‘ভারত পাশে ছিল বলে নির্বাচনে শক্তিধর দেশগুলো অশুভ খেলার সাহস পায়নি’

ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির প্রাঙ্গণে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে বক্তব্য দেন ওবায়দুল কাদের। ছবি: বাসস

ভারত বাংলাদেশের পাশে ছিল বলেই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে অন্য কোনো শক্তিশালী দেশ অশুভ খেলার সাহস পায়নি বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেন, 'অন্য শক্তিধর দেশগুলোর মতো ভারত আমাদের নির্বাচন নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করেনি। তারা বলেছে, বাংলাদেশের নির্বাচন বাংলাদেশ করবে। ভারত পাশে ছিল বলে অনেক শক্তিধর দেশও আমাদের নির্বাচন নিয়ে অশুভ খেলা খেলতে পারেনি।'

সেতুমন্ত্রী আজ শনিবার রাজধানীর ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির প্রাঙ্গণে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে এই মন্তব্য করেন।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ভারতের সঙ্গে গায়ে পড়ে তিক্ততার সম্পর্ক তৈরি করে সমস্যার সমাধান সম্ভব না। ভারতের সঙ্গে যে অবিশ্বাসের দেয়াল তৈরি হয়েছিল শেখ হাসিনা ও মোদি সরকার তা ভেঙে দিয়েছে।

তিনি বলেন, যখন কথা বলি তখন বিশ্বাস থেকেই বলি। বাংলাদেশে '৭৫ থেকে একুশ বছর কারা শাসন করেছিল? সেই একুশ বছর প্রতিবেশী দেশ ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কে বৈরিতা সৃষ্টি করেছিল।

সেতুমন্ত্রী বলেন, ২১ বছর যারা শাসন করেছিল, এই সময়ে তারা ভারতের সঙ্গে বৈরিতা তৈরি করেছে। যেগুলো দ্বিপক্ষীয় শান্তিপূর্ণভাবে আলোচনা করে সমাধান করা যায়, সেগুলোও তারা করেনি। শেখ হাসিনার সময় সীমান্তসহ নানা সমস্যা আলোচনা করে সমাধান করা হয়েছে। মোদি আর হাসিনার সম্পর্কের অনেক সন্দেহের দেয়াল ভেঙে দিয়েছেন। তিস্তা চুক্তিরও ইতিবাচক অগ্রগতি হয়েছে, ধৈর্য ধরতে হবে সমাধান হবে। তিক্ততার সৃষ্টি করে এইসব সমস্যা সমাধান সম্ভব নয়।

২০০১ সালে বিএনপি-জাময়াতের সহিংসতার কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, অন্য দল ক্ষমতায় এলে হিন্দুদের মা-বোনেরা ইজ্জত নিয়ে থাকতে পারে না। ২০০১ সালের পর মনে হয়েছিল ১৯৭১ সাল। সাম্প্রদায়িক দৃষ্টি থেকে তারা এসব করেছে। তারা ভেবেছিল হিন্দুরা আওয়ামী লীগের ভোটার। তাই তাদের দেশছাড়া করার চেষ্টা করেছে। যতো দিন এই সরকার আছে ততো দিন মাইনরটির পাশে আছে, থাকবে। যারা স্বাধীনতাবিরোধী তাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া দরকার।

এর আগে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মা।

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি জে এল ভৌমিকের সভাপতিত্বে দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক ড. চন্দ্রনাথ পোদ্দার।

সনাতন ধর্মের মানুষের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, মাইনরিটি ভাবনাটাই দাসত্বেও দোসর, এটাকে ভেঙে ফেলতে হবে। নিজেদের মাইনরিটি কেন ভাববেন! এদেশের ইতিহাস, অর্জন সব বাঙালির অবদান। কিছু লোক তাদের রাজনৈতিক পরিচয়ে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের জায়গা মন্দিরের জায়গা দখল করে কষ্ট দেয়। এরা যদিও রাজনৈতিক পরিচয়ে থাকে, আসলে এরা দুর্বৃত্ত। এই দুর্বৃত্তরা আমাদের অভিন্ন শত্রু। এদের প্রতিরোধ করতে হবে, কোনো বিকল্প নেই।

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি সম্পর্কে তিনি বলেন, সরকার সিন্ডিকেট সমর্থন করে না। যে বা যারাই এই সিন্ডিকেট করুক কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না। নিত্য পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি যন্ত্রণা শেখ হাসিনা অনুভব করেন। তার ওপর আস্থা রাখুন।

ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মা বলেন, ১৯৭১ সালের বন্ধনে বাংলাদেশ এবং ভারতের বন্ধুত্বের যে সম্পর্ক তা আগামী দিনে আরও সমৃদ্ধ হবে। চার প্রজন্ম ধরে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে রাজনৈতিক, সামাজিক, বাণিজ্য, শিল্প, সাহিত্যের যে বন্ধুত্বপূর্ণ বিনিময়- তা আরও জোরদার হবে।

Comments

The Daily Star  | English

Exporters fear losses as India slaps new restrictions

Bangladesh’s exporters fear losses as India has barred the import of several products—including some jute items—through land ports, threatening crucial trade flows and millions of dollars in earnings.

5h ago