গরম আর লোডশেডিংয়ে বরিশালে জনজীবন বিপর্যস্ত

ঘন ঘন বিদ্যুৎ যাওয়ায় বন্ধ রাখতে হয় কাজ। তাই বাধ্য হয়ে মোমবাতির আলোতেই টেলিভিশন মেরামতের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন একজন মেকানিক। ছবিটি বরিশাল নগরের হাসপাতাল রোড থেকে তোলা। ছবি: টিটু দাস/স্টার

তীব্র গরম সেইসঙ্গে ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে বরিশালে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়ে পড়ছে। ইফতারের সময়েও বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় থাকতে হচ্ছে বরিশাল সিটি করপোরেশন ও বিভাগের বিভিন্ন এলাকা।

বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বরিশাল বিভাগের ছয় জেলায়—বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি, বরগুনা ও পিরোজপুর—প্রতিদিনের চাহিদা রয়েছে ৪৮০ মেগাওয়াট। এর বিপরীতে সরবরাহ করা হয়েছে ৩৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। এ সময়ে বিদ্যুতের ঘাটতি ছিল ১২০ মেগাওয়াট।

এর মধ্যে শুধু বরিশাল নগরীতে বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে ৮০ থেকে ৮৫ মেগাওয়াট। নগরীর ২৪টি ফিডারের মধ্যে ৩০ থেকে ৪৬ মেগাওয়াট ঘাটতি থাকছে।

বরিশাল সিটি করপোরেশনের ১ লাখ ২০ হাজার গ্রাহকের মধ্যে বেশি লোডশেডিং হচ্ছে কাউনিয়া, পলাশপুর, আমানতগঞ্জ, সাগরদী আবাসিক এলাকায়। কোথাও কোথাও দুই ঘণ্টার বেশি বিদ্যুৎবিহীন থাকছে।

নগরীর কাউনিয়া প্রধান সড়ক এলাকার আনিসুর রহমান জানান, 'প্রতিদিন ১ থেকে দেড় ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে না। ইফতারের সময়ও বিদ্যুৎ থাকছে না , এর ফলে ভোগান্তি বেড়েছে। সরকার বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে সেই সাথে প্রয়োজনের সময়ে বিদ্যুৎ থাকছে না।'

শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. সাইফুল ইসলাম জানান কোনো রকম আগাম ঘোষণা না দিয়ে হাসপাতালেও লোডশেডিং করা হচ্ছে। এর ফলে অপারেশনসহ রোগীদের কষ্ট বেড়েছে।

বরিশাল পাওয়ার গ্রিডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আক্তারুজ্জামান পলাশ জানান, একে তাপমাত্রা বেড়েছে, অন্যদিকে শপিংমলে রাত পর্যন্ত বেচাকেনা চলছে। একই সময়ে গ্রিড থেকে চাহিদা মতো বিদ্যুৎ না পাওয়ায় লোডশেডিং করতে হচ্ছে। আর চাহিদা অনুযায়ী জোগান না থাকায় সরবরাহ করা যাচ্ছে না।

তিনি বলেন, পরিস্থিতি সামলে ওঠা গেলে সব স্বাভাবিক হবে। শপিংমল ও কারখানা এলাকায় যাতে বেচাকেনা ও উৎপাদন স্বাভাবিক থাকে এজন্য এসব এলাকায় লোডশেডিং অনেকটা এড়িয়ে আবাসিক এলাকায় বেশি করা হচ্ছে।

এ সমস্যা সাময়িক উল্লেখ করে তিনি বলেন, ফুয়েল সংকটের কারণে কিছু উৎপাদন কেন্দ্র বন্ধ থাকায় এ সমস্যা দেখা দিয়েছে। সংকট শিগগির কেটে যাবে।

বিদ্যুৎ বিভাগ জানায়, তাপপ্রবাহের কারণে এসিসহ বিদ্যুৎ ব্যবহার আগের চেয়ে কয়েকগুণ বেড়েছে, এর ফলে পিক আওয়ারে বিদ্যুৎ চাহিদা ক্রমশ বাড়ছে, কিন্তু চাহিদার বিপরীতে অন্তত ২০ ভাগ বিদ্যুৎ কম সরবরাহ থাকায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

আবহাওয়া বিভাগের মতে, গত এক সপ্তাহে অন্তত দুই দিন বরিশালের ওপর তাপপ্রবাহ বয়ে গিয়েছে। আবহাওয়া বিভাগ, বরিশালের কর্মকর্তা মো. বশির আহম্মেদ জানান, গত ৬ এপ্রিল বরিশালের তাপমাত্রা ৩৬ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও ২ এপ্রিল ৩৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল।

Comments

The Daily Star  | English

Bangladesh, Pakistan, China launch trilateral cooperation mechanism

A working group will be formed to follow up on and implement the understandings reached during the meeting

1h ago