সরকারি গাড়ি ‘পুরোনো’, নিজের গাড়ি প্রকল্পের জন্য ভাড়া নেন পরিচালক

প্রকল্প পরিচালকের সরকারি টাকায় নিজ গাড়ি ব্যবহার
দেশীয় প্রজাতির মাছ এবং শামুক সংরক্ষণ ও উন্নয়ন প্রকল্প পরিচালক (পিডি) এস এম আশিকুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত

সরকারি বরাদ্দের গাড়ি পুরোনো ও ঝুঁকিপূর্ণ দাবি করে রেন্ট এ কার কোম্পানির কাছ থেকে একটি গাড়ি ভাড়া নিয়ে ব্যবহার করতেন মৎস্য অধিদপ্তরের এক প্রকল্প পরিচালক। গাড়িটির জন্য প্রতি মাসে ১ লাখের বেশি টাকা ভাড়া পেত ওই কোম্পানি।

ঢাকা মেট্রো ঘ-২২-১৪১৬ রেজিস্ট্রেশন নম্বরের নিসান এক্স-ট্রেল মডেলের গাড়িটি 'দেশীয় প্রজাতির মাছ এবং শামুক সংরক্ষণ ও উন্নয়ন প্রকল্পের' পরিচালক (পিডি) এস এম আশিকুর রহমানের। ঋণ করে গাড়িটি কেনার পর সেটি রেন্ট এ কার কোম্পানির কাছে ভাড়া দেন তিনি। পরে টেন্ডারের মাধ্যমে নিজের গাড়িটিই প্রকল্পের জন্য ভাড়া নেন তিনি।

অভিযোগ আছে যে, আশিকুর প্রভাব খাটিয়ে ওই রেন্ট এ কার কোম্পানিকে টেন্ডার পাইয়ে দিয়েছেন যাতে তার গাড়িটি প্রকল্পে ব্যবহার করা যেতে পারে। দ্য ডেইলি স্টারের পাওয়া নথি অনুযায়ী, চলতি বছরের মার্চ থেকে আগস্ট পর্যন্ত ওই রেন্ট এ কার কোম্পানি সরকারের কাছ থেকে গাড়িভাড়া বাবদ প্রতি মাসে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা ভাড়া পেয়েছে।

আশিকুর জানান, ওই রেন্ট এ কার কোম্পানি থেকে গাড়ির জন্য প্রতি মাসে ৫০ হাজার টাকা ভাড়া পান তিনি।

জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'যেহেতু মৎস্য অধিদপ্তর বরাদ্দ বাজেটের মধ্যে ভাড়া নেওয়ার জন্য উপযুক্ত গাড়ির ব্যবস্থা করতে পারেনি, তাই আমি সরল বিশ্বাসে গাড়িটি রেন্ট এ কার কোম্পানিকে দিয়েছি।'

অধিদপ্তরের দেওয়া গাড়ি কেন ব্যবহার করেন না জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'ওই গাড়িটি পুরোনো হওয়ায় ব্যবহার করা ঝুঁকিপূর্ণ। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছি। গাড়িটি পরে অন্য অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে।'

এদিকে কর্মচারী বিধিমালা ১৯৭৯ অনুযায়ী, কোনো কর্মচারী সরাসরি ব্যবসায়ে সম্পৃক্ত হওয়া আইনগত যেমন দণ্ডনীয় অপরাধ তেমনি পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন ২০০৮ ও বিধিমালা ২০১০ অনুসারে, কোনো ক্রয়কারী ব্যক্তিগত, ব্যবসায়িক বা সামাজিক প্রভাব খাটিয়ে কাজে দেওয়ার কোনো বিধান নেই।

বিধি অমান্য করে ব্যক্তিস্বার্থ হাসিলের কথা উল্লেখ করে মৎস্য অধিদপ্তরের কাছে প্রকল্প পরিচালক আশিকুর রহমানের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আশিকুর বলেন, বিধিমালা লঙ্ঘনের বিষয়ে তিনি জানতেন না।

গত ৩ সেপ্টেম্বর এ অভিযোগ তদন্ত করে এক সদস্যের কমিটিকে ৩ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

তদন্ত কর্মকর্তা মৎস্য অধিদপ্তরের উপ পরিচালক (অর্থ ও পরিকল্পনা) মো. শাহেদ আলী জানান, তিনি ইতোমধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। তবে তদন্তে কী পেয়েছেন তিনি তা জানাতে রাজি হননি।

মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কে এইচ মাহবুবুল হক জানান, তারা তদন্ত প্রতিবেদন পেয়েছেন। পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

Parties agree on chief justice appointment, limiting emergency powers

Manifesto provision allows top-two judge choice; cabinet to approve emergency declaration

30m ago