ড. ইউনূসের বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে হাইকোর্টে কারখানা অধিদপ্তরের আবেদন

ড. ইউনূস
অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: স্টার

শ্রম আইন লঙ্ঘন মামলায় নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং গ্রামীণ টেলিকমের তিন শীর্ষ কর্মকর্তার ছয় মাসের কারাদণ্ডের রায় স্থগিতের আপিল ট্রাইব্যুনালের আদেশ চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিভিশন আবেদন দায়ের করেছে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা অধিদপ্তরের পরিদর্শক তরিকুল ইসলাম আইনজীবী খুরশীদ আলম খানের মাধ্যমে হাইকোর্টে আজ রোববার এ আবেদন জমা দেন।

আবেদনে আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ড. ইউনূসসহ  চারজনকে সংশ্লিষ্ট আদালতের অনুমতি ছাড়া বিদেশে যেতে নিষেধাজ্ঞার আদেশ চাওয়া হয়েছে।

অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আবেদনের বরাতে তিনি বলেন, 'ফৌজদারি কার্যবিধিতে বিচারিক আদালতের দেওয়া সাজা আপিল আদালত স্থগিত করতে পারে না। আপিল আদালত শুধু জরিমানার আদেশ স্থগিত করতে পারে।'

বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদারের নেতৃত্বে হাইকোর্ট বেঞ্চ আগামীকাল রিভিশন আবেদনের শুনানি করতে পারেন বলে জানান তিনি।

এদিকে ড. ইউনূসের আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'অধ্যাপক ইউনূসসহ চারজনকে হয়রানির জন্য রিভিশন পিটিশন দায়ের করা হয়েছে।'

তিনি বলেন, 'অধ্যাপক ইউনূস আন্তর্জাতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। বিভিন্ন সেমিনারে যোগ দিতে তিনি বিদেশে যাবেন, দেশের জন্য মর্যাদা বয়ে আনবেন।'

'তাকে বিদেশ যেতে বাধা দিলে দেশের সম্মান ক্ষুণ্ণ হবে,' যোগ করেন তিনি।

এই আইনজীবী আরও বলেন, 'ড. মুহাম্মদ ইউনূস আন্তর্জাতিক সেমিনারে কী বক্তৃতা দেবেন, তার সঙ্গে কল-কারখানা অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্টতা নেই। সংস্থাটি শ্রমিকদের সুযোগ-সুবিধা নিয়ে কাজ করে। এ ধরনের পিটিশন সাধারণত রাজনৈতিক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে এবং রাষ্ট্রদ্রোহের মামলার ক্ষেত্রে করা হয়।'

'সুতরাং, অধিদপ্তরের রিভিশন পিটিশন শ্রম আইন লঙ্ঘন করে করা হয়েছে,' যোগ করেন আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন।

শ্রম আইন লঙ্ঘন মামলায় গত ১ জানুয়ারি শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও গ্রামীণ টেলিকমের পরিচালক আশরাফুল হাসান, নুরজাহান বেগম ও এম শাহজাহানকে ৬ মাস করে কারাদণ্ড দেন ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালত।

কারাদণ্ড ছাড়াও চারজনকেই ৩০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও ২৫ দিন কারাদণ্ড দেন আদালত এবং তাদের এক মাসের মধ্যে শ্রম আইন-২০০৬ এর প্রাসঙ্গিক ধারাগুলো মেনে চলার নির্দেশ দেন।

রায়ের পরপরই পৃথক জামিন আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত চারজনকে এক মাসের জন্য জামিন দেন।

রায়ের বিরুদ্ধে তাদের আপিলের পরিপ্রেক্ষিতে ২৮ জানুয়ারি শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল জামিন মঞ্জুর করেন এবং কারাদণ্ডের রায় ৩ মার্চ পর্যন্ত স্থগিত করেন।

২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে মামলাটি করেন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন বিভাগের শ্রম পরিদর্শক (সাধারণ) এসএম আরিফুজ্জামান।

মামলার নথি অনুসারে, আইএফইডি কর্মকর্তারা ২০২১ সালের ১৬ আগস্ট ঢাকার মিরপুরে গ্রামীণ টেলিকমের অফিস পরিদর্শন করে শ্রম আইনের বেশকিছু লঙ্ঘন খুঁজে পান।

সেই বছরের ১৯ আগস্ট গ্রামীণ টেলিকম কর্তৃপক্ষকে চিঠি পাঠিয়ে বলা হয়, প্রতিষ্ঠানটির ৬৭ কর্মচারীকে স্থায়ী করার কথা ছিল, কিন্তু তা করা হয়নি।

এ ছাড়া, কর্মচারীদের পার্টিসিপেশন ও কল্যাণ তহবিল এখনো গঠন করা হয়নি এবং কোম্পানির যে লভ্যাংশ শ্রমিকদের দেওয়ার কথা ছিল তার পাঁচ শতাংশও পরিশোধ করা হয়নি।

 

Comments

The Daily Star  | English

Please don't resign: An appeal to Prof Yunus

A captain cannot abandon ship, especially when the sea is turbulent

9h ago