‘ভারতের চেয়ে পাকিস্তানের সাথে সম্পর্ক ভালো হচ্ছে’ শীর্ষক মন্তব্য উপদেষ্টা নাহিদ করেননি

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রচারিত পোস্টে দাবি করা হয়েছে, তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেছেন, 'ভারতের চেয়ে পাকিস্তানের সাথে সম্পর্ক ভালো হচ্ছে'।

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, এমন কোনো মন্তব্য নাহিদ ইসলাম করেননি। প্রকৃতপক্ষে কোনোরকম নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই তার নামে বানোয়াট এই উক্তিটি প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত পোস্টগুলো রিউমর স্ক্যানার পর্যবেক্ষণ করলে তাতে কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণের উল্লেখ পায়নি। তাছাড়া, এই দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ডে কোনো গণমাধ্যমের লোগো বা নামেরও উল্লেখ পাওয়া যায়নি। সাধারণত কোনো গণমাধ্যম কোনো ফটোকার্ড প্রকাশ করলে সেখানে তাদের নাম বা লোগো থাকে।

এ বিষয়ে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলেও আলোচিত দাবির সপক্ষে নির্ভরযোগ্য সূত্রে কোনো তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। বরং নানা সময়ে নাহিদ ইসলামের বক্তব্যে ভারত ও পাকিস্তান দুই দেশের সঙ্গেই সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত হতে দেখা যায়৷

বিবিসি নিউজ হিন্দির ইউটিউব চ্যানেলে গত ১৪ নভেম্বরে প্রকাশিত নাহিদ ইসলামের একটি সাক্ষাৎকারেও নাহিদকে বলতে শোনা যায়, দুই দেশ যখন একে অপরের সঙ্গে থাকবে, তখন সাফল্যের সঙ্গে দুই দেশের জন্য মঙ্গলজনক কাজ করা সম্ভব হবে। আমরা কোনো দেশের সঙ্গে সম্পর্ক ছেদ করিনি।

তাছাড়া, পাকিস্তানের সঙ্গে ৭১-এর প্রশ্নটির সমাধান করতে চান বলে গত ১ সেপ্টেম্বর সচিবালয়ে পাকিস্তান হাইকমিশনারের সঙ্গে এক আলোচনায় নাহিদ ইসলাম উল্লেখ করেন। প্রসঙ্গত, মুক্তিযুদ্ধ ঘিরে পাকিস্তানি বাহিনী যে গণহত্যা চালিয়েছিল, তা নিয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো দুঃখ প্রকাশ করেনি দেশটি।

আলোচনায় নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, 'একটি গণতান্ত্রিক দক্ষিণ এশিয়ার জন্য আমাদের পরস্পরের সঙ্গে সম্পর্ক মজবুত করা প্রয়োজন। আমরা বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় স্বার্থকে সমুন্নত রেখে যে কোনো দেশের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে আগ্রহী।' তবে, কোথাও তাকে আলোচিত মন্তব্যটি করতে দেখা যায়নি।

তবে, নাহিদ ইসলাম নানা সময়ে বাংলাদেশের বিষয়ে ভারতের নানা কার্যক্রম ও উদ্যোগের সমালোচনা করেছেন। যেমন: গত ৪ ডিসেম্বর তার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে দেওয়া একটি পোস্টে তিনি বলেন, ভারতের শাসকগোষ্ঠী ও হিন্দুত্ববাদী শক্তিগুলো এ ধরণের গণতান্ত্রিক সম্পর্ক ও সম্প্রীতি চায় না। দিল্লি সংখ্যালঘু নিপীড়নের ন্যারেটিভ ব্যবহার করে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন এবং বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ও দেশ পুনর্গঠন প্রক্রিয়া ব্যাহত করার চেষ্টা করছে।

তবে, একই পোস্টে তিনি এটিও বলেন, বাংলাদেশ পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, ও আসামের সঙ্গে ঐতিহাসিক এবং সাংস্কৃতিক সম্পর্ক শেয়ার করে; তারা আমাদের অংশীদার। বাংলাদেশের চলমান গণঅভ্যুত্থানের সময়, কলকাতা ও দিল্লির শিক্ষার্থীরা আমাদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে এবং শেখ হাসিনার নিপীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছে। ভারতের এই গণতন্ত্র প্রিয় মানুষগুলো আমাদের বন্ধু।

সুতরাং, তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামকে উদ্ধৃত করে 'ভারতের চেয়ে পাকিস্তানের সাথে সম্পর্ক ভালো হচ্ছে' শীর্ষক দাবিতে প্রচারিত মন্তব্যটি ভুয়া ও বানোয়াট।

Comments

The Daily Star  | English
Barishal University protest

As a nation, we are not focused on education

We have had so many reform commissions, but none on education, reflecting our own sense of priority.

11h ago