জরিপ

তিন চতুর্থাংশ মানুষ মনে করেন ব্যবসাকেন্দ্রিক রাজনীতি না বদলালে ফিরবে স্বৈরাচারী ব্যবস্থা

প্রতীকী ছবি

প্রতি চারজন বাংলাদেশির মধ্যে প্রায় তিনজন মনে করেন, যদি রাজনীতি জনকল্যাণের পরিবর্তে ব্যবসায়িক স্বার্থে পরিচালিত হয়, তবে স্বৈরাচারী ব্যবস্থার পুনরুত্থানের ঝুঁকি রয়েছে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর একটি জাতীয় জনমত জরিপে দেখা গেছে, দলীয় মনোনয়ন বিক্রি অব্যাহত থাকলে প্রায় ৭৪ শতাংশ মানুষ স্বৈরাচার পুনরুত্থানের বিষয়ে সতর্ক করেছেন।

নির্বাচনী সংস্কার কমিশনের অনুরোধে পরিচালিত এই জরিপে বলা হয়েছে প্রতি পাঁচজনের মধ্যে চারজন সংসদীয় নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নের যোগ্যতা অর্জনের জন্য তিন বছরের সদস্যপদ বাধ্যতামূলক করার পক্ষে মত দিয়েছেন।

বিবিএসের ৪৬ হাজার ৮০টি খানার ওপর পরিচালিত জরিপে দেখা গেছে, এর ফলে দলের নিবেদিতপ্রাণ সদস্যরা জাতীয় নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পাবেন বলে মনে করছেন সাধারণ মানুষ। ২০-২২ ডিসেম্বর পরিচালিত এই জরিপে প্রতি পরিবার থেকে একজন প্রাপ্তবয়স্ক (১৮ বা তার বেশি বয়সী) উত্তরদাতাকে বেছে নেওয়া হয়। গতকাল নির্বাচনী সংস্কার কমিশনের ওয়েবসাইটে গবেষণা প্রতিবেদনটি আপলোড করা হয়েছে।

নির্বাচন সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার বলেন, জরিপটি নির্বাচন এবং সম্পর্কিত বিষয়গুলি সম্পর্কে জনগণের মতামত জানার জন্য করা হয়েছিল। তিনি বলেন, কমিশন তাদের নিজস্ব অভিজ্ঞতার পাশাপাশি এই জরিপে প্রকাশিত মতামতের আলোকে সুপারিশ তৈরি করেছে।

রাজনৈতিক অঙ্গনে ওপেন সিক্রেট হয়ে ওঠা কুখ্যাত 'মনোনয়ন বাণিজ্য' সম্পর্কে প্রায় আর্ধেক (৪৮ শতাংশ) বিশ্বাস করেন যে রাজনৈতিক দল এবং তাদের প্রার্থীদের এই মনোনয়ন বাণিজ্য বন্ধে চেষ্টা করা উচিত। অন্যদিকে ৪৪ শতাংশ (প্রতি পাঁচজনের মধ্যে কমপক্ষে দুইজন) মনে করেন এই দায়িত্ব জনসাধারণের উপর বর্তানো উচিত।

জরিপে দেখা গেছে যে ৬৮ শতাংশ নাগরিক নির্দলীয় রাষ্ট্রপতি পছন্দ করেন, যেখানে প্রায় ২৯ শতাংশ দলীয় প্রার্থীকে পছন্দ করেন। এতে আরও দেখায় যে প্রায় ৮৩ শতাংশ (প্রতি পাঁচজনের মধ্যে চারজনেরও বেশি) মানুষ সরাসরি রাষ্ট্রপতির জন্য ভোট দেওয়ার পক্ষে, অন্যদিকে ১৩ শতাংশ মনে করেন যে সংসদ সদস্যদের (এমপিদের) রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত করা উচিত।

প্রায় ৪৭ শতাংশ উত্তরদাতা নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব কর্মকর্তাদের রিটার্নিং কর্মকর্তা (যারা জাতীয় নির্বাচনের সময় প্রতিটি জেলার শীর্ষ নির্বাচন কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন) হিসেবে নিয়োগের পক্ষে, যেখানে ৪৪ শতাংশ বলেছেন যে জেলা প্রশাসককে রিটার্নিং কর্মকর্তা করা যেতে পারে।

যদি ভোটার অংশগ্রহণ মোট ভোটারের অর্ধেকের কম হয়, তবে ৭৮ শতাংশ মানুষ পুনর্নির্বাচনের পক্ষে মত দেন, যা প্রায় প্রতি পাঁচজনের মধ্যে চারজন। একই অনুপাতে (৭৮ শতাংশ) মানুষ নতুন প্রার্থী নিয়ে নতুন নির্বাচনের পক্ষে মত দিয়েছেন, যদি 'না' ভোট বিজয়ী হয়।

প্রায় ৭৪ শতাংশ সংসদে নারী আসন সংখ্যা বৃদ্ধির পক্ষে এবং সরাসরি নির্বাচনের পক্ষে।

জরিপে দেখা গেছে, ৬৫ শতাংশ মানুষ পরবর্তী জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজনের পক্ষে। এছাড়া, ৭০ শতাংশ নির্দলীয় স্থানীয় সরকার নির্বাচনকে সমর্থন করেছেন, যেখানে ২৮ শতাংশ দলীয় স্থানীয় নির্বাচনের পক্ষে মত দিয়েছেন।

পাঁচজনের মধ্যে তিনজনেরও বেশি (৬৩ শতাংশ) রাজনৈতিক দলের পৃথক ছাত্র শাখা থাকার বিরুদ্ধে মত দিয়েছেন।

এছাড়া, অর্ধেক জনমত (৫০ শতাংশ) রাজনৈতিক দলগুলোর বিদেশে শাখা থাকা বিরোধী, তবে ৪২ শতাংশ (প্রতি পাঁচজনের মধ্যে দুইজনেরও বেশি) সমর্থন জানিয়েঝে। প্রবাসীদের জন্য পরীক্ষামূলকভাবে ইলেকট্রনিক ভোটিং চালু করার ব্যাপারে ৮৭ শতাংশ জনমত সমর্থন জানিয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

Govt relieves Kuet VC, Pro-VC of duties to resolve crisis

A search committee will soon be formed to appoint new candidates to the two posts

2h ago