সড়ক সংস্কারের ১০ দিনেই উঠে যাচ্ছে কার্পেটিং

কোথাও হাতের টানে কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে, কোথাও পায়ের চাপে দেবে যাচ্ছে।
পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার নিজামপুর এলাকার একটি সড়কে সংস্কারের ১০ দিন পরেই কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে। ছবি: স্টার

পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার নিজামপুর এলাকায় ১ কোটি ৩৩ লাখ টাকা ব্যয়ে ৩ দশমিক ৩ কিলোমিটার সড়ক সংস্কার করা হয়েছিল। তবে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) ওই সড়কটি সংস্কারের মাত্র ১০ দিনেই উঠে যাচ্ছে কার্পেটিং।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, এলজিইডির উদাসীনতা ও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের গাফিলতিতে সড়কের এমন দশা হয়েছে।

কলাপাড়া উপজেলার মহিপুর এলাকার সাগর সিনেমা হল থেকে নিজামপুর খেয়াঘাট পর্যন্ত ৩ দশমিক ৩ কিলোমিটার গ্রামীণ সড়ক সংস্কার করে এলজিইডি। সংস্কার কাজ মাত্র ১০ দিন আগে শেষ হয়েছে। কিন্ত্র এত অল্প সময়েই দেখা দিয়েছে এমন দুরাবস্থা।

গত শনিবার দুপুরে সড়কটিতে গিয়ে দেখা গেছে, কোথাও হাতের টানে কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে, কোথাও আবার পায়ের আঙ্গুলের ঘষাতেই উঠে যাচ্ছে, কোথাও পায়ের চাপে দেবে যাচ্ছে। স্থানীয়রা জানান, সড়কটিতে ২৫ মিলিমিটার পুরো কার্পেটিং দেওয়ার কথা থাকলেও বেশিরভাগ স্থানে দেওয়া হয়েছে ১৫ থেকে ২০ মিলিমিটার।

পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার মহিপুর এলাকার সাগর সিনেমা হল থেকে নিজামপুর খেয়াঘাট পর্যন্ত সড়কের কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে। ছবি: স্টার

কলাপাড়া এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা যায়, ঘূর্ণিঝড় আম্পান ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত প্রকল্পের আওতায় এ সড়কটি পুনঃনির্মাণের উদ্যোগ নেয় এলজিইডি। সড়কটির দৈর্ঘ্য ৩ দশমিক ৩ কিলোমিটার ও প্রস্থ ৩ মিটার। ১ কোটি ৩৩ লাখ টাকা ব্যয়ে এ সড়কটির সংস্কারের কাজ পায় শহীদুল এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। ১০ দিন আগে শেষ হয়েছে এ সড়কের পিচ ঢালাইয়ের কাজ। ইতোমধ্যে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে বিল পরিশোধ করা হয়েছে প্রায় ৯০ লাখ টাকা।

নিজামপুর এলাকার বাসিন্দা নাসির মিয়া বলেন, 'নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে সড়কটির সংস্কার কাজ করা হয়েছে। হাত দিয়ে টান দিলেই উঠে যাচ্ছে কার্পেটিং। সড়ক নির্মাণে দুর্নীতি করায় এ প্রকল্পের কর্মকর্তাদের শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।'

একই এলাকার বাসিন্দা সোলেমান মুন্সী জানান, এখনই কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে। নিম্নমানের খোয়া ব্যবহার করা হয়েছে। অনেক স্থানে শুধু মাটির উপর কার্পেটিং করা হয়েছে। সড়কটি পূনঃনির্মাণের দাবি জানান তিনি।

এ ব্যাপারে ঠিকাদার শহীদুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন দেখছে।

এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ সাদেকুর রহমান সাদেক এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানাতে রাজি হননি। তবে সড়কটি পুনঃনির্মাণ না করা পর্যন্ত চূড়ান্ত বিল আটকে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম জানান, সড়কটি আমি পরিদর্শন করেছি। নিম্নমানের কাজ হওয়ায় ঠিকাদার ও এলজিইডি কর্মকর্তাদের চাপ প্রয়োগ করা হয়েছে। সড়কটি পুনঃনির্মাণ না করা পর্যন্ত চূড়ান্ত বিল পরিশোধ না করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। প্রয়োজনে ঠিকাদারের জামানত বাজেয়াপ্ত করতেও বলা হয়েছে।

কলাপাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান মোতালেব তালুকদার বলেন, 'তদারকি কর্মকর্তাকে কারণ দর্শানোর সুপারিশ করেছি এবং দ্রুত সড়কটি পুণঃনির্মাণের নির্দেশনা দিয়েছি।'

Comments

The Daily Star  | English

Mirpur-10 metro station reopens

Mirpur-10 metro station resumed operations this morning, almost three months after it was vandalised and consequently shut down in July

12m ago