ঘনকুয়াশা, কনকনে ঠান্ডায় স্থবির লালমনিরহাট-কুড়িগ্রামের জনজীবন

কনকনে ঠান্ডা, সঙ্গে হিমেল বাতাসের দাপট
কনকনে ঠান্ডা, সঙ্গে হিমেল বাতাসের দাপটে জবুথবু হয়ে পড়েছে উত্তরের জেলা লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামের জনপদ। ছবি: এস দিলীপ রায়/স্টার

কনকনে ঠান্ডা, সঙ্গে হিমেল বাতাসের দাপটে জবুথবু হয়ে পড়েছে উত্তরের জেলা লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামের জনপদ।

নিদারুণ কষ্টে রয়েছেন ব্রহ্মপুত্র, দুধকুমার, তিস্তা ও ধরলা নদী তীরবর্তী, চরাঞ্চল ও খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষজন। কাজের সন্ধানে ঘরের বাইরে যেতে পারছেন না শ্রমজীবীরা। হিমালয়ের কাছে এই দুই জেলায় প্রয়োজনীয় শীতবস্ত্রের অভাবে দু:স্থ মানুষের ভরসা খড়কুঠোর আগুন। তাতেও ঠান্ডার প্রকোপ থেকে বাঁচতে পারছেন না শীতার্তরা।

কুড়িগ্রামের রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া পযর্বেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আজ মঙ্গলবার সকাল ৯টায় এ অঞ্চলে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে রাতের তাপমাত্রা আরও কম থাকে। চারদিক ঢেকে রয়েছে ঘন কুয়াশায়।'

লালমনিরহাটে শীতের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় ফুটপাতে পুরোনো শীতবস্ত্রের দোকানে ভিড় বেড়েছে। অল্প দামে শীতবস্ত্র কিনে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন ছিন্নমুল ও নিম্ন আয়ের মানুষ।

লালমনিরহাট সদর উপজেলার খোচাবাড়ি গ্রামের দিনমজুর মনসুর আলী (৫৫) বলেন, 'ঠান্ডা জেঁকে বসেছে এই সুযোগে দোকানিরাও এখন পুরোনো শীতবস্ত্রের বেশি দাম চাচ্ছেন।'

কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদেরবুকে চর শাখাহাতী এলাকার কৃষক আবসার আলী (৫০) বলেন, 'আমাদের ছয় জনের পরিবার। কম্বল আছে তিনটি। শীতের কাপড় কেনার সামর্থ্য নেই। ইউনিয়নের মেম্বার আর চেয়াম্যানের সাথে যোগাযোগ করেছিলাম। তারা এখনো কিছু জানাননি। ঠান্ডার কারণে কাজকর্ম করতে পারছি না।'

শীতবস্ত্র বিতরণের বিষয়ে জানতে চাইলে চিলমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম বলেন, 'আমার ইউনিয়নে ৩ হাজারের বেশি কম্বলের চাহিদা রয়েছে। কিন্তু আমরা পেয়েছি মাত্র ১৫০টি কম্বল। ইতোমধ্যেই এগুলো শীতার্ত, দু:স্থদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। প্রতিদিনই দু:স্থরা আমার কাছে আসছেন কম্বলের জন্য। চরাঞ্চলে অধিকাংশ শীতার্ত মানুষের কম্বল কেনার সামর্থ্য না থাকায় তারা সরকারি ও বেসরকারি ত্রাণের দিকে চেয়ে থাকেন।'

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন অফিস সূত্রে জানা গেছে, লালমনিরহাটে ৫ উপজেলায় শীতার্ত দু:স্থদের জন্য সরকারিভাবে ১৯ হাজার ২৭০টি ও কুড়িগ্রামের ৯ উপজেলার শীতার্ত দু:স্থদের জন্য ৪৫ হাজার কম্বল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

সরকারিভাবে বরাদ্দকৃত কম্বল দু:স্থদের মাঝে বিতরণ করা হচ্ছে।

কুড়িগ্রাম জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুল হাই সরকার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ইউনিয়নগুলো থেকে নিয়মিত কম্বলের চাহিদা পাওয়া যাচ্ছে। সরকারিভাবে বরাদ্দকৃত কম্বল বিতরণ চলছে। আরও এক লাখ কম্বল চেয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখনো কোনো সাড়া মেলেনি।'

চাহিদা অনুযায়ী কম্বল বরাদ্দ পেলে শীতার্তদের চাহিদা মেটানো যাবে বলে জানান তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

Chattogram’s garment factories fear fallout from US tariffs

Owners of Chattogram-based readymade garment factories, many of which do business with buyers in the United States, are worried about a US tariff hike to 35 percent set to take effect on August 1.

13h ago