যমুনায় বিলীন আরও একটি বিদ্যালয়

ঈদের ছুটি শেষে অনিশ্চয়তায় পড়েছে বিদ্যালয়ের প্রায় দেড়শ শিক্ষার্থী। বিকল্প স্থানে স্কুল কার্যক্রম শুরুর চেষ্টা করছে কর্তৃপক্ষ।
অব্যাহত ভাঙনে যমুনায় বিলীন হয়েছে সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার খিদ্রচাপরি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ছবি: সংগৃহীত

বর্ষার শুরুতেই ভয়াবহ রূপ নিয়েছে যমুনা। পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে নদীভাঙন। অব্যাহত ভাঙনে যমুনায় বিলীন হয়েছে সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার খিদ্রচাপরি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

ঈদের ছুটি শেষে তাই অনিশ্চয়তায় পড়েছে বিদ্যালয়ের প্রায় দেড়শ শিক্ষার্থী। বিকল্প স্থানে স্কুল কার্যক্রম শুরুর চেষ্টা করছে কর্তৃপক্ষ।

বিদ্যালয়টির ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ফরিদ আহমেদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এ বছরের শুরু থেকেই নদীভাঙন শুরু হয়। ২০ জুন যখন স্কুল ছুটি হয়, তখনও স্কুলটি নদী থেকে প্রায় ৩০০ মিটার দূরে ছিল।'

তিনি জানান, বর্ষায় পানি বৃদ্ধির কারণে গত ২ সপ্তাহে নদীর পাড় ভাঙতে ভাঙতে ঈদের ২ দিন পর স্কুল ভবনের একাংশ নদীতে ভেঙে পড়ে।

আজ মঙ্গলবার পর্যন্ত স্কুলের প্রায় অর্ধেক নদীগর্ভে চলে গেছে বলে জানান তিনি।

ছুটির মধ্যে স্কুলের আসবাবপত্র ও একটি টিনের ঘর খুলে স্থানীয় একটি হাইস্কুলের পাশে ফাঁকা জায়গায় রাখা হয়েছে। সেখানেই অস্থায়ীভাবে ছুটির পর স্কুলের কার্যক্রম শুরু হবে বলে জানান ফরিদ আহমেদ।

বেলকুচি উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোস্তাফিজুর রহমান ডেইলি স্টারকে জানান, বেলকুচি উপজেলার মেহেরনগর থেকে এনায়েতপুর পর্যন্ত যমুনা নদীর তীর সংরক্ষণের কাজ শুরু হলেও বর্ষা আসায় কাজ বন্ধ রাখা হয়।

তিনি বলেন, 'ভাঙনে স্কুল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কার কথা আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানিয়েছি। কিন্তু পানি বেড়ে যাওয়ায় বালির বস্তা ফেলার কাজ বন্ধ রাখা হয়।'

সময়মতো প্রয়োজনীয় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা না নেওয়ায় স্কুলটি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

অব্যাহত ভাঙনে যমুনায় বিলীন হয়েছে সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার খিদ্রচাপরি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ছবি: সংগৃহীত

জানা গেছে, ঈদের আগে নিলামে স্কুলভবনটি বিক্রি করা হলেও ভাঙনের তীব্রতায় ঠিকাদার ভবনটি ভেঙে সরিয়ে নিতে পারেনি।

জানতে চাইলে সিরাজগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম মণ্ডল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ইতোমধ্যে ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত স্কুলের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত স্কুল পুনঃস্থাপন করতে বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে।'

বরাদ্দ পাওয়া গেলে স্কুল প্রতিস্থাপনের কাজ শুরু হবে বলে জানান তিনি।

আমিনুল ইসলাম আরও বলেন, 'সিরাজগঞ্জে নদী ভাঙনে ইতোমধ্যে বিভিন্ন এলাকায় অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে।'

ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় নদী সংরক্ষণে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তার।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মিলটন হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ইতোমধ্যে ওই এলাকায় নদী সংরক্ষণের কাজ শুরু করা হয়েছে। তবে বর্ষার কারণে এখন কাজ বন্ধ আছে। নদী সংরক্ষণের কাজ শেষ হলে এ এলাকায় নদী ভাঙন বন্ধ হবে।'

এদিকে, নদীগর্ভে স্কুল বিলীন হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত স্কুলের প্রায় ১৪০ শিক্ষার্থীর ছুটি পরবর্তী নিয়মিত শিক্ষা কার্যক্রম ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ফরিদ আহমেদ বলেন, 'অস্থায়ীভিত্তিতে স্কুলের কার্যক্রম শুরু করা হবে। তবে পুরোপুরি শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হতে সময় লাগবে।'

উল্লেখ্য, এর আগে ঈদের ছুটির মধ্যে টাঙ্গাইল ও সিরাজগঞ্জের সীমান্তবর্তী আরও একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় নদীগর্ভে বিলীন হয়।

Comments

The Daily Star  | English
Pro-Awami League journalist couple arrested

The indiscriminate arrests and murder charges

Reckless and unsubstantiated use of murder charges will only make a farce of the law, not bring justice to those who deserve it.

8h ago