হামলাকারী স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টির নেতা-কর্মীদের বিচার দাবি নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের

আদিবাসী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে শহীদ মিনার চত্বরে বিক্ষোভ সমাবেশ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

পাঠ্যবই থেকে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের 'আদিবাসী' শব্দ সম্বলিত গ্রাফিতি বাদ দেওয়ার প্রতিবাদকারীদের ওপর হামলায় জড়িতদের বিচার দাবি করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি।

গতকাল দুপুরে মতিঝিলে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) কার্যালয়ের সামনে পাল্টাপাল্টি সমাবেশ করে 'সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতা' ও 'স্টুডেন্ট ফর সভরেন্টি'র ব্যানারে জড়ো হওয়া একদল ব্যক্তি। দুই পক্ষের বিক্ষোভ চলাকালে হাতাহাতি ও হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় 'স্টুডেন্ট ফর সভরেন্টি'র লোকজন অন্যপক্ষের ওপর লাঠিসোটা নিয়ে হামলা চালায়। এতে অনেকে আহত হন।

এই হামলার প্রতিবাদে সন্ধ্যায় বিক্ষোভ মিছিল ও কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমাবেশ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি।

সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতার ওপর হামলার প্রতিবাদে জাতীয় নাগরিক কমিটি গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, মতিঝিলে এনসিটিবি ভবনের সামনে স্টুডেন্টস ফর সভরেন্টি নামের সংগঠনের হামলায় বিভিন্ন জাতিসত্তার নাগরিকেরা মারাত্মক আহত হয়েছেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য রুপাইয়া শ্রেষ্ঠা তঞ্চঙ্গ্যাসহ আরও অনেকেই বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

'হামলার সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সরব ভূমিকা পালন করতে দেখা যায়নি। তারা সক্রিয় ভূমিকা পালন করলে এ ধরনের ন্যক্কারজনক হামলা দেখতে পেতাম না। মিছিল কিংবা সমাবেশে হামলা পতিত নিষিদ্ধ ফ্যাসিবাদী সংগঠন ছাত্রলীগের কায়দার বহিঃপ্রকাশ।'

জাতীয় নাগরিক কমিটি মনে করে, 'সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতা'র ব্যানারে পূর্বঘোষিত সমাবেশের সময় একই জায়গায় কর্মসূচি ঘোষণা করে 'স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি' দায়িত্বশীল আচরণ করেনি এবং তাদের এমন সিদ্ধান্ত ইচ্ছাকৃত উত্তেজনা তৈরি করেছে। এটা স্পষ্ট যে, এই হামলা পরিকল্পিত ছিল এবং এর পেছনে 'স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি'র ভূমিকা ছিল স্পষ্ট। তাদের এই আচরণ শুধু সহিংসতার মাধ্যমে ভিন্নমত দমনের অপপ্রয়াস নয়, বরং এটি দেশের সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর অধিকার এবং মর্যাদার ওপর সরাসরি আঘাত।

হামলাকারীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, ফ্যাসিবাদ–উত্তর বাংলাদেশে নাগরিকদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে যারা হামলা করে বাধাগ্রস্ত করতে চায়, তাদের অতিসত্বর আইনের আওতায় আনতে হবে। ভিডিও ফুটেজ তদন্ত করে এই হামলার সঙ্গে জড়িত প্রত্যেককে দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে।

বিক্ষোভ সমাবেশে ছিলেন জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, সদস্য সচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। আরও উপস্থিত ছিলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ, সদস্য সচিব আরিফ সোহেল, মুখপাত্র উমামা ফাতেমা, মুখ্য সংগঠক আব্দুল হান্নান মাসউদ, নির্বাহী সদস্য মেহেরাব সিফাত, রিফাত রশিদ, লুৎফর রহমান সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

Comments

The Daily Star  | English

IMF sets new loan conditions

Bangladesh must clear dues, hit steep revenue, reserve targets for next tranche

7h ago