কুড়িগ্রামে নদী ভাঙন

ব্রহ্মপুত্রে বিলীন বিদ্যালয়, অনিশ্চিত ৬ শতাধিক শিক্ষার্থীর লেখাপড়া

ব্রহ্মপুত্রের বিলিন বিদ্যালয়, অনিশ্চিত ৬ শতাধিক শিক্ষার্থীর লেখাপড়া
ব্রহ্মপুত্র নদের পেটে চলে গেছে স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভবন। ছবি: সংগৃহীত

নদী ভাঙনে ব্রহ্মপুত্রের উদরে চলে গেছে কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার নয়ারহাট ইউনিয়নের দক্ষিণ খাউরিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজ। এতে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে ৬ শতাধিক শিক্ষার্থীর পড়ালেখা।

এ ছাড়া নয়ারহাট ইউনিয়নে ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে একটি বাজারসহ শতাধিক বসতভিটা ও কয়েকশ একর আবাদি জমি। 

তবে ভাঙন ঠেকাতে পানি উন্নয়ন বোর্ড কোনো কার্যকরী ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। 

দক্ষিণ খাউরিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ জহিরুল ইসলাম মণ্ডল আজ সোমবার সকালে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির প্রায় ৭০ শতাংশ অংশ এখন ব্রহ্মপুত্রের উদরে। গত ৫ দিনের ভাঙনে প্রতিষ্ঠানটি নিশ্চিহ্ন  হতে চলেছে। এ কয়েক দিন ধরে পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। কবে নাগাদ আবার শুরু হবে সেটা এখনো নিশ্চিত করে পলা যাচ্ছে না।'

জহিরুল ইসলাম মণ্ডল দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, ২০২০ সালে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে বিদ্যালয় ভবনটি হস্তান্তর করা হয়। চিলমারী উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদ বেষ্টিত নয়ারহাট ও অষ্টমীরচর ইউনিয়নে এটি একমাত্র মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। 

বিদ্যালয়টিতে মাধ্যমিক পর্যায়ে ৫৫০ এবং উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে ১২০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি নদীভাঙনে বিলীন হওয়ায় ব্রহ্মপুত্র নদ দিয়ে বিচ্ছিন্ন দুটি ইউনিয়নের চরাঞ্চলের শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবন বিঘ্নিত হয়ে পড়েছে। ভাঙন ঠেকাতে আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ডকে একাধিকবার অনুরোধ জানিয়েছিলাম কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলেও জানান তিনি।

দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী মিলন ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি নদী ভাঙনে ব্রহ্মপুত্রের উদরে চলে যাওয়ায় তাদের পাঠদান বন্ধ রয়েছে। 

তিনি বলেন, 'আমরা বলতে পারছি না কবে থেকে আমরা পাঠগ্রহণের সুযোগ পাব।'

একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী সফিকুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, স্কুল অ্যান্ড কলেজটি তাদের এলাকায় উচ্চ শিক্ষার জন্য একমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এটি ব্রহ্মপুত্র নদের পেটে চলে যাওয়ায় তারা চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন। আবার কবে তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠবে এটা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

নয়ারহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙন যেভাবে শুরু হয়েছে, তাতে ইউনিয়নের কয়েক শ হেক্টর আবাদি জমিসহ শতাধিক বসতভিটা বিলীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। একমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি ব্রহ্মপুত্রে বিলীন হওয়ায় চরাঞ্চলের শিক্ষার্থীদের পড়াশুনা ব্যাহত হতে পারে।'

ভাঙন ঠেকাতে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে তাগাদা দিয়েও কোনো সুরাহা মিলছে না বলে ও জানান তিনি।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্ল্যাহ আল মামুন দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, তারা ভাঙনকবলিত স্থান পরিদর্শন করেছেন। সেখানে তীব্র ভাঙন দেখা দেওয়ায় বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন ঠেকানো সম্ভব নয়। স্থায়ীভাবে ভাঙন ঠেকাতে পরিকল্পনা গ্রহণের প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান তিনি।

চিলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহবুবুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'দক্ষিণ খাউরিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজটি রক্ষার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বিভিন্ন সময় জানানো হয়েছিল। ভবনটি বিলীন হলেও শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় যেন ব্যাহত না হয়, সেজন্য ২ কিলোমিটার অভ্যন্তরে স্কুল অ্যান্ড কলেজের কার্যক্রম শুরু করার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।'
 

Comments

The Daily Star  | English

Stay alert against conspiracies: Fakhrul

BNP Secretary General Mirza Fakhrul Islam Alamgir today urged all to stay alert, warning that conspiracies are underway to once again plunge Bangladesh into new dangers

38m ago