‘পুলিশ কোনো ঝামেলা করছে না’- রামদা নিয়ে মিছিল করা সেই যুবলীগ নেতা

গত শুক্রবার সিংড়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় সিংড়া পৌর যুবলীগের সভাপতি লাবু হাসান জনির নেতৃত্বে মিছিল বের হয়
গত শুক্রবার নাটোরের সিংড়ায় রামদা হাতে যুবলীগ নেতাকর্মীদের মিছিল। ইনসেটে মিছিলের নেতৃত্ব দেওয়া সিংড়া পৌর যুবলীগের সভাপতি লাবু হাসান জনি। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

নাটোরের সিংড়ায় প্রকাশ্যে রামদা নিয়ে মিছিল করা যুবলীগ নেতাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। উল্টো মিছিলে নেতৃত্ব দেওয়া সেই যুবলীগ নেতার দাবি 'পুলিশের দিক থেকে আমাদের কোনো সমস্যা করা হচ্ছে না'।

সিংড়া পৌর যুবলীগের সভাপতি লাবু হাসান জনি বলেন, 'পুলিশ আমাদের অনেক সহযোগিতা করেছে। পুলিশের দিক থেকে কোনো ঝামেলা নাই।'

গত শুক্রবার দুপুরে সিংড়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় সিংড়া পৌর যুবলীগের সভাপতি লাবু হাসান জনির নেতৃত্বে মিছিল বের হয়। ঘটনার কিছুক্ষণ পর পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে তারা চলে যায়।

ঘটনার পর অস্ত্র নিয়ে মিছিলের কিছু ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। অন্তত অর্ধশতাধিক বিক্ষোভকারীকে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে নাটোর-বগুড়া মহাসড়কে অনুশীলন করতে দেখা যায়। এসময় চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা যায় তাদের।

সিংড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং সিংড়া পৌরসভার মেয়র মো. জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, 'সিএনজি চালকদের সঙ্গে কথা বলে চাঁদাবাজি বন্ধ করার জন্য সব চালকদের সঙ্গে মিটিং করা হয়েছে। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়েছে চালকরা পালাক্রমে নিজেরা মাস্টার হিসেবে কাজ করবে। যেদিন যে দায়িত্বে থাকবে তখন সে ৫-১০ টাকা হারে চাঁদা আদায় করবে। এই টাকা অন্য কেউ নিতে পারবে না। আর সমিতির যে অফিস সেটা সড়ক ও জনপথের জায়গা। সড়ক বিভাগ সেটা ভেঙে দেবে।'

সিংড়া পৌর যুবলীগের সভাপতি লাবু হাসান জনি বলেন, 'বর্তমানে কোনো সমস্যা নাই। চালকরা অফিসে তালা লাগিয়ে দিয়েছিল পরে তা খুলে দিয়েছে। পুলিশের দিক থেকে আমাদের কোনো ঝামেলা করা হচ্ছে না।'

অভিযোগ নিয়ে জানতে চাইলে পুলিশের উপপরিদর্শক মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, 'গত শুক্রবারের ঘটনার পর তিনি সেখানে যাননি। তবে নির্বাচনের পরপরই আরও একবার সিএনজি স্ট্যান্ডে বিশৃঙ্খলা হয়। তিনি তিনি সেখানে গিয়ে জানতে পারেন মালিক সমিতি বাড়তি টাকা আদায় করছে। কিন্তু সেসব টাকা কোন খাতে খরচ হচ্ছে তার কোন হিসাব দিতে পারেনি। তখন আমি বলেছিলাম লাবু সাহেবের বক্তব্য ঠিক আছে, তাদের দাবি যৌক্তিক।'

সিএনজি মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রঞ্জু আহমেদ বলেন, 'হামলাকারীদের ভয়ে আমি এখনও পালিয়ে বেড়াচ্ছি। হামলাকারীরা সমিতির অফিসে তালা লাগিয়ে গেছে। তারা অনেক প্রভাবশালী। এত বড় ঘটনার পর পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। কোন ভরসায় আমরা মামলা করব। মামলা করে আরও বড় বিপদে পড়তে হবে।'

এ নিয়ে জানতে চাইলে সিংড়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মো. আকতারুজ্জামান বলেন, যারা মিছিল করেছিল তারা কোন সংগঠনের নেতা এবং তাদের বাড়িঘর কোথায় এসব বিষয় নিয়ে পুলিশ কাজ করছে। যারা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মিছিল করেছে তারা অবশ্যই অপরাধ করেছে। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে কেউ মামলা করেনি।

মামলা না হলে কি ব্যবস্থা হবে না? এমন প্রশ্নে জবাবে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, 'যেহেতু মিছিলকারীরা অপরাধ করেছে মামলা না হলেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

Comments