জাতিসংঘের প্রতিবেদন

মানবাধিকার লঙ্ঘনে ডিজিএফআই-এনএসআইসহ সব সংস্থাকে ব্যবহার করেছে আ. লীগ

আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে পুলিশ গুলি। স্টার ফাইল ফটো

সামরিক গোয়েন্দা কার্যক্রমের বাইরে বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তর (ডিজিএফআই) এমন যন্ত্রে পরিণত হয়েছে, যারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের পাশাপাশি নাগরিকদের ওপর নজরদারি করার মতো বেসামরিক কার্যক্রমে জড়িয়ে পড়ে।

আজ বুধবার জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় থেকে প্রকাশিত জুলাই অভ্যুত্থানের সঙ্গে সম্পর্কিত মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নির্যাতন সংক্রান্ত ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ডিজিএফআইয়ের গ্রেপ্তারের আইনি ক্ষমতা না থাকলেও, সংস্থাটি অপহরণ ও গুমের সঙ্গে জড়িত ছিল বলে জানা গেছে। গণমাধ্যম, ব্যবসায়ী নেতাসহ সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষদের ভয় দেখানোর জন্যও সংস্থাটিকে ব্যবহার করা হয়েছে।

অপরদিকে, ইলেকট্রনিক নজরদারির জন্য নিয়োজিত জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা বা এনএসআই ও ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার বা এনটিএমসি—এই দুই সংস্থার নেতৃত্ব দিতেন সশস্ত্র বাহিনীর জেনারেলরা। এই সংস্থা দুটিও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহ করত।

এতে আরও বলা হয়, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে এই সংস্থা দুটি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ও তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সরাসরি নিয়ন্ত্রণে ছিল। এগুলোর ছিল না প্রাতিষ্ঠানিক বা সংসদীয় বা স্বাধীন তদারকি।

বিজিবি, আনসার-ভিডিপি, এনটিএমসি ও র‍্যাবের মহাপরিচালকরা সরাসরি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অধীনে ছিলেন। এনএসআই ও ডিজিএফআই সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর অধীনে ছিল। এ কারণে আওয়ামী লীগ গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনে এসব সংস্থাকে খুব সহজেই ব্যবহার করতে পেরেছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

জুলাই আন্দোলন চলাকালে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) ও ডিজিএফআই ছাত্রনেতাদের অপহরণ ও আটকে রাখে এবং আন্দোলন প্রত্যাহার করতে চাপ দেয়। 

ডিজিএফআই, এনএসআই ও ডিবি সদস্যরা আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসায় বাধা দেয়। তারা হাসপাতালে রোগীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে, আহতদের গ্রেপ্তার করে এবং চিকিৎসক ও হাসপাতাল কর্মীদের ভয় দেখায়।

ডিজিএফআই, এনএসআই ও র‍্যাব গণমাধ্যমগুলোকে হামলার নৃশংসতার বিষয়ে প্রতিবেদন না করার জন্য চাপ দিয়েছিল। এসব বাহিনীর হয়রানির শিকার ভুক্তভোগী, পরিবার ও আইনজীবীদের মুখ বন্ধ রাখতেও চাপ দেয় ডিজিএফআই ও পুলিশ।

বিভিন্ন বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং অন্যান্য অভ্যন্তরীণ সূত্রের প্রত্যক্ষ সাক্ষ্যের ভিত্তিতে জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন বলছে, পুলিশ, আধা-সামরিক, সামরিক ও গোয়েন্দা সংস্থার পাশাপাশি আওয়ামী লীগ কর্মীরা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন করে ও নিপীড়ন চালায় এবং এসবের সমন্বয় ও নির্দেশনায় ছিল রাজনৈতিক নেতৃত্ব।

জাতিসংঘ মানবাধিকার কার্যালয় র‍্যাব ও এনটিএমসি বিলুপ্তির সুপারিশ করেছে। পাশাপাশি বিজিবি ও ডিজিএফআইয়ের কর্মকাণ্ড সীমিত করার সুপারিশ করা হয়েছে তাদের প্রতিবেদনে।

 

Comments

The Daily Star  | English
Magura child rape case

Magura rape: Main accused charged with murder

A month after the death of the eight-year-old girl, who was brutally raped while visiting her sister’s in-laws in Magura, police have pressed murder charges against the main accused.

6h ago