সাধ্যের মধ্যে পছন্দের কোরবানির পশু মিলছে না

ছবি: স্টার

পাবনা শহরের পৈলানপুর এলাকার সুলতান আহমেদ প্রতি বছর নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী ছোট বা মাঝারি আকারের গরু কোরবানি করে থাকেন। সাধ্যের মধ্যে পছন্দ অনুযায়ী গরু না পাওয়ায় কোরবানি দেওয়া নিয়ে সংশয়ে পড়েছেন তিনি।

সুলতান জানান, এক সময় তিনি নিজেই পালন করে কোরবানি দিতেন। বয়সের কারণে এখন আর নিজে পালন করতে পারেন না। আড়াই থেকে ৩ মণ ওজনের একটি গরু কেনার জন্য মঙ্গলবার তিনি পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার আওতাপারা হাটে গিয়েছিলেন। সারাদিন ঘুরেও কাঙ্ক্ষিত পশু কিনতে পারেননি তিনি।

বিক্রেতারা আড়াই মণ ওজনের গরুর দাম হাঁকছেন প্রায় লাখ টাকা আর ৩ মণ ওজনের গরুর দাম চাওয়া হচ্ছে লক্ষাধিক।

তার মতো একই অবস্থা সাধারণ মধ্যবিত্ত ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত মানুষের। কলেজশিক্ষক নিহার আফরোজ জানান, সাধ্যের মধ্যে একটি পছন্দ মতো খাসি কেনার চেষ্টা করেছি কয়েকবার, সম্ভব হয়নি।

পাবনার একাধিক হাট ঘুরে দেখা গেছে, সারাদিন হাটে ঘুরেও সাধ্যের মধ্যে পছন্দ অনুযায়ী পশু কিনতে পারছেন না ক্রেতা। তাদের ভাষ্য, অন্যান্য বছরের তুলনায় দাম এবার অনেক বেশি। ফলে বাজেটের মধ্যে পশু মেলাতে পারছে না তারা।

কোরবানির পশুর হাট
ছবি: স্টার

পাবনার আটঘরিয়া এলাকার বাসিন্দা শাহী হোসেন বলেন, '১৫ হাজার টাকা ভাগ নির্ধারণ করে ৭ জন মিলে ১ লাখ টাকার মধ্যে ৩ থেকে সাড়ে ৩ মণ ওজনের একটি গরু কেনার জন্য কয়েকবার চেষ্টা করেও পারিনি। এখন শেষ মুহূর্তের অপেক্ষায় আছি।'

পাবনার ফরিদপুর উপজেলার গো-খামারি সাইফুল আলম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'উৎপাদন খরচ বেশি হওয়ায় এ বছর ছোট ও মাঝারি আকারের (৩ থেকে ৪ মণ) গরুর দাম বেশি। প্রতি মণ ৩০ হাজার উপরে বিক্রি হচ্ছে। তবে বড় গরুর (৫ মণের উপরে) ২৫ হাজার টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে।'

হাট ঘুরে দেখা গেছে, ছোট ও মাঝারি গরু প্রায় ৩৫ হাজার টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে। ক্রেতারাও জানান, বড় গরুর দাম স্বাভাবিক রয়েছে।

কোরবানির পশুর দাম বেড়ে যাওয়ায় এ বছর কাঙ্ক্ষিত বেচাকেনা নেই বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

পাবনার আওতাপারা হাটের ইজারাদারের প্রতিনিধি নাহিদুজ্জামান ফরিদ বলেন, 'প্রতি বছর ঈদের প্রায় ২-৩ সপ্তাহ আগে থেকেই বেচাকেনা বাড়ে। এবার গত ৩টি হাটে কাঙ্ক্ষিত বেচাকেনা ছিল না।'

মঙ্গলবার বিক্রি কিছুটা বেড়েছে বলে জানান তিনি। ফরিদ বলেন, 'ঈদের আরও কয়েক দিন বাকি রয়েছে। আশা করা যাচ্ছে, আগামী সপ্তাহে কোরবানির পশু বিক্রি আরও বাড়বে।'

পাবনা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আল মামুন হোসেন মণ্ডল ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এ বছর কোরবানির ঈদ উপলক্ষে পাবনায় প্রায় ১ দশমিক ৭৪ লাখ গরু, ৪ দশমিক ২৯ লাখ ছাগল-ভেড়া এবং ৫ হাজার ৯২৫টি মহিষ প্রস্তুত করা হয়েছে। পাবনায় কোরবানি উপলক্ষে প্রায় ৩ লাখ পশুর চাহিদা রয়েছে। চাহিদা পূরণের পরে বাকি পশুগুলো দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করা হচ্ছে।'

Comments

The Daily Star  | English

Bangladesh's exports stuck in EU, US orbit

Non-garment exports struggle with quality standards and logistics bottlenecks

13h ago