স্কুলটি বাঁচলে বাঁচবে চরের ৫০০ পরিবারের আশা

যমুনা নদীর ভাঙনের মুখে পড়েছে বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার শিমুলতাইড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ১৯০৭ সালে প্রতিষ্ঠিত এই স্কুলে মূলত চরাঞ্চলের শিশুরা পড়ালেখা করে। স্কুলটি নদী গর্ভে বিলীন হলে প্রায় ৫০০ পরিবারের শিশুদের শিক্ষাজীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।
যমুনার ভাঙনের মুখে বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার শিমুলতাইড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ছবি: মোস্তফা সবুজ/স্টার

যমুনা নদীর ভাঙনের মুখে পড়েছে বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার শিমুলতাইড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ১৯০৭ সালে প্রতিষ্ঠিত এই স্কুলে মূলত চরাঞ্চলের শিশুরা পড়ালেখা করে। স্কুলটি নদী গর্ভে বিলীন হলে প্রায় ৫০০ পরিবারের শিশুদের শিক্ষাজীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।

শিমুলতাইড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আশপাশে ৪-৫ কিলোমিটারের মধ্যে কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নেই। নদীর প্রায় ৬ কিলোমিটার ভেতরে চরের ওপর স্কুলটির অবস্থান। উপজেলা সদরের দূরত্ব প্রায় ১৬ কিলোমিটার। ১৯৮৮ সাল থেকে স্কুলটি এই গ্রামে রয়েছে। ২০০৭-০৮ সালে ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে পাকা স্কুল ভবন নির্মাণ করা হয়।

স্থানীয় প্রশাসন এবং পানি উন্নয়ন বোর্ড স্কুলটি রক্ষার উদ্যোগ নিলেও বর্তমানে কাজ বন্ধ রেখেছে। সাধারণত চরের জনবসতি ভাঙনের মুখে পড়লে কেউ রক্ষা করতে আসে না। সরকারি স্কুলটি বাঁচাতে পানি উন্নয়ন বোর্ড এখানে কাজ করছে।

শিমুলতাইড় গ্রামের ভোলা শেখ বলেন, 'যোগাযোগ ব্যবস্থা অনুন্নত হওয়ায় চরের শিশুদের পড়ালেখার জন্য বাইরে যাওয়ার সুযোগ কম। তাই ভাঙনের হাত থেকে স্কুলটি বাঁচানো গেলে হাজারো শিশু শিক্ষার সুযোগ পেত।'

ইব্রাহিম আলী নামের আরেক বাসিন্দা বলেন, 'স্কুলটি অনেক পুরোনো। এই স্কুলে পড়ালেখা করে চরাঞ্চলের অনেক সুবিধাবঞ্চিত ছেলে-মেয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। স্কুলটি না থাকলে চরের শিশুরা পড়ালেখার সুযোগ পাবে না।'

সারিয়াকান্দি উপজেলার চালুয়াবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শওকত আলী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'শিমুলতাইড় গ্রাম ও এর আশপাশে ৫০০ পরিবার রয়েছে। স্কুল না থাকলে এই শিশুরা শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত হবে। এছাড়া, এখানে এখানে সরকারি আবাসন ও আধা কিলোমিটারের মধ্যে আশ্রয়ণের ২৫০টি ঘর রয়েছে। ভাঙন ঠেকানো না গেলে সব বিলীন হয়ে যাবে।'

জানতে চাইলে সারিয়াকান্দি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা গোলাম কবির বলেন, 'শুধু স্কুলটিই নয়, জনবসতি রক্ষা করতে শিক্ষা অফিস, উপজেলা প্রশাসন এবং পানি উন্নয়ন বোর্ড কাজ করছে। গত ৪ জুন জেলা প্রশাসক এই এলাকা পরিদর্শন করেছেন।'

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, স্কুলটি রক্ষায় জুনের শেষে ৪ হাজার ৮৪৭টি জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে। আরও জিও ব্যাগ প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তবে স্থানীয়রা বলছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের এই উদ্যোগ কোনো কাজে আসবে না যদি সিসি ব্লক ব্যবহার না করা হয়।

যোগাযোগ করা হলে বগুড়ার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমুল হক বলেন, 'আশপাশে ৫ কিলোমিটারের মধ্যে কোনো স্কুল নেই। সে কারণে আমরা স্কুলটি রক্ষার চেষ্টা করছি। এখানে স্কুল, বসতি, আশ্রয়ণ প্রকল্প রক্ষা করতে হলে প্রায় ৩০০ মিটার এলাকায় কাজ করতে হবে।'

সিসি ব্লক দিয়ে নদী ভাঙন রক্ষার ব্যাপারে জানতে চাইলে নাজমুল হক বলেন, 'নদীর দুই তীর ছাড়া সিসি ব্লক দিয়ে কাজ করা হয় না। নদীর চরে ভাঙন একটা স্বাভাবিক বিষয়।

Comments

The Daily Star  | English

The Daily Star-IPDC unsung women nation builders award-2023: Hats off to grassroots women trailblazers

Five grassroots women were honoured at the seventh edition of the Unsung Women Nation Builders Award-2023 yesterday evening for their resilience and dedication that empowered themselves and brought about meaningful changes in society.

36m ago