৫ বছর পর খুলনায় প্রধানমন্ত্রীর জনসভা ঘিরে উৎসবের আমেজ
দীর্ঘ ৫ বছরেরও বেশি সময় পর বড় কোনো আয়োজনে যোগ দিতে খুলনায় আসছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আগামী সোমবার তিনি খুলনা নগরের সার্কিট হাউজ মাঠে অনুষ্ঠিত জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন। এদিন তিনি ২৪টি উন্নয়ন প্রকল্পের কাজের উদ্বোধন করবেন।
এর আগে ২০১৮ সালের ৩ মার্চ খুলনা সার্কিট হাউজে অনুষ্ঠিত জনসভায় যোগ দিয়েছিলেন তিনি।
সোমবার দুপুর ১টা থেকে শুরু হবে জনসভা। প্রধানমন্ত্রী ভাষণ দেবেন বিকেল ৩টার দিকে। এতে সভাপতিত্ব করবেন খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সিটি মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক। বিশেষ অতিথি হিসেবে থাকবেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা জনসভায় বক্তব্য রাখেন।
জনসভায় ব্যাপক লোক সমাগমের পরিকল্পনা করছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ।
প্রধানমন্ত্রীর আগমণ উপলক্ষে ইতোমধ্যে খুলনা নগরী নতুনরূপে সেজে উঠেছে। নগরের সর্বত্র চলছে উৎসবের আমেজ। প্ল্যাকার্ড, পোস্টার, বিলবোর্ড, তোরণ ও আলোকসজ্জা করা হয়েছে পুরো নগরজুড়ে।
আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরাও বেশ উজ্জ্বীবিত। মহানগর ও জেলার বিভিন্ন উপজেলায় চলছে মাইকিং, স্বাগত জানিয়ে করা হচ্ছে মিছিল ও শোভাযাত্রা। জনসভাকে সফল করতে ইতোমধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে প্রশাসন ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ।
আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বলছেন, আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে এ সমাবেশ খুব গুরুত্বপূর্ণ। প্রধানমন্ত্রী আসায় বিভাগের ১০ জেলায় দলের তৃণমূল নেতাকর্মীরা আরও উজ্জীবিত হবেন। সমাবেশ সফল করতে দলটি সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
সমাবেশস্থলে পযাপ্ত সংখ্যক নারী ও পুরুষ স্বেচ্ছাসেবক রাখা হবে। থাকবে পর্যাপ্ত খাবার পানির ব্যবস্থাও। স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে রাখা হবে ৩টি মেডিকেল টিম। জনসভায় খুলনা ছাড়াও বিভাগের ১০ জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে নেতাকর্মীরা যোগ দেবেন। বিএনপির অবরোধ থাকলেও কোনো অসুবিধা হবে না বলে মনে করছেন তারা।
খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি তালুকদার আবদুল খালেক ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সমাবেশের দিন সার্কিট হাউস মাঠে থাকবেন নারী নেতাকর্মীরা। পুরুষ নেতাকর্মীরা থাকবেন মাঠের চারপাশের সড়কগুলোতে। মাঠ ছাড়াও নগরের কাস্টমস ঘাট থেকে শিববাড়ি মোড়, জেলখানা ঘাট, সদর থানার মোড়, হাদিস পার্ক ও হাজী মুহসীন রোডে মাইক দেওয়া হবে। শিববাড়ি মোড়সহ বেশ কয়েকটি স্থানে এলইডি মনিটরে দেখানো হবে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ।'
তিনি আরও জানান, বাগেরহাট, পিরোজপুর ও গোপালগঞ্জ থেকে যেসব পুরুষ নেতাকর্মী আসবেন তারা রূপসা ঘাটে নেমে ফেরিতে পার হবেন। এ জন্য রূপসা ঘাটে ৫টি ফেরি দেওয়া হচ্ছে। আর নারী কর্মীদের বহনকারী বাস নগরের নতুন বাজার পর্যন্ত আসবে। এ ছাড়া জেলখানা ঘাটে ৩-৪টি ফেরি দেওয়া হচ্ছে। চুয়াডাঙ্গা মেহেরপুর, কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহের নেতাকর্মীর জন্য ওই দিন সকালে একটি স্পেশাল ট্রেন থাকবে। সব মিলিয়ে জনসভাকে জনসমুদ্রে পরিণত করার সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
পদ্মা সেতু আর নৌকার আদলে মঞ্চ
নিচে নৌকা আর ওপরে পদ্মা সেতু এমন আদলেই তৈরি করা হচ্ছে মঞ্চ। ৯০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৪০ ফুট প্রস্থের মঞ্চটি তৈরি করা হচ্ছে সার্কিট হাউজের পশ্চিম পাশে আবাহনী ক্রীড়া চক্র ক্লাবের সামনে। তাতে অন্তত ৪০০ জন অতিথি বসতে পারবেন। মঞ্চের উচ্চতা সাড়ে ১৩ ফুট।
খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক মুন্সী মাহবুব আলম বলেন, 'মঞ্চ তৈরির কাজ প্রায় ৯৫ শতাংশ শেষ হয়ে গেছে। আগামীকালের মধ্যে পুরো মঞ্চ জনসভার জন্য প্রস্তুত হয়ে যাবে।'
খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমডিএ বাবুল রানা বলেন, 'নৌকা আমাদের দলীয় প্রতীক। এ কারণে মঞ্চের নিচের অংশ তৈরি করা হচ্ছে নৌকার আদলে। পদ্মা সেতুর কারণে সবচেয়ে বেশি উপকার হয়েছে খুলনা ও বরিশাল অঞ্চলের মানুষের। এ কারণে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতেই মঞ্চে পদ্মা সেতুর রেপ্লিকাও রাখা হচ্ছে।'
Comments