শুক্রবারও বিভিন্ন জেলায় আ. লীগ নেতাদের বাড়ি-দলীয় কার্যালয়ে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ

শুক্রবার নড়াইল-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য বি এম কবিরুল হক মুক্তির বাগানবাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছেন বিক্ষুব্ধ জনতা | ছবি: সংগৃহীত

দেশের বিভিন্ন জেলায় শুক্রবার আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়ি ও দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর করেছে বিক্ষুব্ধ জনতা। কোথাও কোথাও ভাঙচুরের পাশাপাশি আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ভাঙচুরের পর এক্সকাভেটর দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়।

এদিন রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত চলে ভাঙচুর। এর আগে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কার্যালয়টিতে হামলা চালিয়েছিল বিক্ষুব্ধ জনতা।

শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ভাঙচুরের পর এক্সকাভেটর দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় | ছবি: সংগৃহীত

এছাড়া রাতে বিক্ষুব্ধ জনতা ইসলামপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের তালা ভেঙে ভেতরে ঢুকে শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল ভাঙচুর করেছে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জামালপুর জেলা শাখার আহ্বায়ক মীর ইসহাক হাসান দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন, তাদের সংগঠনের কেউ এসব ঘটনায় জড়িত নয়।

যোগাযোগ করা হলে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি মেলান্দহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাসুদুজ্জামান।

পাবনার ফরিদপুর পৌর মাঠ সংলগ্ন ফরিদপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের একাংশ ভাঙচুরের পর একটি মাদ্রাসার সাইন বোর্ড টানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

ফরিদপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খলিলুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'একদল লোক উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের দুইতলা ভবন ভাঙচুর করেছে। এক্সকাভেটর দিয়ে তারা ভবনের দেয়াল ক্ষতিগ্রস্ত করলেও ছাদ অক্ষত রয়েছে। ভাঙচুরের পর তারা বনোয়ারীনগর ফাজিল মাদ্রাসার সাইন বোর্ডও টানিয়ে দিয়েছে।'

'আমি এলাকায় নেই। বিভিন্ন অসুস্থতার কারণে দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে যাই না। ভাঙচুরের ঘটনায় কোনো লিখিত অভিযোগ করা হয়নি,' বলেন তিনি।

ফরিদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসনাত জামানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

শুক্রবার নড়াইলের কালিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছেন বিক্ষুব্ধ জনতা | ছবি: সংগৃহীত

শুক্রবার বিকেলে নড়াইলের কালিয়া উপজেলার পৌর এলাকায় আওয়ামী লীগ কার্যালয় ও নড়াইল-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য বি এম কবিরুল হক মুক্তির বাগানবাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছেন বিক্ষুব্ধ জনতা।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, বিকেল ৪টার দিকে কালিয়া বাজারে উপজেলা বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা একটি বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ মিছিল বের করেন। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে একদল বিক্ষুব্ধ জনতা অনুষ্ঠানস্থলের পাশে উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেন। পরে কালিয়া ডাকবাংলোর পাশে অবস্থিত সাবেক সংসদ সদস্য কবিরুল হকের বাগানবাড়িতেও ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়।

তবে এ ঘটনার সঙ্গে বিএনপির কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই বলে দাবি করেছেন উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক স ম ওয়াহিদুজ্জামান মিলু। তিনি বলেন, 'আমাদের অনুষ্ঠান তখন চলছিল। হঠাৎ দেখি পূর্ব পাশে (আওয়ামী লীগের কার্যালয়) কারা যেন আগুন ধরিয়ে দিয়েছে, তখন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। সে সময় আমরাও মাইকে সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানাই।'

'কে বা কারা এ কাজ করেছে, তা আমরা জানি না। এর সঙ্গে বিএনপির কোনো সম্পৃক্ততা নেই,' বলেন তিনি।

কালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাশেদুল ইসলাম বলেন, 'বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।'

শুক্রবার দিবাগত রাত ১০টার দিকে গাজীপুরে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সাবেক মন্ত্রী ও গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আ ক ম মোজাম্মেল হকের পৈতৃক বাড়ি ভাঙচুর করেছে বিক্ষুব্ধ জনতা।

ভাঙচুর চলাকালে ডাকাত সন্দেহে এলাকাবাসী ১৫ জনকে পিটিয়ে আহত করেছে।

শনিবার ভোররাত ১২টার পরে গাজীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

তবে তিনি আহতদের পরিচয় জানাতে পারেননি।

Comments

The Daily Star  | English

How Dhaka’s rickshaw pullers bear a hidden health toll

At dawn, when Dhaka is just beginning to stir, thousands of rickshaw pullers set off on their daily grind.

19h ago