খুললো ফারাক্কার ১০৯টি গেট: বাংলাদেশের উদ্বেগের কারণ নেই বলছে ভারত

খুললো ফারাক্কার ১০৯টি গেট: বাংলাদেশের উদ্বেগের কারণ নেই বলছে ভারত
ফারাক্কা ব্যারেজ | ফাইল ফটো

বিহার ও ঝাড়খণ্ডে টানা ভারী বৃষ্টির কারণে গঙ্গায় পানির স্তর অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাওয়ায় পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার ফারাক্কার ১০৯টি গেটের সবগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে।

ভারত বলছে, ভাটিতে পানি ছেড়ে দেওয়া একটি স্বাভাবিক মৌসুমি ঘটনা এবং বাংলাদেশের উদ্বেগের কোনো কারণ নেই।

'ফারাক্কার সবগুলো গেট খুলে দেওয়ায় নদীর স্বাভাবিক গতিপথে ১১ লাখ কিউসেকেরও বেশি পানি গঙ্গা-পদ্মা নদীতে প্রবাহিত হবে বলে আমরা গণমাধ্যমে খবর দেখেছি। এটি একটি স্বাভাবিক ঘটনা, যা বর্ষার সময়ে ঘটে থাকে,' গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে বলেন ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল।

অনলাইনে যে আতঙ্ক ছড়ানো হচ্ছে তার কোনো ভিত্তি নেই, দাবি করা হয় ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে।

তিনি আরও বলেন, 'উজানে গঙ্গা অববাহিকায় ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে পানি ছেড়ে দেওয়া একটি নিয়মিত মৌসুমি ঘটনা। কাঠামোগত কারণে ফারাক্কায় পানি ধরে রাখার সুযোগ নেই। এর প্রাথমিক কাজ হলো ফারাক্কা খালে ৪০ হাজার কিউসেক পানি প্রবাহিত করা। বাকি পানি প্রাকৃতিকভাবে পদ্মা নদীতে প্রবাহিত হয়।'

জয়সওয়াল বলেন, 'দ্বিপাক্ষিক প্রটোকল অনুযায়ী বাংলাদেশের যৌথ নদী কমিশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়মিত পানি প্রবাহ সম্পর্কিত তথ্য আদান-প্রদান করা হয়।'

'আমরা দেখেছি, ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি করতে পারে এমন ভুয়া ভিডিও ও গুজব ছড়ানো হচ্ছে। এগুলো যাচাই করে, সঠিক তথ্য দিয়ে প্রতিহত করতে হবে,' যোগ করেন তিনি।

বাংলাদেশের যৌথ নদী কমিশনের সদস্য মোহাম্মদ আবুল হোসেন বলেন, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের যে পানি বণ্টন চুক্তি রয়েছে, তা জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত কার্যকর থাকে। সে সময় চুক্তি অনুযায়ী তারা বাংলাদেশকে পানি সরবরাহ করে। বাকি সময় ভারত বাইপাস খালের মাধ্যমে ৪০ হাজার কিউসেক পানি হুগলি নদীতে নিয়ে যায় এবং বাকি পানি বাংলাদেশে প্রবাহিত পদ্মায় ছেড়ে দেয়। সাধারণত বর্ষা মৌসুমে ফারাক্কার সবগুলো গেট খোলা থাকে।

জানতে চাইলে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান বলেন, গত সপ্তাহে ভারতে গঙ্গা নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছিল কিন্তু এখন বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

'তাই আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে গঙ্গা অববাহিকায় বন্যার আশঙ্কা করছি না,' বলেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, ভারতীয় কর্তৃপক্ষ বর্ষা মৌসুমে ফারাক্কা বাঁধের সবগুলো গেট খোলা রাখে।

সোমবার ফারাক্কা ব্যারেজের জেনারেল ডিরেক্টর জিডি দেশপাণ্ডে স্থানীয় গণমাধ্যমকে বলেন, 'এখন ব্যারেজের সব গেট খোলা আছে।'

যে পরিমাণ পানি ডাউনস্ট্রিমে যাচ্ছে, তাতে বাংলাদেশে পানির স্তর বাড়তে পারে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'না। গতকাল ১১ লাখ ৩২ হাজার কিউসেক পানি ছাড়া হয়েছে।

'আপস্ট্রিম থেকে যে রকম পানি আসে, ৪০ হাজার কিউসেক খালে ছেড়ে দিয়ে বাকিটা পদ্মায় ছাড়তেই হয়। আটকে রাখার কোনো সুযোগ নেই। ব্যারেজের কারণে আপস্ট্রিম বা ডাউনস্ট্রিমে ভাঙন হওয়ার কোনো কারণ নেই,' যোগ করেন তিনি।

ভারতের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম নিউজ১৮ ও আনন্দবাজার পত্রিকা তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, পানির চাপ বাড়ায় ফারাক্কার সবগুলো গেট খুলে দেওয়া হয়েছে।

নিম্নচাপের প্রভাবে বিহার ও ঝাড়খণ্ডে অতি ভারী বৃষ্টি হয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

One lakh stock accounts closed amid IPO drought in FY25

The stock market has almost closed the books on the fiscal year (FY) 2024-25 without a single company getting listed through an initial public offering (IPO), a rare event not seen in decades.

11h ago