‘আটলান্টিক মহাসাগর পাড়ি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে না গেলে কিছু যায় আসে না’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা অন্যদের ওপর নির্ভরশীল হবো না, যারা আমাদের ভিসা দেবে না, যারা আমাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে...এটা ভেবে কোনো লাভ নেই।’
প্রধানমন্ত্রী
রাজধানীর তেজগাঁও এলাকায় ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় ভবন উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: পিআইডি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার বলেছেন, আটলান্টিক মহাসাগর পাড়ি দিয়ে ২০ ঘণ্টার বিমান ভ্রমণে কেউ যুক্তরাষ্ট্রে না গেলে তাতে কিছু যায় আসে না।

তিনি দৃঢ়ভাবে বলেন, 'পৃথিবীতে অন্যান্য মহাসাগর এবং অন্যান্য মহাদেশ রয়েছে, আমরা সেই মহাদেশগুলোর সঙ্গে অন্য মহাসাগর অতিক্রম করে বন্ধুত্ব করব। আমাদের অর্থনীতি আরও শক্তিশালী এবং আরও উন্নত এবং প্রাণবন্ত হবে।'

শনিবার রাজধানীর তেজগাঁও এলাকায় ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় ভবন উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ নিজের পায়ে চলবে, সরকার দেশ গড়বে।

তিনি বলেন, 'আমরা অন্যদের ওপর নির্ভরশীল হবো না, যারা আমাদের ভিসা দেবে না, যারা আমাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে...এটা ভেবে কোনো লাভ নেই।'

হাসিনা অবশ্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে 'ভোট কারচুপি' এবং 'জনগণের ভাগ্য নিয়ে খেলেছে' সেই বিএনপির দিকে তাকানোর পরামর্শ দিয়েছেন।

তিনি উল্লেখ করেন, কানাডার হাইকোর্ট বিএনপিকে 'সন্ত্রাসী দল' ঘোষণা করেছে।

তিনি বলেন, সন্ত্রাস ও দুর্নীতির জন্য তারেক জিয়াকে যুক্তরাষ্ট্র ভিসা দেয়নি।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রধান শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের জনগণের কল্যাণ ও সুবিধা কী তা তার দল ভালো করেই জানে।

তিনি বলেন, 'সেটা মাথায় রেখেই আমরা সব সময় কাজ করি এবং দেশকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদায় রাখি। ২০৪১ সালের মধ্যে দেশটি একটি উন্নত দেশ হবে। আমরা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ গঠন করেছি।'

তিনি বলেন, দেশের মানুষের প্রতি তার আস্থা ও বিশ্বাস রয়েছে।

তিনি বলেন, 'তারা জানে নৌকায় (আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতীক) ভোট দিলেই তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন হবে।

তিনি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আরও বলেন, জনগণের জন্য ত্যাগ স্বীকার করলে জনগণ আপনাদের প্রতিদান দেবে।

তিনি বলেন, 'আপনাদেরকে সেটা মনে রাখতে হবে। বাংলাদেশের জনগণের ভাগ্য নিয়ে কোনো অপশক্তি যেন ছিনিমিনি খেলতে না পারে সেজন্য সংগঠনকে শক্তিশালী করতে হবে। অশুভ শক্তির কবল থেকে দেশের মানুষকে বাঁচানো আমাদের দায়িত্ব।'

প্রধানমন্ত্রী বলেন, অগ্নিসংযোগ, গ্রেনেড হামলা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত বিএনপি গণতন্ত্রের বক্তব্য দেওয়ার সময় তিনি অনুতপ্ত হন।

২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট নিয়ে সমালোচনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকার বাজেট বাস্তবায়নে আত্মবিশ্বাসী হয়েছে।

তিনি বলেন, 'তারা তাদের একই পুরোনো গানগুলো পুনরাবৃত্তি করছে যা তারা সাধারণত প্রতিটি বাজেটের সময় উচ্চারণ করে।'

শেখ হাসিনা বলেন, সরকার বাংলাদেশে উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন করতে সক্ষম হয়েছে।

তিনি বলেন, ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে দেশের মানুষ আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়ে ক্ষমতায় এনেছিল, দেশে একটি স্থিতিশীল ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ বিরাজ করছে এবং এর ফলে এই অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক উন্নয়ন হয়েছে।

তিনি উল্লেখ করেন, স্থিতিশীলতা বজায় না থাকলে এবং আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না থাকলে দেশে 'এ ধরনের উন্নয়ন' সম্ভব হতো না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'এটাই বাস্তবতা, দেশের মানুষের জন্য কেউ কাজ করবে না।

এর আগে অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের ফলক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি অফিসের বিভিন্ন অংশও পরিদর্শন করেন।

প্রধানমন্ত্রীর ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের নবনির্মিত ভবন উদ্বোধন উপলক্ষে তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে তেজগাঁও কার্যালয় ভবন পর্যন্ত সড়কের দুপাশে দলীয় নেতাকর্মীদের মিছিল নিয়ে তাকে স্বাগত জানাতে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। আরও বক্তব্য দেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. এম এনামুর রহমান ও ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বেনজীর আহমেদ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক পনিরুজ্জামান তরুণ।

Comments

The Daily Star  | English

The cost-of-living crisis prolongs for wage workers

The cost-of-living crisis in Bangladesh appears to have caused more trouble for daily workers as their wage growth has been lower than the inflation rate for more than two years.

54m ago