বাংলাদেশের সুপার পাওয়ার হওয়ার সামরিক উচ্চাভিলাষ নেই: পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী

শাহরিয়ার আলম
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। ফাইল ফটো

বাংলাদেশের এ অঞ্চলের সুপার পাওয়ার হওয়ার সামরিক উচ্চাভিলাষ নেই বলে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম জানিয়েছেন।

তিনি বলেছেন, পৃথিবীর সবচেয়ে বর্ধিষ্ণু অর্থনৈতিক অঞ্চল হলো ইন্ডিয়ান ওশানের দেশগুলো বা এশিয়া।

আজ শুক্রবার ঢাকায় ইন্ডিয়ান ওশান কনফারেন্সে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ইন্ডিয়ান ওশান কনফারেন্সে এ অঞ্চলের স্থিতিশীলতা বা অর্থনৈতিক সহযোগিতা, যোগাযোগ, মহামারির দুয়েক বছর পরে প্রত্যাশিত নয় এরকম কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগে কীভাবে আমরা একে অপরকে সহায়তা করতে পারি, এই সার্বিক বিষয়গুলো আলোচনা হবে ও হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী কনফারেন্সটি উদ্বোধন করবেন বলে জানান তিনি।

সম্মেলনে এই অঞ্চলের বিভিন্ন রাষ্ট্রের সরকারি প্রতিনিধিরা বক্তব্য দিবেন। আগামীকাল সরকারি পর্যায়ের পাশাপাশি বেসরকারি নেতারাও থাকবেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, এটাকে ট্র্যাক টু ডায়ালগও বলা যায় না। কারণ হলো এখানে প্রায় ২৫টি রাষ্ট্রের সরকারি প্রতিনিধিত্ব আছে। এখানে প্রায় অর্ধেক সরকারি অর্থাৎ ১২টি সরকারি পর্যায়ের অনুষ্ঠান।

তিনি বলেন, একটি ইনফরমাল বৈঠকে যেখানে আমরা অন্যান্য ফরমাল বৈঠকে মেপে মতামত দেওয়া হয়। সেখান থেকে সিভিল সোসাইটির ও সাধারণ নাগরিকদের অংশগ্রহণ, প্রফেশনাল স্টুডেন্ট অনেকে আসবেন আশা করছি আমরা। তাদের অংশগ্রহণ নীতি-নির্ধারকদের এই অঞ্চলের সমৃদ্ধির জন্য বৃহত্তর কর্মসূচি কীভাবে আরও একসঙ্গে কাজ করা যায়। বৈশ্বিক বিভিন্ন সমস্যা মোকাবিলা করে স্ব স্ব রাষ্ট্রকে আরও তাদের অবস্থান থেকে সুদৃঢ় করা যায় এই সার্বিক বিষয়গুলো আলোচনা হয়।

ইন্দো প্যাসিফিক আউটলুক ও আঞ্চলিক মেরুকরণ বিষয়ে সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে শাহরিয়ার আলম বলেন, ইন্দো-প্যাসিফিক আউটলুকের সবার স্ব স্ব অবস্থানের বা মেজর রাষ্ট্রগুলোর মৌলিক অর্থনৈতিক অবস্থানের আংশিক মিল পাওয়া যাবে। ইনক্লুসিভ মানে এই নয় যে কাউকে বাদ দিয়ে বলা হচ্ছে। আমরা এই কনফারেন্সে কাউকে ইচ্ছাকৃতভাবে বাদ দেইনি। সকলেই আমন্ত্রিত। মিয়ানমারকে বাদ দেইনি। সময়ের সংক্ষিপ্ততার কারণে আমরা আমন্ত্রণ দিতে পারিনি। মিয়ানমারের সরকারকে পৃথিবী এখনো স্বীকৃতি দেয়নি। যে কারণে সরকারের পক্ষ থেকে সেটি করিনি। কিন্তু অন্যান্য সব দেশ আমন্ত্রিত এবং বাদ দেয়া হয়নি। চীনকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, শেখ হাসিনা তার পিতার বৈদেশিক নীতি 'সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়' সেটি অনুসরণ করছেন। সফলতার অংশটি যা দেখা যাচ্ছে, তা সেই নীতির প্রতিফলন। আমরা সিভিল সোসাইটিকে সম্মান করি, যারা ভূ-রাজনীতি বোঝেন তাদের কথা আমরা শুনি ও ভালো কিছু থাকলে তা নেই, হয়তো অতীতেও গ্রহণ করেছি।

বৈশ্বিক পরিস্থিতির উল্লেখ করে তিনি বলেন, পৃথিবীতে নানা রকম সংঘাত যুদ্ধ, সুদানে যুদ্ধ হচ্ছে, পাকিস্তানে রাজনৈতিক অস্থিরতা, মধ্যপ্রাচ্যে অনেক সমস্যা আছে, সীমান্ত সমস্যাসহ নানা সংকটের মধ্যে নিকট কয়েকশত বছরের ইতিহাসে বর্তমান শতাব্দীটি সবচেয়ে কম সংঘাতময় শতাব্দী। তার মধ্যেও বাংলাদেশের সামরিক উচ্চাভিলাষ নাই যে এই অঞ্চলের সুপার পাওয়ার হবে। সকলের ফোকাসটি হলো মৌলিক সমস্যার দিকে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনার দর্শন হলো মানুষের মুখে হাসি ফোটানো। আমাদের দেশের সমস্যা এখনো মৌলিক। প্রায় ১৮ ভাগ গরীব আছেন। এবং এই অঞ্চলের যারা প্রধান অর্থনীতির দেশ আছেন তারাও যখন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ে বসেন তারাও এসব নিয়ে ভাবেন। কিভাবে আমরা আমাদের মানুষকে আরও ভালোভাবে রাখতে পারব। এটাই হলো এই অঞ্চলের লক্ষ্য।

Comments

The Daily Star  | English
Barishal University protest

As a nation, we are not focused on education

We have had so many reform commissions, but none on education, reflecting our own sense of priority.

11h ago