ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক

ডাকাত-ছিনতাইকারীরা সক্রিয়, ঈদযাত্রায় নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা

ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক। ফাইল ফটো

ঈদ উপলক্ষে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে ব্যস্ততা বেড়েছে। একইসঙ্গে সক্রিয় হয়েছে ডাকাত, ছিনতাইকারীসহ বিভিন্ন দুর্বৃত্তচক্র। ইতোমধ্যে গত কয়েকদিনে কয়েকটি ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনার পর মহাসড়কে যান-মালের নিরাপত্তা নিয়ে আশঙ্কা বাড়ছে।

গাজীপুরের চন্দ্রা থেকে এলেঙ্গা পর্যন্ত মহাসড়কের টাঙ্গাইল অংশ। সাধারণত মির্জাপুর অংশে বেশি অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে। অন্যদিকে, সিরাজগঞ্জের হটিকুমরুল ও কড্ডা থেকেও ডাকাতদলের বাসে ওঠার ঘটনা ঘটেছে।

শুক্রবার রাতে মহেড়া এলাকা থেকে র‌্যাব পরিচয়ে এক ব্যবসায়ীকে একটি মাইক্রোবাসে তুলে নেয় দুর্বৃত্তরা। পরে পরিবারের কাছে মুক্তিপণ হিসেবে মোটা অংকের টাকা দাবি করে। তাদের মধ্যে দুজনকে আটক করেছে পুলিশ। এছাড়া নকল পিস্তল, ওয়াকিটকি ও মাইক্রোবাস জব্দ করা হয়েছে।

এর আগে, গত মঙ্গলবার রাতে যাত্রী ছদ্মবেশে একদল ডাকাত বাইপাইল ও সাভার এলাকা থেকে ঢাকা টু রাজশাহীগামী একটি যাত্রীবাহী বাসে ওঠে।

পরে তারা চালকের কাছ থেকে গাড়ির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে এলেঙ্গা থেকে গাড়ি ঘুরিয়ে আবার ঢাকার পথে নিয়ে যায়। মির্জাপুরের কাছে এসে তারা যাত্রীদের নগদ অর্থ, স্বর্ণালঙ্কারসহ মূল্যবান মালামাল লুটে করে।

এসময় বাঁধা দিলে ডাকাতদের ছুরিকাঘাতে আহত হন এক নৌ-পুলিশ সদস্যসহ বাসের পাঁচ যাত্রী। এ ব্যাপারে বাসের চালক মির্জাপুর থানায় একটি মামলা করলেও পুলিশ এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।

এর আগে, গত ২৪ মার্চ মহাসড়কের ধেরুয়াতে পিকআপ থামিয়ে ড্রাইভারের কাছ থেকে নগদ টাকা ছিনিয়ে নেয় পুলিশের দুই সদস্য। পরে জনগণ তাদের ধরে নিয়ে থানায় সোপর্দ করলে জানা যায়, তারা মানিকগঞ্জ জেলার দৌলতপুর থানায় কর্মরত দুই পুলিশ কনস্টেবল। পরে তাদের আদালতের মাধ্যমে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করে কারণ পাঠানো হয়।

এ ঘটনার মাত্র এক সপ্তাহ আগে, মির্জাপুর এলাকায় ডাকাতদলের ছুরিকাঘাতে প্রাণ হারায় এক ট্রাকচালক। এতে গুরুতর আহত হয় তার সহযোগী।

আইন শৃঙ্খলা বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে এক ডজনেরও বেশি সংঘবদ্ধ ডাকাত, ছিনতাইকারী, অপহরণকারী ও অজ্ঞানপার্টি তৎপর রয়েছে। এদের মধ্যে আগে ধরা পড়া কারাফেরত অপরাধীরাও রয়েছে।

উত্তরবঙ্গের গাড়িচালক সোহেল মিয়া বলেন, 'আগে মহাসড়কে গাড়ি চেক করা এবং যাত্রীদের ছবি তুলে রাখা হলেও এখন তা দেখি না। গাড়িতে ডাকাত উঠে গেলে তখন আর করার কিছু থাকে না।'

মহাসড়কে এমন ডাকাতদলের খপ্পরে পড়া শফিকুল ইসলাম বলেন, 'এমন পরিস্থিতিতে যারা পড়েছে একমাত্র তারাই জানে কী ভয়াবহ অভিজ্ঞতার শিকার হতে হয়! একটু হেরফের হলে প্রাণও যেতে পারে। এত পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ, প্রশাসন ও নানা বাহিনী থাকার পরও রাস্তায় কেন আমাদের নিরাপত্তার অভাব হবে? ঈদে মহাসড়কে পুলিশ টহল ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার দাবি জানাই।'

জানতে চাইলে টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মো. শরফুদ্দিন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'মহাসড়কে অপরাধকারীরা সাধারণত স্বভাবসুলভ অপরাধী। এদের ধরে কারাগারে পাঠালেও ফিরে এসে আবার একই অপরাধ করে।'

'ঈদ উপলক্ষে জেলা পুলিশের ৭৫০ সদস্য মহাসড়কের টাঙ্গাইল অংশে দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়া অন্যান্য বাহিনীর সদস্যরাও থাকবেন। ঈদ উপলক্ষে মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে চেকপোস্ট স্থাপন করা হয়েছে,' বলেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

Iran says 'main target' of attack that hit Israel hospital was military site

Iran and Israel traded further air attacks on Thursday as Trump kept the world guessing about whether the US would join Israel's bombardment of Iranian nuclear facilities.

14h ago