‘কিছু কুলাঙ্গার আছে, যারা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কথা বলে, সর্বত্র মিথ্যাচার করে’

‘আগামী নির্বাচন একটি চ্যালেঞ্জ, কারণ বিভিন্ন মহলের ষড়যন্ত্র রয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার দলের নেতাকর্মীদের আগামী জাতীয় নির্বাচনের জন্য যথাযথ প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, বহুমুখী ষড়যন্ত্রের কারণে নির্বাচন একটি চ্যালেঞ্জ হবে।

তিনি আজ সোমবার গণভবনে আওয়ামী লীগ এবং এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে বলেন, 'আগামী নির্বাচন একটি চ্যালেঞ্জ, কারণ বিভিন্ন মহলের ষড়যন্ত্র রয়েছে।'

শেখ হাসিনা বলেন, যখনই দেশের মানুষের জীবনযাত্রার কিছুটা উন্নতি হয়, তখনই বাংলাদেশে কিছু কুলাঙ্গার আছে, যারা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কথা বলে এবং সর্বত্র মিথ্যাচার করে।

তিনি বলেন, কিছু মানুষ আন্তর্জাতিক অনুদান পাওয়ার জন্য বিদেশিদের সামনে বাংলাদেশ সম্পর্কে ভুল ধারণা তৈরি করে।

তিনি আরও বলেন, যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না, মুক্তিযুদ্ধের সময় লুণ্ঠন, ধর্ষণ ও দমন-পীড়নসহ গণহত্যা ও অন্যান্য অপরাধ করেছে এবং এখন তাদের প্রজন্ম নিরলসভাবে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে।

ভোট কারচুপি বিএনপির অভ্যাস উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভোট কারচুপি ও গণতন্ত্র ছিনতাইয়ের রেকর্ড তাদের আছে। 'তবে, আমরা এখন তাদের কাছ থেকে গণতন্ত্রের ছবক শুনছি।'

তিনি বলেন, 'এখন সামরিক স্বৈরশাসকের হাতে গঠিত দলের কাছ থেকে আমাদের গণতন্ত্রের ছবক শুনতে হয়। ভোট চুরি করা তাদের অভ্যাস। তাহলে চোরদের কাছ থেকে বাংলাদেশের মানুষ কী শিখবে?'

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী তার দলের নেতাকর্মীদের দলকে আরও শক্তিশালী করতে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, 'আমাদের দল যথেষ্ট শক্তিশালী। দল যেন আরও শক্তিশালী হয়, আমাদের সেই পদক্ষেপ নিতে হবে।'

বাংলাদেশের উন্নয়নের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৮ সালের সাধারণ নির্বাচনের পর তার দল টানা ১৪ বছর ক্ষমতায় থাকায় এবং দেশে স্থিতিশীল গণতান্ত্রিক পরিবেশ বজায় রাখায় এই উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে।

বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'আমরা বাংলাদেশকে বদলে দিতে চেয়েছিলাম। আজ আমরা সফলভাবে পরিবর্তন করতে পেরেছি।'

তিনি বলেন, 'আমাদের সবচেয়ে বড় অর্জন গ্রামীণ এলাকায় দারিদ্র্যের হার কমেছে। ঢাকা শহরে দারিদ্র্যের হার বেশি হলেও গ্রামাঞ্চলে কম। কেউ অতীতে এটি ভাবতে পারেনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার প্রতিটি ঘরে বিদ্যুৎ দেওয়ার অঙ্গীকার রক্ষা করেছে, কিন্তু ইউক্রেন যুদ্ধের পর বিশ্বব্যাপী পণ্যের দাম, পরিবহন খরচ, গ্যাস, জ্বালানি ও কয়লার দাম বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশকে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।

তিনি বলেন, বৈদেশিক ঋণের সুদের হার বাড়ানো হয়েছে, যা দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে।' তবে, এখনো ৫ মাসের জন্য খাদ্য সংগ্রহের জন্য যথেষ্ট রিজার্ভ মজুদ রয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

তিনি স্থানীয় চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি রপ্তানির জন্য কৃষি উৎপাদন বাড়াতে দেশের কোনো জমি অনাবাদি না রেখে সর্বত্র আবাদ করার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, সারা বিশ্বে এবং বাংলাদেশেও খাদ্যের দাম বেড়েছে। প্রকৃতপক্ষে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে জনগণের কষ্ট হচ্ছে। তবে, পণ্য পাওয়া যাচ্ছে (বাজারে) এবং কোনো জিনিসেরই অভাব নেই বলে উল্লেখ করেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশে এবারও ধান ও অন্যান্য ফসলের ফলন ভালো হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার সম্প্রতি ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার বৃহত্তম জাতীয় বাজেটের রেকর্ড করেছে। তিনি বলেন, অতীতে এত বড় বাজেট কেউ দিতে পারেনি এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল এই কঠিন সময়ে সরকার এত বড় বাজেট দিতে পেরেছে।

তিনি বলেন, বাজেটে বিভিন্ন সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় সুবিধাভোগীর সংখ্যা এবং ভাতার আকার উভয়ই বাড়ানো হয়েছে।

তিনি বলেন, এছাড়া সরকার একটি কার্ড সিস্টেমের ব্যবস্থা করেছে যাতে নিম্ন আয়ের লোকেরা তাদের ভোগান্তি লাঘব করতে ভর্তুকি মূল্যে চাল, ডাল এবং ভোজ্যতেলসহ কিছু প্রয়োজনীয় পণ্য ক্রয় করতে পারে।

Comments

The Daily Star  | English

288 Myanmar security personnel sent back from Bangladesh

Bangladesh this morning repatriated 288 members of Myanmar's security forces, who had crossed the border to flee the conflict between Myanmar's military junta and the Arakan Army

30m ago