নাবিক ছালেহ আহমদের অপেক্ষায় ৩ কন্যা, ফিরলে বিয়ের বাদ্য বাজবে আরেক নাবিক রাজুর

এমভি আব্দুল্লাহ। ফাইল ছবি/সংগৃহীত

এক মাসেরও বেশি সময় পর সোমালিয়ার জলদস্যুদের কবল থেকে মুক্ত হওয়া নাবিক মোহাম্মদ সালেহ আহমদের (৪৩) জন্য বাড়িতে তার তিন মেয়েসহ স্ত্রী প্রতীক্ষার প্রহর গুনছেন। আর আগে থেকেই কাবিন সম্পন্ন হয়ে থাকা এমভি আবদুল্লাহর আরেক নাবিক আনোয়ারুল হক রাজুর (২৭) মুক্তির খবরে তার বাড়িতে ফিরে এসেছে ঈদের আনন্দ। তিনি ফিরলে ঘটা করে সারা হবে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা।

সালেহ আহমেদের বাড়ি নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার রামপুর ইউনিয়নে। রাজু একই জেলার চাটখিল উপজেলার নোয়াখলা ইউনিয়নের বাসিন্দা।

গত ১২ মার্চ দুপুরে ভারত মহাসাগরে সোমালি জলদস্যুদের কবলে পড়ে বাংলাদেশের কবির গ্রুপের এসআর শিপিংয়ের মালিকানাধীন জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ। জিম্মি করা হয় জাহাজটিতে থাকা ২৩ জন বাংলাদেশি নাবিককে। সালেহ আহমেদ ও রাজুও ছিলেন তাদের মধ্যে।

মোজাম্বিক থেকে ৫৫ হাজার টন কয়লা নিয়ে কয়লা নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাচ্ছিল জাহাজটি। অস্ত্রের মুখে জাহাজের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর সেটি সোমালিয়া উপকূলে নিয়ে যায় জলদস্যুরা। সেখানে পৌঁছানোর পর বারবার জাহাজের অবস্থান পরিবর্তন করা হয়। ছিনতাইয়ের ৯ দিনের মাথায় জলদস্যুদের সাথে তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে যোগাযোগ হয় জাহাজের মালিকপক্ষের।

অবশেষে বহু দেন দরবারের পর জাহাজটি গতকাল দস্যুমুক্ত হয়।

মুক্তির খবর আসার পর নাবিক রাজুর স্বজনরা জানান, এবার বাড়িতে ঈদ কথা ছিল দুই ভাই, এক বোনের মধ্যে সবার ছোট রাজুর। ঈদের পর বিয়ে উপলক্ষে বাড়িতে নতুন ঘর তৈরির কাজও চলছিল। গত বছরের নভেম্বর মাসের শেষ দিকে রাজু সিঙ্গাপুর থেকে জাহাজে ওঠেন।

কিন্তু প্রথম রোজা থেকে রাজুর জিম্মি হওয়ার খবরে বদলে যায় পরিবারটির স্বাভাবিক সবকিছু। তার বাবা আজিজুল হক বলেন, 'ছেলের মুক্তির খবরে আমরা আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরলাম।'

নিজের ছেলেসহ জিম্মি সব নাবিক অক্ষত ফিরে আসায় স্বস্তিও প্রকাশ করেন আজিজুল হক।

এদিকে চাটখিলের নাবিক সালেহ আহমদের গত ঈদ কেটেছিল কর্মস্থলের। এবার তিন মেয়ে ও স্ত্রীর সঙ্গে ঈদ করার আশা ছিল তার। কিন্তু তার জিম্মি হওয়ার খবরে এলোমেলো হয়ে যায় সবকিছু। এখন স্ত্রী তানিয়া আক্তার ও মেয়েরা তার বাড়িতে ফিরে আসার প্রহর গুনছেন।

তানিয়া আক্তার বলেন, 'খুব শঙ্কার মধ্যে ছিলাম। আমার সন্তানদের বাবাকে যে অক্ষত ফিরে পাব তা ভাবিনি।' এজন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।

 

Comments

The Daily Star  | English

CSA getting scrapped

The interim government yesterday decided in principle to repeal the Cyber Security Act which has been used to curb press freedom and suppress political dissent.

5h ago