সেন্টমার্টিন থেকে তকি উসমানি: চরম আতঙ্ক হচ্ছে, ভয় হচ্ছে

‘সব গরু-ছাগল ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তারা তাদের মতো আছে। সেন্টারে গরু-ছাগল রাখার মতো জায়গা নেই।’
সেন্টমার্টিন থেকে তকি উসমানি: চরম আতঙ্ক হচ্ছে, ভয় হচ্ছে
সেন্টমার্টিনের পর্যটন ব্যবসায়ী ও সেখানকার স্থায়ী বাসিন্দা তকি উসমানি (ইনসেটে)। ছবিটি আজ দুপুর সাড়ে ১২টায় সেন্টমার্টিন থেকে তুলে পাঠিয়েছেন।

সেন্টমার্টিনে সকাল থেকে ১ ঘণ্টার মতো বৃষ্টি হয়েছে। এখন (দুপুর ১২.২০ মিনিট) বৃষ্টি নেই বললেই চলে। তবে বাতাস আছে। সাগরে সকালের দিকে বাতাসের গতি বাড়ছিল। তারপর কমে আসছিল। এখন যখন কথা বলছি, চোখের সামনে দেখছি সাগর উত্তাল হয়ে উঠছে।

পর্যটন ব্যবসায়ী তকি উসমানি আজ শনিবার সেন্টামার্টিন থেকে দ্য ডেইলি স্টারকে এসব তথ্য জানান। তকি উসমানি সেন্টমার্টিনে খোকা নামে পরিচিত।

সেন্টমার্টিন থেকে কত সংখ্যক মানুষ টেকনাফে চলে এসেছেন জানতে চাইলে তকি উসমানি বলেন, 'এখান থেকে ২ হাজার থেকে ২২শ লোক টেকনাফে চলে গেছেন ট্রলারে করে। সকালে যাওয়ার জন্য আমিও বের হয়েছিলাম, কিন্তু কোনো নৌযান না থাকায় যেতে পারিনি।'

সেন্টমার্টিনে এখন আপনারা কত মানুষ আছেন বলে ধারণা করছেন?'ধারণা করি এখানে এখন সাড়ে ৭ হাজারের মতো মানুষ আছেন। কারো পক্ষে এখন আর টেকনাফে যাওয়া সম্ভব না।'

তিনি বলেন, 'সেন্টমার্টিনে কোনো পর্যটক আটকা পড়েননি। সবাই টেকনাফে চলে গেছেন।'

সেন্টমার্টিনে থাকা সবাই আশ্রয়কেন্দ্রে গেছেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'কিছু মানুষ গেছেন। কিছু মানুষ যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন। আবার কিছু মানুষ বাড়ি বাড়ি গিয়ে সেন্টারে যাওয়ার জন্য বলছেন।'

যে আশ্রয়কেন্দ্রগুলো তৈরি করা হয়েছে সেগুলো কি নিরাপদ জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'যে হোটেলগুলো তালা দেওয়া আছে। আমরা সেগুলোর তালা ভেঙে নিজেরাই খুলে দিচ্ছি।'

এখন যে সাড়ে ৭ হাজারের মতো মানুষ আছেন তারা কি সবাই নিরাপদে আশ্রয় নিতে পারবেন, জানতে চাইলে খোকা বলেন, 'এখন সেন্টমার্টিনে যত মানুষ আছেন, সবার আশ্রয় নেওয়ার মতো জায়গা নেই। ২ থেকে ৩ তলা ভবন আছে এমন সব মিলে ৫ হাজারের মতো মানুষ আশ্রয় নিতে পারবেন।'

নৌবাহিনীর স্থাপনাগুলোতে কি আশ্রয়স্থল খোলা হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'তাদের আশ্রয়স্থলগুলোর খালি জায়গায় লোক নেওয়া হচ্ছে।'

গরু-ছাগল নিরাপদে রাখার মতো সেন্টার আছে কি না জানতে চাইলে এই পর্যটন ব্যবসায়ী বলেন, 'সব গরু-ছাগল ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তারা তাদের মতো আছে। সেন্টারে গরু-ছাগল রাখার মতো জায়গা নেই।'

আপনারা তো বিভিন্ন সময় ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলা করেছেন। আপনারা সাহসী মানুষ হিসেবে পরিচিত। এবারের আসন্ন ঝড় নিয়ে সেন্টমার্টিনবাসী কি স্বাভাবিক আছেন, না ভয়ে আছেন?

'আমাদের কাছে তো ঝড়-জলোচ্ছ্বাস নতুন কিছু না। তবে এবারের পরিস্থিতি আলাদা। অন্যদের কথা কী বলব! নিজের কথা বলি, এবারের মতো আগে কখনো আমি এতটা আতঙ্কিত হইনি। আমি নিজেই খুবই আতঙ্কের মধ্যে আছি, ভয় পাচ্ছি। উত্তাল সাগর দেখে ভয় না পাওয়ার কোনো কারণ নেই। আপনার সঙ্গে যখন কথা শুরু করেছি তখন সাগর মোটামুটি ছিল। ৫ মিনিটের মধ্যে সাগর ভয়ংকর হয়ে উঠেছে। চরম আতঙ্ক হচ্ছে, ভয় হচ্ছে।'

 

Comments