ঈদ, পহেলা বৈশাখ

বেশিরভাগ মানুষের কাছেই ইলিশ বিলাসিতা

‘বর্তমানে বাজারে যে ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে, তার ৮০ শতাংশই কোল্ড স্টোরেজের, যা দেড় থেকে দুই মাস আগে মজুত করা হয়েছিল।’
ফাইল ছবি

পহেলা বৈশাখের সকালে ইলিশ না খেলে অনেক বাঙালির কাছেই দিনটির উদযাপন অসম্পূর্ণ বলে মনে হয়। ফলে বাংলা নববর্ষের প্রথম দিনকে সামনে রেখে দেশের জাতীয় এই মাছের চাহিদা বেড়ে যায়।

চলতি বছর ঈদুল ফিতরের কয়েকদিন পরই পহেলা বৈশাখ। ছুটির দিন যতই ঘনিয়ে আসছে, রাজধানীর বাজারে এই মাছের দাম ততই বাড়ছে।

সোমবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শনি-রোববার থেকে এক কেজি ওজনের একটি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে দুই হাজার থেকে দুই হাজার ২০০ টাকায়, যার দাম এর আগের সপ্তাহ ছিল এক হাজার ৮০০ টাকা থেকে দুই হাজার টাকা।

৮০০-৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ মাছের দাম ছিল এক হাজার ৬০০ থেকে এক হাজার ৮০০ টাকা, যার দাম আগে ছিল এক হাজার ৪০০ থেকে এক হাজার ৬০০ টাকা। আর ৬০০-৭০০ গ্রাম ওজনের মাছের দাম ছিল এক হাজার ২০০ থেকে এক হাজার ৩০০ টাকা, যা আগে ছিল এক হাজার ১০০ থেকে এক হাজার ২০০ টাকা।

দাম বাড়ার কারণে ইতোমধ্যে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষের খাবারের তালিকা থেকে বাদ পড়েছে  ইলিশ।

তেজতুরী বাজার এলাকার বাসিন্দা জয়নাল আবেদীন জানান, ঈদ ও বৈশাখকে সামনে রেখে তিনি ইলিশ কিনতে গিয়েছিলেন।

'বেশি দামের কারণে ভেবেছিলাম এই পহেলা বৈশাখ ইলিশ ছাড়াই উদযাপন করব। কিন্তু আমার বাচ্চারা ইলিশের জন্য কান্নাকাটি করছিল, তাই কিনেছি। এক কেজি ওজনের ইলিশ কিনতে চেয়েছিলাম। কিন্তু কিনতে পেরেছি ৭০০ গ্রাম ওজনের, যার দাম পড়েছে এক হাজার টাকা', দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন জয়নাল।

দাম বৃদ্ধির পেছনে ইলিশ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা এবং পরপর দুটি বড় উৎসবের আগমনকে দায়ী করেছেন ব্যবসায়ীরা।

কারওয়ান বাজারের ইলিশ ব্যবসায়ী শুক্কুর আলী বলেন, 'সরবরাহের তুলনায় মাছের চাহিদা অনেক বেড়েছে।'

মা-বাবার দোয়া মৎস্য ভান্ডারের স্বত্বাধিকারী মো. মাসুদ বলেন, 'বর্তমানে বাজারে যে ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে, তার ৮০ শতাংশই কোল্ড স্টোরেজের, যা দেড় থেকে দুই মাস আগে মজুত করা হয়েছিল।'

তিনি বলেন, দাম বেশি হওয়ার আরেকটি কারণ হলো দুই মাস ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ।

একই কথা বলেছেন মৎস্য অধিদপ্তরের জেলা মৎস্য কর্মকর্তা (ইলিশ শাখা) মাসুদ আরা মমিও।

গত ১ মার্চ মৎস্য অধিদপ্তর ছয়টি অভয়ারণ্যে ইলিশ ধরার ওপর দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা দেয়, যা শেষ হবে ৩০ এপ্রিল।

Comments