৪১.৬ শতাংশ তরুণীর বিয়ে হয়েছে ১৮ বছরের আগেই

বাংলাদেশের অন্তত ৪১ দশমিক ছয় শতাংশ তরুণীর বিয়ে ১৮ বছর বয়স হওয়ার আগেই হয়েছে বলে সাম্প্রতিক এক সরকারি গবেষণায় দেখা গেছে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) পরিচালিত 'বাংলাদেশ স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকস-২০২৩ (বিএসভিএস-২০২৩)' শীর্ষক জরিপে দেখা গেছে, গত তিন বছরে দেশে বাল্যবিয়ের প্রবণতা বেড়েছে।

২০২২ সালে পরিচালিত জরিপে দেখা গেছে, অন্তত ৪০ দশমিক নয় শতাংশ নারীর বিয়ে ১৮ বছর বয়সের আগেই হয়েছে। ২০২১ সালে এ সংখ্যা ছিল ৩২ দশমিক চার শতাংশ এবং ২০২০ সালে ছিল ৩১ দশমিক তিন শতাংশ।

বিএসভিএস-২০২৩ এ আরও দেখা গেছে, আট দশমিক দুই শতাংশের বিয়ে হয়েছে ১৫ বছর বয়সের আগেই। আগের বছর এই সংখ্যা ছিল ছয় দশমিক পাঁচ শতাংশ।

সমীক্ষাটি সারা দেশে তিন লাখ আট হাজারেরও বেশি পরিবার ও বিবাহিত নারীদের ওপর করা হয়, যাদের এখন ২০ থেকে ২৪ বছরের মধ্যে।

এতে দেখা গেছে, গ্রামাঞ্চলে বাল্যবিবাহের প্রবণতা বেশি। সেখানে ৪৪ দশমিক চার শতাংশ নারীর বিয়ে হয় ১৮ বছর বয়সের আগে।

বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন ২০১৭ অনুযায়ী মেয়েদের বিয়ের বয়স ১৮ বছর।

তবে জাতীয় জনসংখ্যা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (নিপোর্ট) পরিচালিত বাংলাদেশ ডেমোগ্রাফিক অ্যান্ড হেলথ সার্ভে (ডিবিএইচএস) ২০২২-এর তথ্যের সঙ্গে বিবিএসের জরিপের যথেষ্ট পার্থক্য রয়েছে।

নিপোর্টের জরিপে দেখা গেছে, ৫১ শতাংশ মেয়ের বিয়ে হয়ে যায় ১৮ বছর বয়স হওয়ার আগেই।

গত বছরের মে মাসে প্রকাশিত ইউনিসেফের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বাল্যবিয়ের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান দক্ষিণ এশিয়ায় শীর্ষে এবং বিশ্বে অষ্টমে।

বিএসভিএস-২০২৩ অনুসারে, ১৫ থেকে ১৯ বছর বয়সী মেয়েদের সন্তান জন্মদানের হার ৭৩ শতাংশ। আগের বছরের জরিপে এ সংখ্যা ছিল ৭০ শতাংশে।

জরিপে দেখা গেছে, দেশের মোট অন্তঃসত্ত্বা নারীদের মধ্যে ২৫ শতাংশেরই বয়স ১৫ থেকে ১৯ বছর।

বিষয়টি নিয়ে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের স্ত্রীরোগ ও প্রসূতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রওনক জাহান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা প্রায়ই দেখি ১৬ বছরের কম বয়সী মেয়েরা দ্বিতীয়বারের মতো গর্ভধারণ করে আমাদের কাছে আসে।'

'আমরা যখন জিজ্ঞাসা করি কেন তারা গর্ভধারণ করেছে, তখন অনেকে বলে যে বাচ্চা হলে তাদের বিয়ে সুরক্ষিত হয় বা শ্বশুরবাড়ির সঙ্গে তাদের সম্পর্ক দৃঢ় হয়', বলেন তিনি।

রওনক জাহানের ভাষ্য, এই বয়সে গর্ভধারণ মেয়েদের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।

মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম ডেইলি স্টারকে বলেন, বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনের যথাযথ প্রয়োগ ও এই সংক্রান্ত কমিটিগুলোকে কার্যকর করতে হবে।

সচেতনতার ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, 'মেয়েদের প্রতি আমাদের সামাজিক ধারণার পরিবর্তন করতে হবে। অল্প বয়সে মেয়েদের বিয়ে দেওয়ার পরিবর্তে আমাদের উচিত মেয়েদের শিক্ষার পক্ষে পরামর্শ দেওয়া এবং একটি মেয়েকে শিক্ষিত করার সুবিধাগুলো তাদের বাবা-মাকে বোঝানো।'

সংক্ষেপিত: ইংরেজিতে পুরো প্রতিবেদন পড়তে ক্লিক করুন An alarming upswing in child marriage

Comments

The Daily Star  | English
US attack on Iran nuclear sites

Iran denounces US attack as ‘outrageous’

Iran says 'no signs of contamination' after US attacks on key nuclear sites

11h ago