাহনের চাপ নেই বললেই চলে। রাস্তা প্রায় ফাঁকা। তবে মাঝেমধ্যে মোটরসাইকেল চোখে পড়ে। ছবিটি আজ বৃহস্পতিবার সকালে তোলা। ছবি: স্টার

ঈদ যাত্রার তৃতীয় দিনে বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম প্রান্তে কোথাও যানজটের খবর পাওয়া যায়নি। মহাসড়কে কড়া নজরদারি থাকায় এবং ট্রাফিক নিয়মে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কারণে ঈদ যাত্রায় তেমন কোনো সমস্যা পোহাতে হয়নি বলে জানান সড়ক সংশ্লিষ্টরা।

তবে বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে গার্মেন্টস কর্মীরা ফেরা শুরু করলে মহাসড়কে চাপ আরও বাড়বে বলে জানান তারা।

বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রওশন ইয়াজদানি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, বৃহস্পতিবার ভোর ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় বঙ্গবন্ধু সেতু হয়ে প্রায় ৩৭ হাজার যানবাহন পার হয়েছে। যা গত ২৪ ঘণ্টার তুলনায় বেশি।

সেহরির পর থেকে যানবাহনের চাপ বাড়লেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যানবাহন চলাচল আবারো স্বাভাবিক হয়ে পড়ে। তবে কোথাও যানজটের সৃষ্টি হয়নি। বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে গার্মেন্টস কর্মীরা ফিরতে শুরু করলে চাপ বাড়তে পারে। তবে পুলিশ প্রস্তুত আছে বলে জানান ওসি রওশন।

উত্তরাঞ্চলের ঈদযাত্রাকে সুশৃঙ্খল করতে উত্তরবঙ্গের প্রবেশমুখে সিরাজগঞ্জের বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম থেকে প্রায় ৪১ কিলোমিটার মহাসড়কে প্রায় ৮ শতাধিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা নিয়োজিত রয়েছেন।

কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যরা সড়কে বিভিন্ন পয়েন্টে মাইকিং করে চালকদের সচেতন করছেন। পাশাপাশি কেউ নিয়ম ভেঙ্গে ওভারটেক করার চেষ্টা করলে সঙ্গে সঙ্গে তাদের প্রতিহত করা হচ্ছে। ফলে মহাসড়কে যানবাহনের শৃঙ্খলা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ কর্মকর্তারা। 

বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রওশন ইয়াজদানি ডেইলি স্টারকে বলেন, এ বছর মহাসড়কে জিকজাঁক লেন তৈরি করা হয়েছে। ফলে চাইলেই কোনো গাড়ি একটি লেন পরিবর্তন করতে পারবে না, কেউ ওভারটেক করতে চাইলেও মাইকে তাদের সচেতন করা হচ্ছে, রাস্তার প্রতিটি পয়েন্টে কঠোর নজরদারি থাকায় মহাসড়কে কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়নি বলে জানান তিনি।

গাজীপুর থেকে পাবনায় ঈদ করতে আসা গৃহবধূ মোমেনা খাতুন বলেন, সকাল ৮টার দিকে গাজীপুরের মাস্টারবাড়ি থেকে রওনা হয়ে ৩ ঘণ্টার মধ্যে সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুল পৌঁছে গেছি। তবে মহাসড়কের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা কম সময়ে পার হতে পারলেও সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার বাঘাবারিতে যানজটের কারণে প্রায় ঘণ্টা খানেক বসে থাকতে হয়েছে।

মোমেনা বলেন, গত কয়েক বছর ধরে ঈদে বাড়ি আসতে ৮ থেকে ১০ ঘণ্টার আগে পৌঁছাতে পারিনি। তবে এবার রাস্তা একদম ফাঁকা।

গাড়িচালক মো. মিলটন হোসেন বলেন, মহাসড়কে যানজটের অন্যতম কারণ রাস্তায় গাড়ি বিকল হওয়া ও দুর্ঘটনা। তবে এবার কঠোর নজরদারি থাকায় কোথাও সেই ধরনের কোন সমস্যা হয়নি।

এদিকে সড়ক পথের পাশাপাশি রেলেও এবার তেমন কোনো শিডিউল বিপর্যয়ের খবর পাওয়া যায়নি। বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম রেল স্টেশন মাস্টার মো. সরয়ারদি ডেইলি স্টারকে বলেন, উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলগামী প্রতিটি ট্রেন নির্ধারিত সময়ে বঙ্গবন্ধু সেতু অতিক্রম করে স্টেশনে পৌঁছেছে। তবে প্রতিটি ট্রেনেই রয়েছে উপচে পরা ভিড়।

এ দিকে আমাদের টাঙ্গাইল সংবাদদাতা জানিয়েছেন, চন্দ্রা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত সড়কে কোথাও কোনো যানজট দেখা যায়নি। সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।

Comments