দহগ্রাম সীমান্ত

বিজিবি-স্থানীয়দের বাধায় কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণে পিছু হটল বিএসএফ

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) কড়া প্রতিবাদে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম ইউনিয়নের মুন্সিপাড়া সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া স্থাপনের কাজ বন্ধ রেখেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। বর্তমানে ওই সীমান্তে টহল জোরদার করেছে বিজিবি।

আন্তর্জাতিক সীমান্ত আইন লঙ্ঘন করে গত শুক্রবার সকালে সীমান্তের শূন্যরেখা বরাবর কাঁটাতারের বেড়া স্থাপনের কাজ শুরু করে বিএসএফ। এসময় বিজিবি কড়া প্রতিবাদ জানালে কিছুক্ষণের জন্য কাজ বন্ধ রাখে বিএসএফ। তবে দুপুর থেকে পুনরায় বেড়া স্থাপনের কাজ শুরু করে। এসময় বিজিবির সঙ্গে যোগ দেন সীমান্তবাসীরা। তারা একযোগে প্রতিবাদ জানান। এতে বেড়া স্থাপনের কাজ বন্ধ রাখে বিএসএফ। এরপর থেকেই ওই সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফের মধ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।  

বিজিবি জানায়, এ ঘটনায় শনিবার সরেজমিন পরিদর্শনের কথা ছিল বিজিবি-বিএসএফের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের। বিজিবি রংপুর সেক্টরের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট সাব্রি আহমেদ ও রংপুর ৫১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সেলিম আলদীন ঘটনাস্থলে দিনভর উপস্থিত ছিলেন কিন্তু বিএসএফ কর্মকর্তারা আসেননি। পরে শনিবার রাতে বিএসএফের পক্ষ থেকে বিজিবিকে জানানো হয় যে, সীমান্তের শূন্যরেখায় কাঁটাতারের বেড়া স্থাপন করবে না বিএসএফ।

বিজিবি জানায়, আন্তর্জাতিক সীমান্ত আইন অনুযায়ী সীমান্তের শূন্যরেখার ১৫০ গজের মধ্যে কোনো স্থাপনা নির্মাণ করা যাবে না। 

সীমান্ত টহলে বিজিবিকে সঙ্গ দিচ্ছেন স্থানীয়রাও। ছবি: সংগৃহীত

বিজিবি জানায়, ২০১০ সালে দহগ্রামের প্রবেশদ্বার তিনবিঘা করিডোর সংক্রান্ত একটি চুক্তি রয়েছে বিএসএফের সঙ্গে। বিএসএফ এ চুক্তির তথ্য উপস্থাপন করে সীমান্তের শূন্যরেখায় একলাইনের কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের যুক্তি তুলে ধরে। এ চুক্তি অনুযায়ী শুধু দহগ্রাম সীমান্তের শূন্যরেখায় একলাইনের কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ করা যাবে। কিন্তু ২০২১ সালে বিএসএফ এ চুক্তি অমান্য করেছে। সেসময় তিনবিঘা করিডোর দিয়ে দহগ্রামে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দিতে অপটিক্যাল ক্যাবল লাইন স্থাপনের কাজ শুরু করে বাংলাদেশ। কিন্তু বিএসএফের বাঁধার কারণে তা সম্ভব হয়নি। 

দহগ্রাম ইউনিয়নের মুন্সিপাড়া এলাকার কৃষক খবির উদ্দিন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বিএসএফ শুক্রবার সীমান্তের শূন্যরেখায় কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ করতে চাইলে বিজিবির পাশাপাশি স্থানীয়রা প্রতিবাদ গড়ে তোলেন। এর ফলে শনিবার থেকে কাজ বন্ধ রাখে বিএসএফ। এখন ওই সীমান্তে মাঝে মাঝে বিএসএফের টহল দেখা যাচ্ছে। বিজিবিও তাদের টহল বৃদ্ধি করেছে। এ বিষয়ে স্থানীয়রাও সজাগ রয়েছেন। বিএসএফ পুনরায় কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের চেষ্টা করলে তারা কঠোর প্রতিবাদ গড়ে তুলবেন।' 

রংপুর ৫১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের সহকারী পরিচালক আমির খসরু সাংবাদিকদের জানান, বর্তমানে দহগ্রাম সীমান্ত পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবিলায় সীমান্তে বিজিবির টহল জোরদার করা হয়েছে। বিজিবি-বিএসএফের মধ্যে পরবর্তী বৈঠকে সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত দহগ্রাম সীমান্তে উভয় দেশই সীমান্তের শুন্যরেখা থেকে ১৫০ গজের ভেতর কোনো স্থাপনা নির্মাণ করতে পারবে না। 

Comments

The Daily Star  | English
future of bangladesh after banning awami league

What are we building after dismantling the AL regime?

Democracy does not seem to be our focus today. Because if it were, then shouldn’t we have been talking about elections more?

14h ago