টাঙ্গাইলের একমাত্র জিমনেশিয়ামটি ১৮ বছর ধরে র‍্যাবের ক্যাম্প

২০০৬ সাল থেকে জিমনেশিয়াম ভবন এবং এর জায়গাটি ব্যবহার করে আসছে র‍্যাব
টাঙ্গাইলের একমাত্র জিমনেশিয়ামটি ক্যাম্প হিসেবে ব্যবহার করছে র‍্যাব। ছবি: স্টার

টাঙ্গাইলের একমাত্র জিমনেশিয়ামটি স্থানীয় ক্রীড়াবিদদের জন্য ইনডোর গেমসের জন্য তৈরি করা হয়েছিল। একসময় অ্যাথলিটদের কর্ম উদ্দীপনায় মুখর থাকত এই জিমনেশিয়াম।

তবে, অ্যাথলিট, জিমন্যাস্ট এবং বডি বিল্ডারদের জন্য জেলার এই একমাত্র সুবিধাটি এখন আর তার আসল উদ্দেশ্যে ব্যবহার হচ্ছে না।

গত ১৮ বছর ধরে স্থাপনাটিকে ক্যাম্প হিসেবে ব্যবহার করছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। র‍্যাব-১৪ এর ক্রাইম প্রিভেনশন কোম্পানি (সিপিসি)-৩-এর সদস্যদের জন্য ভবন এবং এর প্রাঙ্গণটি ব্যবহৃত হচ্ছে।

জেলা ক্রীড়া সংস্থা সূত্রে জানা যায়, শরীরচর্চা, জিমন্যাস্টিক, ভারোত্তলন, ব্যাডমিন্টন, ভলিবল, জুডো, কারাতে প্রশিক্ষণ ও অনুশীলনের জন্য টাঙ্গাইল স্টেডিয়ামের সামনে ১৯৭৬ সালে নির্মিত হয় জিমনেশিয়ামটি।

স্থানীয় প্রশাসনের অনুরোধে ২০০৬ সালে র‌্যাব-১২ এর ক্রাইম প্রিভেনশন কোম্পানির সদস্যদের বাসস্থানের সংকট মেটাতে অস্থায়ীভাবে ভবনটি ব্যবহারের অনুমতি দেয় টাঙ্গাইল জেলা ক্রীড়া সংস্থা।

এরপর থেকে র‌্যাব সদস্যরা জিমনেশিয়াম ভবন এবং এর জায়গাটি ব্যবহার করে আসছে।

বর্তমানে ভবনটিতে র‌্যাব-১৪ এর সিপিসি-৩ এর শতাধিক সদস্য ও কর্মকর্তা অবস্থান করছেন বলে ক্যাম্প সূত্রে জানা গেছে।

জানা যায়, জেলা ক্রীড়া সংস্থা ভবনটি ছেড়ে দিতে একাধিকবার চিঠি দিলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে আলাপকালে টাঙ্গাইল জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক সাবেক ফুটবলার মির্জা মাইনুল হোসেন লিন্টু বলেন, 'ভবনটি ফিরে পেতে আমি স্থানীয় প্রশাসনকে চিঠি দিয়েছি। আমার আগে যারা ক্রীড়া সংস্থার দায়িত্বে ছিলেন তারাও দিয়েছেন। কিন্তু ফল কিছু হয়নি।'

তিনি আরও জানান, কোনো ধরনের আলাপ-আলোচনা ছাড়াই ওই ভবনের ভেতরে কক্ষসহ বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করেছে র‍্যাব।

একমাত্র ইনডোর স্পোর্টস সুবিধা ব্যবহার করা থেকে দীর্ঘদিন ধরে বঞ্চিত থাকায় স্থানীয় তরুণ ও ক্রীড়াবিদদের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছে। 

কারাতে ব্ল্যাক বেল্টধারী শফিকুল ইসলাম লাভলু, মাসুদ রুবেল, সৈয়দ তানজীজুল আজীজসহ একাধিক খেলোয়ার অভিযোগ করে বলেন, তারা আগে জিমনেশিয়ামটিতে কারাতে অনুশীলন করতেন। কিন্তু র‌্যাবকে ব্যাবহার করতে দেওয়ায় তাদের অনুশীলন বন্ধ হয়ে আছে। এখন শহরের আর কোথাও অনুশীলনের ব্যবস্থা নেই বলে জানান তারা।

জেলার একাধিক ক্রীড়া সংগঠকের অভিযোগ, ইনডোর সুবিধাটি ব্যবহার করতে না পারায়, বর্ষাকালে ফুটবলার, ক্রিকেটারসহ বিভিন্ন ক্রীড়াবিদরা নিজেদের ফিট রাখতে শরীরচর্চা করা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

ব্যাডমিন্টন খেলোয়ার শামীম আল মামুন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'জনগণের নিরাপত্তায় দায়িত্বপালনকারী র‌্যাব সদস্যদের জন্য আবাসন ব্যবস্থা থাকতেই হবে। তবে তাদের জন্য বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন আধুনিক ক্যাম্প থাকা দরকার।'

'এরপরও যদি জিমনেশিয়ামটিতেই তাদের রাখতে হয় তবে স্থানীয় ক্রীড়াবিদদের জন্য অনতিবিলম্বে নতুন একটি ইনডোর সুবিধা নির্মাণ করে দেওয়ার দাবি জানাই,' বলেন তিনি। 

এ বিষয়ে জানতে র‌্যাব-১৪ এর সিপিসি-৩ এর কমান্ডার মেজর মনজুর মেহেদী ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বিষয়টি নিয়ে আমাদের বলার কিছু নেই। এটি সরকারের ব্যাপার।' 

যোগাযোগ করা হলে র‌্যাব-১৪ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মহিবুল ইসলাম খান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'টাঙ্গাইলে র‌্যাব ক্যাম্প নির্মাণের জন্য সরকারের কাছে প্রস্তাব দেওয়া আছে। বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন আছে।'

Comments

The Daily Star  | English
World Bank’s senior official speaks on lending culture in Bangladesh

Banks mostly gave loans to their owners rather than creditworthy borrowers

Bangladesh’s banking sector was not well-managed in recent years. Banks mostly gave loans to their owners, rather than to creditworthy entities. Consequently, several banks are now in difficulty.

12h ago