রাজবাড়ী

৩ পরিবারের ‘চলাচলের রাস্তা’য় প্রভাবশালীদের বেড়া

স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

রাজবাড়ী সদর উপজেলার ধুঞ্চি গ্রামে তিনটি পরিবারের চলাচলের রাস্তায় টিনের বেড়া দিয়ে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছে প্রভাবশালীরা।

ওই গ্রামের নেছারউদ্দিন খোকার সঙ্গে প্রভাবশালী আহসানউল্লাহ মুকুলের ৩১ শতাংশ জমি নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরে আজ শনিবার এ ঘটনা ঘটে।

দুপক্ষই দাবি করেছে জমিটি তাদের।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মূল রাস্তা থেকে প্রায় দেড়শ ফুট দূরে নেছারউদ্দিন খোকার বাড়ি। তার বাড়ি যেতে একটি সরু পথ ছিল। পথটি টিনের বেড়া দিয়ে আটকানো হয়েছে। পথটি আটকে দেওয়ার ফলে তিনটি পরিবারের চলাচলের রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে।

ভুক্তভোগী নেছারউদ্দিন খোকা বলেন, 'আমাদের পূর্ব পুরুষের আমল ধরলে প্রায় ২০০ বছর ধরে আমরা এখানে বসবাস করছি। ১৯৪১ সালে আমার বাবা মোট ৫৫ শতাংশ জমির মধ্যে ১২ শতাংশ বিক্রি করেন আহসানউল্লাহ মুকুলের পূর্ব পুরুষের কাছে। বাকি জমি আমাদের দখলে ছিল।'

তিনি বলেন, '২০০০ সালের দিকে আহসানউল্লাহ মুকুল দাবি করেন, আরও ৩১ শতাংশ জমি তাদের। পরে আদালতে মামলা করি। মামলাটি এখনও চলছে। এরই মধ্যে আজ সকালে আহসানউল্লাহ মুকুল লোকজন এনে আমাদের চলাচলের রাস্তায় বেড়া দিয়ে দিয়েছে, গাছগাছালি সব কেটে ফেলেছে।'

এখন তারাসহ মোট তিনটি পরিবারের সদস্যরা বাড়িতে বন্দী অবস্থায় রয়েছেন বলে জানান নেছারউদ্দিন।

নেছারউদ্দিন খোকার ছোট ভাই নেহাল আহমেদ বলেন, 'নিজেকে বড় অসহায় মনে হচ্ছে। বিষয়টি পুলিশ সুপারকে জানিয়েছি। এখনো কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।'

অভিযুক্ত আহসানউল্লাহ মুকুল বলেন, 'এই জমি ১৯৬১ সালে নেছারউদ্দিন খোকার বাবার কাছ থেকে কিনেছিলেন আমার বাবা। কিন্তু এটা তারা কিছুতেই মানতে চান না। আদালতে কয়েকটি মামলা করেছিলেন। তার সবগুলোর রায় আমাদের পক্ষে এসেছে। যে কারণে আজ আমরা জমির দখল নিয়েছি।'

মামলা চলমান থাকলে দখলে যাওয়া যায় কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'তারা তো একটা মামলা শেষ হতে না হতেই আবার একটা মামলা দেয়। এই জমি নিয়ে আমাদের মামলা করে অনেক টাকা শেষ হয়েছে। আদালত আমাদের পক্ষে রায় দিয়ে ওই জমিতে সাইনবোর্ড টানিয়ে দিয়েছেন। তাই আমরা দখলে গেছি।'

চলাচলের রাস্তায় টিনের বেড়া দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, 'ওদের বাড়ির পেছন দিয়ে রাস্তা আছে। সেখান দিয়ে চলাচল করতে পারবে।'

রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার জিএম আবুল কালাম আজাদ বলেন, 'এই জমিটি নিয়ে সমস্যা দীর্ঘদিনের বলে শুনেছি। আমি রাজবাড়ীতে যোগ দেওয়ার পর দুবার অভিযোগ পেয়েছি। দুবারই পুলিশ পাঠিয়ে মীমাংসা করেছি।'

তিনি বলেন, 'আজ অভিযোগ পাওয়ার পর আবারও পুলিশ পাঠিয়ে কাজ বন্ধ রাখার জন্য বলেছি। যেহেতু বিষয়টি নিয়ে আদালতে মামলা চলমান, তাই আমাদের তেমন কিছু করার থাকে না।'

পরিবারগুলো অবরুদ্ধ হওয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে রাজবাড়ী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইফতেখারুল আলম প্রধান বলেন, 'পরিবারগুলো অবরুদ্ধ হয়ে আছে, এ কথা সত্য নয়। তাদের বাড়ি থেকে বের হওয়ার অন্য রাস্তা আছে।'

তিনি বলেন, 'আজ আদালতের আদেশে জমির মালিক তাদের জমি বুঝে নিয়েছেন। সেখানে বাদী ও বিবাদী দুপক্ষের দুজন আমিন (জমি পরিমাপক) ছাড়াও রাজবাড়ী পৌরসভার একজন আমিন উপস্থিত থেকে তাদের জমি বুঝিয়ে দিয়েছে।'

Comments

The Daily Star  | English

Yunus meets Chinese ambassador to review China visit, outline next steps

Both sides expressed a shared commitment to transforming discussions into actionable projects across a range of sectors

7h ago