সমালোচনা করার আগে আইনটি পড়ুন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

মানবাধিকার ইস্যুতে বাংলাদেশ শিগগিরই ভালো খবর পাবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। ফাইল ছবি

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন সংসদে পাস হওয়া সাইবার নিরাপত্তা বিল-২০২৩ পড়ার পরামর্শ দিয়েছেন। কারণ সরকার মনে করে এই আইন নিয়ে যেসব উদ্বেগ ছিল, সেগুলোর সমাধান করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, 'আগে আইনটি পড়ুন।'

মোমেন প্রশ্নকর্তাকে জিজ্ঞাসা করেন, কেউ ইন্টারনেটে তার মা বা বোন সম্পর্কে খারাপ কিছু লিখলে তিনি কী করবেন?

তিনি বলেন, মানুষ আইনের সমালোচনা করলেও, কোনো সমস্যায় পড়লে সমাধানের জন্য এটিই ব্যবহার করে।

ব্রিফিংয়ে উপস্থিত পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেন, আগের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে কেন্দ্র করে সব উদ্বেগের সমাধান করা হয়েছে এবং নতুন সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্টে যথাযথভাবে স্থান দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, 'আমরা সত্যিই আশা করি সবাই এটাকে ভালোভাবে গ্রহণ করবে।'

প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের তুলনায় পশ্চিমা বিশ্বে অনেক কুখ্যাত আইন এবং জ্ঞানের অভাবে সঠিক তুলনা বাস্তবে দেখা যায় না।

তিনি আরও বলেন, 'দয়া করে তুলনা করে তারপর মন্তব্য করুন।'

চারটি ধারায় অপরাধকে জামিন অযোগ্য রেখে সংসদে বুধবার পাস করা হয়েছে সাইবার সিকিউরিটি বিল-২০২৩।

এটি বহুল আলোচিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের স্থলে  প্রতিস্থাপনের প্রস্তাব করা হয়েছে। যেখানে ১৪টি ধারার অধীনে অপরাধ জামিন অযোগ্য ছিল।

বিল অনুযায়ী, পুলিশ পরিদর্শক পদমর্যাদার কর্মকর্তারা কোনো পরোয়ানা ছাড়াই কাউকে তল্লাশি ও গ্রেপ্তারের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। তবে মিথ্যা মামলা হলে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য করে শাস্তিরও বিধান রাখা হয়েছে।

চারটি জামিন অযোগ্য অপরাধ হলো- কম্পিউটারের প্রধান তথ্য পরিকাঠামোতে অনুপ্রবেশ, কম্পিউটার সিস্টেমের ক্ষতি, সাইবার সন্ত্রাসী কার্যকলাপ এবং হ্যাকিং সম্পর্কিত অপরাধের সঙ্গে সম্পর্কিত।

ধারা-১৭ তে রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য অবকাঠামো ও অন্যান্য ক্ষেত্রে অনুপ্রবেশ সংক্রান্ত অপরাধের বিধান, ধারা-১৯ -এ রয়েছে কম্পিউটার ও কম্পিউটার সিস্টেমের ক্ষতি সাধনের বিষয়টি, ধারা-২৭ এ রয়েছে সাইবার সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও এ ধরনের অপরাধ সংঘটনের বিষয়টি এবং ধারা-৩৩ এ রয়েছে হ্যাকিং সম্পর্কিত অপরাধের বিষয়।

ইতোমধ্যে দায়ের করা মামলাগুলো বিদ্যমান আইন- ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অধীনে চলবে কারণ প্রস্তাবিত আইনে একটি বিধান যুক্ত করা হয়েছে।

বাংলাদেশের সংসদে নতুন সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট পাসের বিষয়টি উল্লেখ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

বৃহস্পতিবার মার্কিন দূতাবাস বলেছে, 'আমরা দুঃখিত যে নতুন আইনটি যাতে আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ হয় তা নিশ্চিত করার জন্য পর্যালোচনা ও ইনপুট দেওয়ার মতো পর্যাপ্ত সুযোগ বাংলাদেশ সরকার অংশীজনদের দেয়নি।'

দুর্ভাগ্যবশত তারা বলেছে, সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্টে তার পূর্বসূরি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অনেক ধারা থেকে যাচ্ছে।

নতুন আইনেও মত প্রকাশের স্বাধীনতায় বাধা রয়েছে, জামিন অযোগ্য অপরাধ রয়েছে এবং সমালোচকদের আটক, গ্রেপ্তার ও তাদের মুখ বন্ধ করার জন্য খুব সহজেই এই আইনের অপব্যবহার করা যেতে পারে।

প্রস্তাবিত রেজোলিউশন

ইউরোপীয় পার্লামেন্ট বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির অবনতির বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে একটি যৌথ নন-লেজিসলেটিভ রেজোলিউশন প্রস্তাব উত্থাপন করেছে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কোনো অপপ্রচার হলে সরকার চোখ বন্ধ করে বসে থাকতে পারে না।

তিনি বলেন, 'আমরা আশা করি কমন সেন্স প্রাধান্য পাবে।'

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন বলেন, যারা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করছেন তা তাদের ব্যাপার, কিন্তু বাংলাদেশ ইতিবাচক কাজের বিষয়ে মনোযোগ দিচ্ছে।

 

Comments

The Daily Star  | English
asif nazrul election statement

'We will leave in February'

'We're determined to hold the election in February,' says Asif Nazrul

5h ago