বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপরে তিস্তা, বাড়ছে ব্রহ্মপুত্র-ধরলার পানি

বিপৎসীমার ওপরে তিস্তা
তিস্তা ব্যারেজ। ছবি: স্টার ফাইল ফটো

উজানে ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল আর বৃষ্টির পানিতে তিস্তা বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে।

আজ সোমবার সকাল ৬টা থেকে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় তিস্তা ব্যারেজ পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমা ৫২.১৫ মিটার অতিক্রম করে ৫২.২০ মিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অর্থাৎ, তিস্তার পানি এখন বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এ ছাড়া, কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র, দুধকুমার ও ধরলা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে। তবে এসব নদীর পানি এখনো বিপৎসীমার নিচে আছে।

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ভারতের গজলডোবা ব্যারেজের সবগুলো গেট খুলে দেওয়ায় বাংলাদেশে তিস্তায় পানি হুহু করে বাড়ছে। উজান থেকে নেমে আসা পানির চাপ কমাতে তিস্তা ব্যারেজের ৪৪টি গেটের সবকটি খুলে দেওয়া হয়েছে।'

'তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় তিস্তাপাড়ে চর ও নিম্নাঞ্চলে পানি ঢুকতে শুরু করেছে।'

'তিস্তার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে' উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, 'তিস্তাপাড়ে যেকোনো সময় বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।'

হাতীবান্ধা উপজেলার সিন্দুর্ণা গ্রামের কৃষক নজরুল ইসলাম (৫৫) ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আজ ভোর থেকে বাড়িঘরে নদীর পানি ঢুকতে শুরু করেছে। তিস্তার পানি বাড়তে থাকায় চরের অনেক পরিবার তাদের ঘর সরিয়ে নিরাপদে নিয়ে যাচ্ছে।'

বিপৎসীমার ওপরে তিস্তা
লালমনিরহাট সদর উপজেলার বাগডোরা গ্রামে তিস্তার পানি। ১৮ জুন ২০২৩। ছবি: এস দিলীপ রায়/স্টার

হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী গ্রামের কৃষক দেলোয়ার হোসেন (৬০) ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গ্রামটি তিস্তা ব্যারেজের ভাটিতে হওয়ায় তিস্তার পানি বাড়লেই বন্যায় আক্রান্ত হতে হয়। আজ সকালে গ্রামে নদীর পানি ঢুকেছে। ঘরের ভেতর এখন তিস্তার পানি। নদীতে আরেকটু পানি বাড়লে আসবাবপত্র ও গবাদি পশু-পাখি নিয়ে নিরাপদস্থানে চলে যাবো।'

লালমনিরহাট সদর উপজেলার বাগডোরা গ্রামের কৃষক সাদেক আলী (৬৫) ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আজ সকাল থেকে ঘরের ভেতর নদীর পানি ঢুকতে শুরু করেছেন। সরকারি রাস্তার ওপর আশ্রয় নিয়েছি।'

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্ল্যাহ আল মামুন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, দুধকুমার, গঙ্গাধরসহ সব নদনদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে। এসব নদ-নদীর পানি এখনো বিপৎসীমার নিচে আছে। যেকোনো সময় তা বিপৎসীমা অতিক্রম করার আশঙ্কা করা হচ্ছে।'

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্ল্যাহ ডেইলি স্টারকে বলেন, 'তিস্তায় পানি বাড়ছে তবে তিস্তাপাড়ে এখনো বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তুতি আছে। সার্বক্ষণিক তিস্তাপাড়ের খোঁজখবর রাখা হচ্ছে।'

ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে মানুষজনকে নিরাপদে সরিয়ে আনার নির্দেশনা স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

Comments

The Daily Star  | English
NCP will not accept delay in Teesta master plan

Won’t accept any implementation delay: Nahid

National Citizen Party Convener Nahid Islam yesterday said his party would not accept any delay or political maneuver over implementing the Teesta master plan.

8h ago