‘আমাদের প্রাকৃতিক-সাংস্কৃতিক সম্পদ কি রক্ষা করতে পারব না?’

ছবি: সংগৃহীত

মেধাসম্পদের সুরক্ষা দেশ ও জাতিকে রক্ষার প্রশ্ন। এর মূল দায়িত্ব সরকারের।

মেধাসম্পদ সুরক্ষা মঞ্চের (মেধাসুম) আয়োজনে 'মেধাসম্পদ সুরক্ষা: পরিপ্রেক্ষিত, চ্যালেঞ্জ ও করণীয়' শীর্ষক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন বক্তারা।

শুক্রবার বিকেল ৫টায় বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ইসফেনদিয়ার জাহেদ হাসান মিলনায়তনে এ সভা হয়।

এতে সভাপতিত্ব করেন মেধাসুমের আহ্বায়ক সাংবাদিক আবু সাঈদ খান। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রাণবৈচিত্র্য গবেষক পাভেল পার্থ।

আলোচনা করেন খ্যাতিমান জীনবিজ্ঞানী আবেদ চৌধুরী, মানবাধিকার কর্মী শামসুল হুদা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল, প্যাটেন্ট অধিদপ্তরের সাবেক রেজিস্ট্রার মো. আবদুর রউফ এবং সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার তাসনুভা শেলী। 

অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন মেধাসুমের সদস্য সচিব আলী নাঈম। আলোচনা পর্ব শেষে মুক্ত আলোচনা পর্বে কয়েকজন দর্শক তাদের মতামত, পরামর্শ ও প্রশ্ন তুলে ধরেন।

সভাপতির আলোচনায় আবু সাঈদ খান বলেন, 'মেধাসম্পদের সুরক্ষা আসলে শেষ বিচারে দেশ, দেশের ভূপ্রকৃতি, সংস্কৃতি এবং জাতিকে রক্ষার প্রশ্ন। এটা দল-মত নির্বিশেষে সবার দায়িত্ব, যদিও মূল দায়িত্ব সরকারের এবং রাষ্ট্রের। আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে আমার এ বিষয়ে দেশবাসীর মধ্যে সচেতনতা তৈরি করা এবং এর মাধ্যমে সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলের ওপর চাপ তৈরি, মতামত দেওয়ার ভূমিকা পালন করতে চাই। এ আলোচনা সভা থেকে আপনাদের সবাইকে এ আন্দোলনে সামিল হওয়ার আবেদন জানাই।'

জীনবিজ্ঞানী আবেদ চৌধুরী বলেন, 'আমি গত কয়েক বছরে ধরে বিষয়গুলো নিয়ে ভীষণ অস্থির হয়েছিলাম, নজরুলের ভাষায় "দেখিয়া শুনিয়া খেপিয়া গিয়াছি"। আমাদের ধান, বেগুন, নদী, আমাদের নানা প্রাকৃতিক-সাংস্কৃতিক সম্পদ কি আমরা রক্ষা করতে পারব না? এখন মনোভাব একটু স্থির হয়েছে যে, ইতিবাচকভাবে কিছু কাজ করা যায়। এই মঞ্চকে কেন্দ্র করে আমরা সে চেষ্টা আর উদ্যোগ দিয়ে এগুতে পারি।'

মানবাধিকার কর্মী শামসুল হুদা বলেন, 'ধান নিয়ে কাজ করতে করতে একসময় আমি দেখলাম যে, আমাদের কৃষকরা বহু বছরের বহু সাধনায় যে ধান উদ্ভাবন করেছেন, সেগুলো তারা রক্ষা করতে পারছেন না। আমাদের সরকারগুলো, শুধু এ সরকার নয়, অতীতের সরকারগুলোও এ নিয়ে আন্তরিক ছিল বলে মনে হয় না। এ বিষয়গুলো নিয়ে গভীরভাবে ভাবার এবং আন্তরিকভাবে কাজ করার সময় এসেছে।'

ড. আসিফ নজরুল বলেন, 'আমাদের সব দিকে ঘাটতি। আইনের ঘাটতি, আইন জানার ঘাটতি, আইন প্রয়োগের ঘাটতি। যদিও বিভিন্ন বিষয়ে বিশেষজ্ঞ মানুষের অভাব আছে, এমনটা আমি মনে করি না। কিন্তু তাদের কাছে কেউ যায় না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগেও পেটেন্ট আইন বিষয়ে চারজন বিশেষজ্ঞ আছেন, কিন্তু তাদের কাছে সরকার বা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো কখনো গিয়েছে বলে শুনিনি।'

মো. আবদুর রউফ বলেন, 'আমি যখন রেজিস্ট্রার অধিদপ্তরে ছিলাম, তখন একবার ওষুধ কোম্পানিগুলোর মালিকদের সঙ্গে বসেছিলাম। তাদের বলেছিলাম যে, আপনারা নিজেরা গবেষণা করে নতুন ওষুধ আবিষ্কার করেন, সেগুলো পেটেন্ট করেন। ভবিষ্যতে যখন ওষুধের পেটেন্ট নিয়ে বিপদে পড়বেন, তখন ওষুধের দাম অনেক বেড়ে যাবে। তারা বলেছিল যে, আমরা তখন অন্য ব্যবসায় চলে যাব। এই হলো আমাদের দেশে ব্যবসায়ীদের মনোভাব।'

Comments

The Daily Star  | English
Polytechnic students protest Bangladesh 2025

Polytechnic students issue 48-hr ultimatum over six-point demand

Threaten a long march to Dhaka if govt doesn't respond to demands

1h ago